সন্তান হয়েছে বলে কি শখ মিটে গেছে? না-কি সন্তান হয়েছে বলে সমস্ত শখ বিসর্জন দিতে হবে?
এ সমাজে কোনো বাবা/মা যদি সন্তানকে রেখে অন্তত দশ মিনিট আলাদা থাকেন, তবে তার দিকে ছুঁড়ে দেওয়া হয় হাজারটা প্রশ্ন। তারা হয়ে উঠেন অযোগ্য বাবা-মা। " সারাক্ষণ বাচ্চার দেখাশোনা করতে না পারলে বাচ্চা নিলো কেন? "

অথচ, সন্তান ব্যতিতও যে নিজেদের একটি চমৎকার মূহুর্ত দরকার, সেটা অনেকে বুঝতে চায় না। সন্তান হওয়ার পরেও পার্টনারের সাথে কোনো এক গোধূলিলগ্নে আড্ডা জমাতে ইচ্ছে করে। একসাথে চাঁদ দেখা, কিংবা চাঁদনি রাতে হাতে হাত রেখে হাঁটার তীব্র ইচ্ছে জাগে। কিংবা কিছুক্ষণ একে-অপরের দিকে অপলকভাবে তাকানোর ব্যাকুলতা জাগে।

এ সমাজে সন্তান হওয়ার পর ধরে বেঁধে দেওয়া হয় একগাদা নিয়ম। সন্তানের পিছনে ছুটে পার্টনারের একে-অপরের জন্য আর সময় হয়ে উঠে না। সমস্ত আয়োজন, মূহুর্ত, সুখ-শান্তি এমনকি নিজেকে ভেঙ্গে সবটুকু পরিশ্রম হয় সেই সন্তানের ক্ষেত্রে৷
একটা সময় পর এটা স্বাভাবিক হয়ে উঠে। ধীরে ধীরে সংকোচবোধের কারণে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দূরত্ব সৃষ্টি হয়।

এ জন্য মানুষ এখন বিয়ে করতে ভয় পায়। বিয়ের পর বাচ্চার নাম শুনলে আতঙ্ক কাজ করে। অথচ, সেই সন্তানকে নিয়েও কিন্তু দারুণ মূহুর্ত তৈরী করা যায়।

সমাজের টিপ্পনি এড়িয়ে চলে মাঝে মাঝে একে-অপরের সাথেও সময় কাটাবেন। দিনের মাত্র কিছু মূহুর্ত ব্যয় হলে সন্তানের ভাগ কমবে না। সন্তান হয়েছে বলে নিজেদের মধ্যে কোনোভাবেও দূরত্ব তৈরী করবেন না। সন্তানরাও কখনো বাবা-মাকে আলাদা দেখতে চায় না।

মন কখনো বুড়িয়ে যায় না। আমরাই বুড়িয়ে যাই। সন্তান হওয়ার পর নিজেদেরকে ভেঙ্গে ফেলে বলি, " আর কী-ই বা চাওয়ার আছে? " অথচ, তবুও মনের কোণে জমে থাকে একরাশ দীর্ঘশ্বাস।

সন্তান বড় হোক৷ বাবা-মাকে একসাথে দেখে বড় হোক৷ সে শিখুক, জানুক এবং ইতিবাচক চিন্তাধারার হোক। পৃথিবীর সমস্ত প্রেম-ভালোবাসা নিয়ে সে বেড়ে উঠুক। মনে সংকীর্ণতা নিয়ে নয়।