হাসতে লজ্জা লাগে না তোর,,??
আমিঃ হাসতে আবার লজ্জাও লাগে,, আগে জানতাম না তো,,
নীলাঃ মাথায় টালা দিলি কেন,??
আমিঃ সক জাগছে তাই,,
নীলাঃ আমার মাথা কি সরকারি,,
আমিঃ হ্যা,, অবশ্যই,,
নীলাঃ তোর সাথে কথা বলাটাই আমার পাগলামি,,
আমিঃ তো বলছিস কেন,,
নালাঃ আর বলবো না,,
একথা বলে নীলা মুখ ভেঙচি কেটে ক্লাসের দিকে চলে গেলো,, আমি হাসতে হাসতে উল্টো দিকে রওনা হলাম,,।
ও হ্যা,, আগে আসনে পরিচিত হয়ে নিই,, আমি হলাম ওবায়দুল ইসলাম,, বাবা মায়ের দ্বিতীয় সন্তান,, তবুও খুব আদরের,,।
মানে আমার একটা বড় আপু আছে,, কয়েক মাস হলো বিয়ে দিয়েছি,, আপুর বিয়েটা খুব ভালো ঘরে হয়ছে,, আমার দোলাভাই অনেক ভালো,,।
আমি এবার নিউ টেন এ পড়ি,, আমার আব্বু রিক্সা চালায়,, আর আম্মু বাসার কাজ করে,, এই নিয়ে আমার দিন মোটামুটি পার হয়ে যায়,,।
আর একটু আগে যার সাথে ঝগড়া করলাম,, ও হচ্ছে আমার আত্মার আত্মা,, নাম নীলা,, ক্লাস ফাইভ থেকে আমরা এক সঙ্গে পড়ছি,,।
স্কুলের বেশির ভাগ সময় আমরা ঝগড়ায় মেতে থাকি,, ঝগড়া না করলে আমাদের দিন কাটে না,, আজকে বেশি কিছু করি নাই,, শুধু মাথায় একটা টালা মারছি,,।
ভালোবাসি নাকি বন্ধুত্ব সেটা জানি না,, তবে ওর প্রতি আমার অনেক দুর্বলতা,, একদিন কথা না বললে ভালোই লাগে না,,।
আমি নিজেই এখন খুব কনফিউজড হয়ে আছি,, ও আমার আসলে কে হয়,,?? এটা নিয়েই আমার মাথায় অনেক চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে,,।
তো যায়হোক আমি এসে একটা টেবিলে বসে পড়লাম,, মানে আমাদের স্কুলটা আবার নতুন করে করছে,, নতুন বিল্ডিং হচ্ছে,, সেখানে বেঞ্জ রাখা আছে,,।
আমি ওখানেই বসে পড়লাম,, নীলাকে নিয়ে ভাবছি,, তখন পাশ থেকেই নীলার কন্ঠ ভেসে৷ আসলো,, আমি তাকিয়ে দেখি নীলা দাঁড়িয়ে আছে,,।
নীলাঃ ওই ওবায়দুল,,
আমিঃ হ্যা,, বল,,
নীলাঃ এদিক আয়,,
আমিঃ তুই আয়,,
নীলাঃ আসতে বলছি আসবি,,
আমিঃ যাচ্ছি,,
আমি আর কিছু না বলে বসা থেকে দাঁড়িয়ে নীলার দিকে হাটতে লাগলাম,, নীলার মোড দেখছি আজ খুব ভালো,, ঘটনা কি,,।
আমিঃ বল,,
নীলাঃ একটু রুমে আয় না,,
আমিঃ কেনো,,??
