গোলমরিচ :
দৈনন্দিন জীবনে রান্নার কাজে গোলমরিচ মশলা হিসেবে ব্যবহার হয়ে আসলেও অদ্যাবধি আমাদের দেশে এর চাষ তেমন একটা বিস্তৃতি লাভ করেনি। শুধুমাত্র বাংলাদেশের শ্রীমঙ্গলসহ সিলেটের বিভিন্ন অঞ্চলে গোলমরিচের চাষ হয়।
ভারতবর্ষের নানাস্থানে- যেমন, মালাবার উপকূলে এবং মলাক্কা, জাভা, সুমাত্রা প্রভৃতি দ্বীপে গোলমরিচ প্রচুর পরিমাণে জন্মে থাকে। এটি এক প্রকার লতানো উদ্ভিদ। সাধারণতঃ ভূমিতে কিংবা অন্য গাছকে জড়িয়ে বেড়ে উঠে। এর কান্ড ও শাখা গ্রন্থিযুক্ত হয়ে থাকে। প্রত্যেকটি গ্রন্থি হতে শিকড়ের ন্যায় বের হয়ে বৃক্ষাদিকে বেষ্টন করে ধরে রাখে। পাতার আকৃতি অনেকটা পান পাতার মত চওড়া। কিন্তু অপেক্ষাকৃত ছোট এবং স্বাদ ঈষৎ তিক্তযুক্ত। প্রত্যেকটি পাতার গায়ে ৫টি শিরা পরিলক্ষিত হয়, পাতার তলদেশ অত্যন্ত মসৃণ এবং উপরিভাগ ধূসর বর্ণের। পাতার বৃন্তদেশ সরু ও গোলাকার। সবচেয়ে মজার ব্যাপার হলো পটল গাছের ন্যায় গোল মরিচ লতার মধ্যে কোনটিতে পুংপুষ্প এবং কোনটিতে স্ত্রীপুষ্প থাকে। পুংপুষ্পের পুষ্পদন্ডের পাতা অপেক্ষা স্ত্রীপুষ্পের পুষ্পদন্ডের পাতা ছোট হয়। ফুল একলিঙ্গ বিশিষ্ট। পুংপুষ্প দুটি পুষ্পরেণু বহন করে। পুষ্প সুগন্ধিযুক্ত কিন্তু দেখতে তেমন সুন্দর নয়। বিশেষতঃ বায়ু পরাগায়নের সাহায্যে এদের মিলন সম্পাদিত হয়। এজন্য যেদিক হতে বায়ু প্রবাহিত হয় সেদিকে পুংলতা এবং অপর দিকে স্ত্রীলতা রোপন করলে গর্ভাধান কোষ বেশ ভাল হয়। ফল গোলাকার, কাঁচা অবস্থায় সবুজবর্ণ, পাকলে লালবর্ণ কিংবা বেগুনে রং এর হয় এবং শুষ্ক হলে কাল রং ধারণ করে। স্বাদ তীব্র ঝালযুক্ত এবং ঈষৎ তিক্ত। গ্রীষ্ম ও বর্ষাকালে ফুল ও ফল হয়।
Easmin
Delete Comment
Are you sure that you want to delete this comment ?