বিরাজবৌ ১২তম খন্ড | ##
Discover postsExplore captivating content and diverse perspectives on our Discover page. Uncover fresh ideas and engage in meaningful conversations
বিরাজবৌ ১২তম খন্ড | ##
আজকের হাদিস | #হাদিস
থাক রেখে দেন মাছ। নিবো না। শুধু শুধু আপনাকে কষ্ট দিলাম।
- ক্যান মামা মাছ মাপলাম, দরদাম করলেন এখন আবার নিবেন না ক্যান?
বললাম, দশ টাকা কম আছে।
- আহ মামা কন কী! শর্ট যখন আছেই তখনতো আর আপনার দোষ নাই। নেন মাছটা নেন। অন্যদিন দেখা হলে দিয়ে দিয়েন আর নাইলে দাবি নাই।
মাছ নিয়ে বাসায় ফিরলাম।
বাসের সুপারভাইজারের এক কথা- ভাড়া পনের টাকার এক টাকাও কম না কিন্ত। এইটা গেটলক বাস মামা।
বললাম, পাঁচ টাকা শর্ট আছে।
বেজায় কড়া সুপারভাইজার মুহূর্তেই গলে গিয়ে বলল- তাইলে আর কী করার, উঠেন মামা। ভাড়া লাগবো না।
ফলফলাদির দোকানে। মামা একটা আমলকি টেস্ট করে দেখি! কিনতে পারবো না কিন্তু।
- আরে মামা খাইবেনই তো। খান খান। কেনা লাগবো না। বলেই বেচারা একটা সুন্দর দেখে আমলকি শুধু বেছেই দিলো না বরং ঘাড়ে ঝুলানো গামছা দিয়ে আবার মুছেও দিল।
এই যে চারটা উদাহরণ দিলাম, এগুলোই হয় আমার, আপনার আশেপাশে অহরহ। এখানে এক পক্ষ লাভের আশার চেয়ে মানবিক দিকটাকেই বেশি গুরুত্ব দেয়।
এগুলো মার্কেটিং বা অবুস্তগত ইনভেস্টমেন্ট নয়। শ্রেফ মানবিকতা।
এই মানবিকতা যতোদিন, ততোদিন কিছু হলেও সুখ সুখ ভাব লাগবে উভয়ের মনে। কিন্তু দিন বদলাচ্ছে দ্রুত গতিতে। আমরা চরম ''উন্নতি'' করছি।
কোনো চেইন শপে গেলেন। অনেক পছন্দের একটা জিনিস নিলেন। দাম দেয়ার সময় যদি এক টাকাও কম হয় আপনি নিতে পারবেন না। মেশিন পিক পিক আওয়াজ করবে । আপনাকে সেখানে কেউ ছাড় দেবে না। দেবেই বা কেন! ওখানে যারা আছে সবাইতো চাকরিজীবী।
তাদের পকেট থেকে গচ্ছা যাবে যে। প্রযুক্তি এমনই। হিসাব নিকাশে ভুল যেন নাহয় তাই নানান রকম বার কোড, ভ্যালু কোড বসানো হয়েছে। খাপে খাপ মিলতে হবে। কোড ছাড়া ক্যাশের ড্রয়ার খুলে না।
মামা, ভালো দেইখা দিয়েন কিন্তু, কিম্বা আরে মামা দুইডা খাইয়া টেস্ট কইরা লন এমনটা বলার সুযোগ নেই।
যুগটা এমনই হয়েছে। ভালোবাসাহীন, বিবেকহীন মেশিনের সাথে আমাদের বসবাস বাড়ছে। দুনিয়া আগাচ্ছে, আমরা আস্তে আস্তে ভালোবাসাহীন হয়ে পড়ছি।
আমলকি মুখে দেয়া দূরের কথা, হাতে নেয়ার সঙ্গে সঙ্গে কোনো একদিন রোবট বিক্রেতা আপনার হাত চেপে ধরবে- বলবে, ব্যাটা হাত দিছস ক্যান? কুইক দশ টাকা লোড মার। নইলে বের হবার গেট পাস পাবি না...
একটা জেনারেশনকে বোঝানো হয়েছিল -
'বিকেলে মাঠে খেলতে যাওয়ার চাইতে টিউটরের কাছে পড়াটা বেশি ইম্পর্ট্যান্ট!'
এরা বিকেলে মাঠ ছেড়ে পড়ার টেবিলে চলে গেল। আর মুরুব্বিরা দেখলেন, মাঠ ফাঁকা ফেলে রাখার চাইতে উঁচু ইমারত নির্মাণ করাটা more beneficial, more practical!!
বেঁচে থাকতে হলে লাইফে Entertainment দরকার। সুস্থ এন্টারটেইনমেন্টের মাধ্যমগুলো একে একে বন্ধ করে দেয়া হল। জেনারেশন সেটাকে রিপ্লেস করলো মোবাইল, পিসি আর প্লে-স্টেশন দিয়ে। কেউ অপরিণত বয়সে রিলেশনে জড়িয়ে গেল। কোথাও কিশোর গ্যাং তৈরী হল।
তারপর হঠাৎ মুরুব্বিদের বোধোদয় হল -
'আরে, এই জেনারেশনটা এমন যাচ্ছেতাই কেন!'