নীলাঃ আয় না,,
আমিঃ হুম চল,,
তারপর আমি নীলার সাথে ক্লাস রুমে চলে গেলাম,, রুমে ঢুকতেই নীলা বললো,,।
নীলাঃ এই অংকটা করে দে তো,,
আমিঃ খাতা দে,,
আমি নীলার কাছ থেকে খাতাটা নিয়ে অংক করে দিলাম,, ক্লাসে আমার রুল হচ্ছে এক,, আর নীলার রুল দুই,, নীলা তেমন অংক পারে না,, পারে বলতে একটু ইংরেজি,,।
আমি ক্লাসে অংক খুব ভালো পারতাম,, তাই সবাই আমার কাছ থেকে অংক করে নিতো,, আমি কোনো পায়ভেট পরতাম না,, ওরা অনেক পায়ভেট পরতো,,।
আমি শুধু ক্লাসের পড়াটা মনোযোগ দিয়ে পড়তাম,, তাহলেই পায়ভেট পড়া হয়ে যেতো,, এজন্য ক্লাসের স্যার আমায় অনেক সাহায্য করতোো,,।
আমার বাবা রিক্সা চালায়,, তেমন টাকা পয়সা দিতে পারতো না,, স্যারেরা আমার পড়াশোনা ভালো দেখে অনেক জাগায় আমায় ছাড় দিতো,,।
আমার বাবা রিক্সা চালায়,, তেমন টাকা পয়সা দিতে পারতো না,, স্যারেরা আমার পড়াশোনা ভালো দেখে অনেক জাগায় আমায় ছাড় দিতো,,।
স্যারদের প্রতি আমার অনেক কৃতজ্ঞতা আছে ,, স্যারেরা সাহায্য না করলে আমি এতদুর আসতে পারতাম না,, পড়াশোনায় ভালো ছিলাম,, এই সুত্রে সবাই আমার প্রতি গুরুত্ব দিতো,,।
আমি নীলাকে অংকটা করিয়ে দিয়ে বসে আছি,, আমার পাশে বসে থেকে নীলা অংক করছে,, ভুল হলে আমি বলে দিচ্ছি,, বা ভুলে গেলে আমি বলে দিচ্ছি,,।
এমন সময় ক্লাসে চলে আসলো রাসেল,, রাসেল হলো এই কলেজের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম আর বড়লোক ছেলে,, সব মেয়ের ক্রাস,,।
বর্তমান সমাজে তো ক্রাস হওয়ার জন্য মনের দরকার পড়ে না,, শুধু টাকা আর ময়দা মাখা সুন্দরী হলেই যথেষ্ট,, তো সেই অনুযায়ী রাসেলের সব ছিলো,, তাই সবাই ক্রাস খেতো,,।
আমার আর নীলার সম্পর্ক সে একদম মানতে পারতো না,, কেনো পারতো না সেটা আমি জানি না,, তবে যখনই সুযোগ পায়,, আমায় একদম গা ধুয়ে ছাড়ে,,।
আমিও কম কিসের,, আমিও সুযোগ পেলে একদম মাথা থেকে পা পর্যন্ত ধুয়ে দিই,, জানি না আজ সে কোন উদ্দেশ্যে আসছে,,।
রাসেলঃ বাহ বাহ,, ক্লাসে একা একা বসে থেকে তো ভালোই হচ্ছে,,
আমিঃ হচ্ছে মানে,,?? কি বলতে চাচ্ছো,,
রাসেলঃ বুঝতে পারছেন না মিস্টার,,
নীলাঃ রাসেল তুমি অযথা এসব কি বলছো,,
রাসেলঃ আরে ডার্লিং ঠিক কথায় তো বলছি,,
আমিঃ মুখ সামলে কথা বলো,,
রাসেলঃ আরে বাহহহ,, তাই নাকি,,
আমিঃ হ্যা,, এটা তোরা প্রেমিকা পাও নাও,,
রাসেলঃ তো কি তোর প্রেমিকা,,??
আমিঃ না,, আমার বন্ধু,,
নীলাঃ ওবায়দুল তুই চুপ করবি,,
আমিঃ কিহহ,, ও তোকে যা তা বলে যাচ্ছে,, আর আমায় চুপ করতে বলছিস,,
নীলাঃ না,, তেমন কিছু না,,
আমিঃ তো কেমন,,??
