সোনালুর আরেক নাম বান্দর লাঠি

প্রকৃতিতে শোভা ছড়ানো একটি পরিচিত ফুল সোনালু। অনেকে একে বান্দর লাঠি ফুল হিসাবেও ডেকে থাকেন। ঔষধিগুণ সম্পূর্ণ এই গাছটি আজ বিলুপ্তির পথে।

রাস্তার পাশে ফুটে আছে সোনালু ফুল। গাছের আভা পুরো পাড়াকে আলোকিত করে তুলেছে। পুরো গাছ থেকে হলুদ বয়ে যাচ্ছে। হলুদ একটা স্বপ্ন! অথবা একটি সুন্দর মেয়ে শুধু একটি হলুদ পাদদেশে বসে আছে। সোনালু ফুলের ঝলমলে রূপ দেখলে এটাই ভাববে সবাই। ফুল ফোটার প্রকৃত সময় গ্রীষ্মকাল। সোনালু একটি মাঝারি আকারের পর্ণমোচী গাছ।

সোনালুর সংখ্যা দিন দিন কমছে। এর কারণ হলো, অনেকে মনে করেন এই গাছের কাঠ খুব দামি নয় বা গাছ খুব ধীরে বাড়ে তাই খুব উৎসাহে কেউ সোনালু গাছ লাগায় না। অথচ প্রকৃতির ওপর ভরসা করে সোনালু হলুদ-সোনালি রঙের সৌন্দর্য বিলিয়ে দিয়ে নিজের অস্তিত্ব বজায় রেখেছে আজও।

সোনালু এর নামকরণ করা হয়েছে উজ্জ্বল সোনালি হলুদ রঙের জন্য। শীতকালে পাতা হারিয়ে যাওয়া গাছটি গ্রীষ্মের শুরু থেকেই বসন্তে কচি পাতা দিয়ে ফুল ফোটাতে শুরু করে। লম্বা পুষ্পগুলো ডালে ঝুলে থাকে পাঁচটি পাপড়িতে। আদি বাসস্থান হিমালয় অঞ্চলে। তবে উদ্ভিদবিজ্ঞানীরা এটিকে বাংলাদেশ ও ভারতের নিজস্ব প্রজাতি বলে মনে করেন। সোনালুর ফল লম্বা লাঠির মতো। পাকলে গাঢ় রং। তাইতো সোনালুকে 'বানরের লাঠি' বলেও ডাকেন অনেকে।

এপ্রিল-মে ও জুন মাসে সোনালী গাছ থেকে দীর্ঘ ছড়া বের হয়। প্রতিটি ছড়ায় সুন্দর হলুদ ফুল। ফুল লম্বা অঙ্কুর। সোনালী গাছের ফুল, ভেষজ, পাতা, বীজ এবং শিকড় ঔষধি কাজে ব্যবহৃত হয়। শিকড় ও বাকল দিয়ে মানবদেহের জন্য প্রয়োজনীয় ওষুধ তৈরিতেও সোনালি ফুল ব্যবহার করা হয়। সেই ওষুধে মানবদেহের জন্য অনেক উপকারিতা রয়েছে। কৃষকরাও আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন। তবে এই ফুল গাছ বিলুপ্ত হওয়ার ফলে গাছ ও ওষুধ উৎপাদনে সংকট দেখা দিয়েছে।


Abu Hasan Bappi

414 Blog posts

Comments