কাজা নামাজ

আমরা অনেক সময় কোনো না কোনো কারণে নামাজের সময় ছেড়ে দেই। সে নামাজ অন্য ওয়াক্তে পড়ে নেওয়া কে কাজা বলে।

প্রিয়নবি হযরত মোহাম্মদ   সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ‘উত্তম আমল কোনটি?’ এমন প্রশ্নের জবাবে বলেছেন, ‘প্রথম ওয়াক্ত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অর্থাৎ প্রথম ওয়াক্তে নামাজ আদায় করাই হলো সর্বোত্তম আমল। তারপরও বিভিন্ন কারণে মানুষের নামাজ ছুটে যায়।

 

অনিচ্ছাকৃত, ভুলবশত কিংবা অন্য কোনো কারণে কোনো ওয়াক্তের নামাজ আদায় করতে না পারলে ঐ নামাজ পরবর্তীতে আদায় করাকে কাজা নামাজ বলা হয়। 

 

ফরজ অথবা ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলে তার কাজা আদায় করা আবশ্যক কিন্তু সুন্নত কিংবা নফল নামাজ আদায় করা না গেলে কাজা আদায় করতে হবে না। 

 

ফরজ নামাজ ছুটে গেলে তা ‘কাজা’ করা ফরজ আবার ওয়াজিব নামাজ ছুটে গেলেও তা ‘কাজা’ করা ওয়াজিব।

 

**কাজা নামাজ দুই প্রকার যথা:-

 

১। ‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ অর্থাৎ অল্প কাজা পাঁচ ওয়াক্ত পরিমাণ নামাজ কাজা হইলে উহাকেই ‘ফাওয়ায়েতে কালীল’ বা অল্প কাজা বলে।

 

২। ‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ অর্থাৎ বেশি কাজা। পাঁচ ওয়াক্তের অধিক যত দিনের নামাজই কাজা হউক না কেন উহাকে ‘ফাওয়ায়েতে কাছির’ বা অধিক কাজা বলা হয়। এ ধরনের কাজা নামাজ সকল ওয়াক্তিয়া নামাজের পূর্বে পড়িবে ।

 

          **কাজা নামাজের সময়

 

পূর্ববর্তী ওয়াক্তের নামাজ ‘কাজা’ আদায়ের জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট সময় নেই। নামাজের ওয়াক্ত চলে যাওয়ার পর যখনই নামাজের কথা স্মরণ হবে তখনই পড়ে নেয়া উত্তম। যেমন ধরুন- যদি কেউ ঘুমের কারণে ফজরের নামাজ আদায় না করতে পারে; তবে সে ঘুম থেকে যখনই উঠবে, তখনই নামাজ আদায় করবে। 

 

তবে নিষিদ্ধ সময়গুলোতে মনে পড়লে অপেক্ষা করতে হবে। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ বা তার কম নামাজ না পড়িয়া থাকিলে তাহার তরতীবের প্রতি লক্ষ্য রাখিতে হইবে। আগের নামাজ আগে, পরের নামাজ পরে পড়িতে হইবে। যেমন, কোন ব্যক্তির ফরজ এবং যোহরের নামাজ তরক হইয়া গিযাছে; এখন আছরের নামাজ পড়িবার পূর্বে সর্ব প্রথম ফজরের কাজা তারপর যোহরের কাজা আদায় করিতে হইবে এবং তারপর আছরের নামাজ আদায় করিবে।

 

**-কাজা নামাজের নিয়ত:-

 

কাজা নামাজ এবং ওয়াক্তিয়া নামাজের নিয়ত একই রকম তবে এইটুক পার্থক্য যে কাযা নামাজের নিয়ত থাকতে হবে এবং উচ্চারণ করলে এভাবে বলতে হবে :আমি ফজরের দুই রাকাত ফরজ নামাজ কাযা আদায় করতেছি।

 

      **কাজা নামাজের নিয়ম:-

 

  নামাজের কাজা আদায়ের নিয়ম:-

 

পাঁচ ওয়াক্তের কম নামাজ কাযা হলে তা প্রত্যেক ওয়াক্ত নামাজের পূর্বেই আাদায় করে নেওয়া।আর যদি পাঁচ ওয়াক্তের বেশি নামাজ কাজা থাকে তাহলে তা ধরাবাহিকভাবে ঐ ওয়াক্ত নামাজের সঙ্গে পড়া।

 

***কাযা আদায়ে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য রাখতে হবে তা হলো:-

 

১. নামাজের কাজা আদায়ের কথা ভুলে গেলে

 

৩. নির্ধারিত ওয়াক্তের নামাজের সময় সংকীর্ণ হলে

 

৩. নামাজের কাজা পাঁচ ওয়াক্তের বেশি হলে ঐ নামাজের কাজা পরেও পড়া যাবে।

 

৪. পাচঁ ওয়াক্ত বা তার কম ওয়াক্তের নামাজ ছুটে গেলে তা ধারাবাহিকভাবে কাযা আদায় করতে হবে।আগে নামাজগুলো আগে,পরে নামাজ পড়ে পড়তে হবে।যেমন:-

কোনো ব্যক্তির ফজর ও যোহরের নামাজ কাজা হলে আছরের নামাজ আদায় পূর্বে প্রথমে ফজরের নামাজ কাজা আদায় করবে তারপর যোহরের নামায কাযা আদায় করতে হবে তারপর আছরের ওয়াক্তিয়া নামাজ আদায় করতে হবে।

 

■■ ️কাযা আদায়ে যে বিষয়টি জানা থাকা আবশ্যক:-

 

১. ফরজ নামাজের কাজা আদায় করা হল ফরজ।

 

২.ওয়াজিব নামাজের কাজা আদায় করা হল ওয়াজিব।

 

৩. সুন্নত আর নফলের কাজা করবে না। তবে সুন্নত বা নফল নামাজ আরম্ভ করার পর ভেঙে গেলে তা কাজা করা আবশ্যক।

 

 তবে ফজরের সুন্নত নামাজের কাজা আদায় করতে হবে।কাযা আদায়ের সময় হলো ঐ দিনের জোহরের নামাজের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত। যদি জোহরের ওয়াক্ত হয়ে যায় তাহলে তা আর পড়তে হবে না।

 

আল্লাহ তাআলা আমাদের ঠিক সময়ে নামাজ আদায়ের তাওফিক দান করুন।


Akhi Akter Mim

313 Blog posts

Comments