নীলাঃ আরে বিষয়টা বোঝার চেষ্টা কর,,
আমিঃ হুম,, হয়ে গেছে বোঝা,, থাক তুই,,
একথা বলে আমি উঠে হাটতে লাগলাম,, ক্লাস থেকে বেরিয়ে আসলাম,, সামনে স্যারকে দেখলাম আমাদের ক্লাসে আসছে,, আমি কোনো কিছু না বলে সোজা হাটতে লাগলাম,,।
স্যার কিছু একটা বলতে চাইলো,, আমি কোনো পাত্তা দিলাম না,, সোজা নিচে চলে আসলাম,, সেখান থেকে নদীর পাড়ে এসে বসলাম,,।
আমাদের গ্রামের মধ্যে দিয়ে ছোট্ট একটা নদী পার হয়ে গেছে,, নদীটার নাম -------------- তো সেই নদীর পাশেই আমাদের ছোট্ট মাদ্রাসা,, ।
নদীর পাড়ে বসলেই প্রানটা জুড়িয়ে যায়,, মন মাতানো বাতাস,, আতাল পাতাল পানির ঢেউ,, চারদিকে পাখিরা খেলা করছে,, জেলেরা মাছ ধরছে,, ছোট ছোট বাচ্চারা নদীতে লাফ দিচ্ছে ,,।
ছোট বেলা আমিও লাফ দিতাম,, আমার বাসা নদী থেকে প্রায় চার কি মি,,, তো আমি মাদ্রাসা আসার পর বন্ধুদের বাড়ি থেকে লুঙ্গি নিয়ে পরে নিতাম,,।
আর মাদ্রাসা ড্রেস খুলে রাখতাম,, তারপর লুঙ্গি পরে,, নদীতে গোসল করতে চলে আসতাম,, নদীর পাশে এক হিয়া বড় বট গাছ ছিলো,, সেই গাছে উঠে ওখান থেকে লাফ দিতাম,,।
খুব মজা হতো,, বিট লেগে সাতরে নদী পার হতাম,, যখন নদী ভরা পানি থাকতো,, তখন মাঝ খানে গিয়েই সবাই হাপিয়ে যেতাম,, আর যাওয়া সম্ভব হতো না,, আর যখন অল্প পানি থাকতো,, তখন নিমিষেই পার হয়ে যেতাম,,।
দিনগুলো কেমন যেন তাড়াতাড়ি পার হয়ে গেলো,, আসলে ছোট বেলার দিনগুলো খুব মজার ছিলো,, আর সেই দিনগুলোর কথা এখন বড্ড মনে পড়ে,,,।
নদীর পাড়ে বসে থেকে নদীর মায়াবী নাচ দেখছিলাম,, বাতাসে ঢেউ তুলছে,, একদিকের ঢেউ আরেকদিকে লাগছে,, দৃশ্যটা কুব সুন্দর ছিলো,,।
এমন সময় আমার পাশে বসার অনুভব পেলাম,, মনে হলো কেউ যেন আমার পাশে বসছে,, সামনে থেকে চোখ ফিরিয়ে পাশে তাকিয়ে দেখি নীলা আমার দিকে তাকিয়ে দাত বের করে হাসছে,,।
সে জানে তার হাসির প্রতি আমি দুর্বল,, আর সেই সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করছে,, আমি তাকে সুযোগ দিবো না বলে মুখ ফিরিয়ে নিলাম,,।
এমন পরিবেশে প্রিয় মানুষটার হাসি খুব মিষ্টি লাগে,, মনের কোনে দাগ কাটে,, আমারও কাটলো,, কিন্তু সেটা বালি চাপা দিলাম,, মন বলছে আর একটু তার দিকে তাকিয়ে থাকি,,।
কিন্তু রাগ দেখাবো বলে তাকালাম না,, মনকে মানিয়ে নিলাম,, বললাম একটু পর ঠিকি দেখতে পাবো,, সাথে আদরও পাবো বটে,,।
নীলাঃ এই ওবায়দুল,,
আমি কোনো কথা বললাম না,, অন্য দিকে তাকিয়ে থাকলাম,,।
নীলাঃ এই জানু,,
তবুও কিছু বললাম না,, আসলে আমরা বেস্টফ্রেন্ড তো তাই আমাদের মাঝে সব ভাষায় চলে,, মনে মনে হাসলাম,,।
নীলাঃ শোন না,, আর কোনোদিন এমন হবে না,, রাসেল একটা লুচ্চা ছেলে,, ওকে কুব বকছি,, আর কোনোদিন আমার সঙ্গে লাগবে না,,
আমিঃ কেনো বলছিস,, যা ওর সাথে কথা বল,,
নীলাঃ কেনো,,??
