"অজানা ছায়া"
রাতের বেলা গ্রামের বাইরে এক নির্জন পুরোনো বাড়ি। সেই বাড়ির নাম ছিল "জমিদারবাড়ি"। বহু বছর আগে সেখানে এক প্রভাবশালী জমিদার বাস করতেন। তার মৃত্যু হয়েছিল এক অদ্ভুত ও রহস্যজনকভাবে। গ্রামের মানুষ বলে, জমিদার আর কখনও পুরোপুরি এই পৃথিবী ছেড়ে চলে যাননি। সে এখনো বাড়ির মধ্যে ঘুরে বেড়ায়, কারো অদেখা ছায়ার মতো।
এক রাতে রাহুল ও তার বন্ধুরা সিদ্ধান্ত নিল, জমিদারবাড়িতে এক রাত কাটাবে। অনেক দিন ধরে গল্প শুনছে, কিন্তু কেউই সাহস করে যায়নি সেখানে। রাহুল ছিল খুব সাহসী, তার মতে ভূত বলে কিছু নেই। সবই মানুষের কল্পনা।
রাত বারোটার দিকে তারা বাড়ির সামনে এসে দাঁড়ায়। চাঁদের ম্লান আলোয় জমিদারবাড়ি আরও ভয়ঙ্কর দেখাচ্ছিল। ভাঙা দরজা ঠেলে তারা ভেতরে ঢোকে। চারদিকে অন্ধকার, শুধু টর্চের আলোয় সামনের পথ দেখা যাচ্ছে। মেঝেতে শুকনো পাতার গর্জন আর অদ্ভুত হাওয়া বাতাসের শব্দ বাড়ির চারপাশে প্রতিধ্বনি তুলছে।
বন্ধুরা যখন ওপরের দিকে উঠছে, হঠাৎই রাহুলের মনে হলো, কেউ তার পেছনে হাঁটছে। সে ফিরে তাকালো, কিন্তু কেউ নেই। "কেউ ছিল না," মনে মনে বললো রাহুল, "সবাই তো সামনেই হাঁটছে।" কিন্তু তার বুক ধক ধক করতে শুরু করলো।
বাড়ির মাঝখানে গিয়ে তারা দেখতে পেলো একটি বড় ঘর, যেখানে জমিদার থাকতেন বলে লোককথা আছে। সেই ঘরের দরজা আধা খোলা ছিল। টর্চের আলোয় ভেতরটা ঝাপসা দেখা যাচ্ছে। তারা ঢুকতেই দরজাটা হঠাৎ করেই বন্ধ হয়ে গেলো! সবাই ভয় পেয়ে গেলো। তাদের বুকের ভেতর কেমন একটা শীতল অনুভূতি বয়ে গেলো।
হঠাৎ করেই ঘরের এক কোণ থেকে অদ্ভুত এক কান্নার শব্দ ভেসে এলো। সবাই আতঙ্কিত হয়ে গেলো। তাদের মনে হলো, ঘরের প্রতিটি দেয়াল থেকে অদ্ভুত চোখ তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। কান্নার শব্দটা ক্রমেই কাছে আসছিল। সেই সাথে শীতল বাতাস বাড়ছিলো, যেন কারো নিশ্বাস তাদের ঘাড়ে লাগছে