আরবে দুর্ভিক্ষ শেষ হওয়ার পর সিরিয়া ও ফিলিস্তিনের অনেক জেলায় প্লেগ দেখা দেয়। সিরিয়া সফরের সময় পথিমথ্যে সিরিয়ার গভর্নর আবু উবাইদা ইবনুল জাররাহ সাথে সাক্ষাৎ হয় এবং তিনি উমরকে প্লেগ সম্পর্কে সতর্ক করে ফিরে যাওয়ার অনুরোধ জানান। উমর আবু উবাইদাকে তার সাথে আসতে বললে আবু উবাইদা নিজ বাহিনীকে কঠিন অবস্থায় ফেলে মদিনা যাওয়াতে অনিচ্ছা প্রকাশ করেন। ৬৩৯ সালে আবু উবাইদা প্লেগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। এসময় সিরিয়ায় প্রায় ২৫,০০০ মুসলিম প্লেগে মৃত্যুবরণ করে। সে বছরে পরবর্তীতে প্লেগের প্রাদুর্ভাব কমে এলে রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক পুনর্গঠনের জন্য উমর সিরিয়া সফর করেন।[৪৫]
দরিদ্রদের কাছাকাছি থাকার জন্য উমর নিজে সাধারণ জীবনযাপন করতেন। তার বাড়ি ছিল মাটির তৈরি এবং তিনি প্রতি সন্ধ্যায় জনগণের অবস্থা পরিদর্শনের জন্য রাস্তায় বের হতেন। উমর বাইতুল মাল নামক রাষ্ট্রীয় কোষাগার স্থাপন করেন।[৪৬][৪৭][৪৮] বাইতুল মাল থেকে মুসলিম ও অমুসলিম দরিদ্র, অসহায়, বৃদ্ধ, এতিম, বিধবা ও অক্ষমদেরকে সহায়তা প্রদান করা হত। বাইতুল মাল পরবর্তী উমাইয়া ও আব্বাসীয় খিলাফতের সময়েও প্রচলিত ছিল। এছাড়াও উমর শিশু ও বৃদ্ধদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেন।[৪৯][৫০][৫১][৫২] দুর্ভিক্ষ ও প্লেগ মহামারীর জন্য ৬৩৮-৬৩৯ সময়ে সামরিক অভিযান স্থগিত করা হয়েছিল।
ইতিপূর্বে ইহুদি ও স্থানীয় খ্রিষ্টানদের উপর বাইজেন্টাইন-সাসানীয় যুদ্ধের ব্যয়ভার মেটানোর জন্য অধিক হারে করারোপ করা হয়েছিল। মুসলিমদের অভিযানের সময় তারা বাইজেন্টাইন ও পারস্যের বিপক্ষে মুসলিমদের সহায়তা করে। ফলে বিজয় তরান্বিত হয়েছিল।[৫৩][৫৪] ইসলামী রাষ্ট্রে নতুন এলাকা অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এসব অঞ্চলের জনগোষ্ঠী মুক্ত বাণিজ্যের সুবিধা ভোগ করে। এর ফলে ইসলামী রাষ্ট্রের অন্যান্য অঞ্চলের সাথে বাণিজ্য সহজতর হয়। বাণিজ্যকে উৎসাহিত করার জন্য ইসলামী বাণিজ্যের পরিবর্তে সম্পদের উপর কর ধার্য করা হয়।[৫৫] মুসলিমরা দরিদ্রদের যাকাত দিতে বাধ্য থাকে। মুহাম্মদ (সা.) কর্তৃক মদিনা সনদ স্বাক্ষরিত হওয়ার পর থেকে ইহুদি ও খ্রিষ্টানরা ইসলামী রাষ্ট্রের অধীনে তাদের নিজেদের আইনে চলতে পারত এবং নিজস্ব বিচারকের কাছে বিচার চাইতে পারত।[৫৬][৫৭][৫৮] একারণে তারা শুধু নিরাপত্তার জন্য কর প্রদান করত। সাম্রাজ্যের দ্রুত বৃদ্ধিতে সহায়ক হওয়ার জন্য বাইজেন্টাইন ও পারস্যের বিজিত অঞ্চলগুলোতে কর আদায় প্রক্রিয়া পূর্বের মতো রাখা হয়। কর ব্যবস্থার আওতায় লোকেরা পূর্বের বাইজেন্টাইন ও সাসানীয় সময়ের চেয়ে কম হারে কর প্রদান করত।