আমিঃ তোরা তো আবার খারাপ ছেলেদের বেশি পছন্দ করিস,,
নীলাঃ কথা ভুল নয়,, তবে আমার মনে হয় তোর থেকে খারাপ এই পৃথিবীতে নেই,,
আমিঃ হয় আমি খারাপ,, যা এখান থেকে,,
নীলাঃ আরে সরি বললাম তো,,
আমিঃ সর তো,,
নীলাঃ দেখ,, অনেক হয়ছে,, এবার চল নয়তো ধাক্কা দিয়ে নদীতে ফেলে দিবো,,
আমিঃ সাহস আছে তোর,,
নীলাঃ আমার সাহস দেখবি,, এই দেখ,,
কথা বলতে দেরি,, ধাক্কা দিতে দেরি হলো না,, সালা কি মেয়েরে বাবা,, বলতে না বলতেই ধাক্কা দিয়ে দিলো,,।
আমি তো ধপাস করে পানিতে পড়ে গেলাম,, শার্ট প্যান্ট সব গেলো,, এসব গেলে যাক সমস্যা নাই,, কিন্তু হাতে একটা ঘড়ি ছিলো,, এটাও গেলো,,।
আমিঃ এই,, তুই সত্যি সত্যি কেন ধাক্কা দিলি,,
নীলাঃ আমার সাহস দেখতে চাইলি তাই,,
আমিঃ এবার আমি বাসায় কেমনে যাবো,,??
নীলাঃ আমি কি জানি,, আমি তো গেলাম,, টা টা,
আমিঃ এই নীলা শোন,,
নীলাঃ বল,,
আমিঃ আমায় পরার জন্য কিছু এনে দে,, নয়তো আমি বাসায় কেমনে যাবো,,
নীলাঃ পারবো না সর তো,, আমি যায়,,
আমিঃ ওকে যা,, আর কোনোদিন কথা বলবি না,,
নীলাঃ যাচ্ছি যাচ্ছি,,
একথা বলে নীলা চলে গেলো,, আমি আরাম মতো সাতার কাটতে লাগলাম,,।
নীলার বাসা এখানেই,, কয়েক ধাপ দিতে হবে,, তাই আমার বলাতে সে চলে গেলো,, আর আমি জানি সে কিছু একটা করবে,,।
আমি সাতার কাটছিলাম,, কিছুক্ষণ পর নীলা একটা লুঙ্গি আর একটা সার্ট হাতে নিয়ে পাড়ে এসে হাজির হলো,,।
আমিঃ কি রে,, সার্ট টা আমার খুব চেনা চেনা মনে হচ্ছে,,
নীলাঃ সর তো,,
আমিঃ সত্যি করে বল এটা কার,,
নীলাঃ কার আবার,, তোর,, মনে নাই,, একদিন এখানে গোসল করে শার্ট রেখেই চলে গেছিলি,,
আমিঃ ওহহ মনে পড়ছে,,
নীলাঃ ভাবছিলাম তোকে আর দিবো না,, আমার কাছেই রাখবো,,
আমিঃ তুই কি করবি,,??
নীলাঃ আমার বরকে পরিয়ে দিবো,, হারামি,, নে উঠে আয়,,
আমিঃ আর একটু,,
নীলাঃ লাত্তি খাবি কিন্তু,,,
আমিঃ উঠছি,,
কি আর করার,, পাড়ে পেত্নী দাঁড়িয়ে আছে,, না উঠলে খবর খারাপ হয়ে যাবে,, তাই আর দেরি না করে উঠে পড়লাম,,।
উঠে এসে শার্ট খুলে রাখলাম,,আর নীলার হাত থেকে গামছা নিয়ে মাথা মুছতে লাগলাম,, এরপর গা মুছে লুঙ্গিটা পরে নিলাম,, মনে হচ্ছে লুঙ্গিটা ওর বাবার,,।
আমিঃ নে ময়না,, এবার আমার জামা কাপড় ধুয়ে নে,,