নীল পাহাড়ে আতঙ্ক-3

আজকে আমি আপনাদের সঙ্গে Bengali Ghost Story For Child. গল্পটির নাম “নীল পাহাড়ে আতঙ্ক” আশাকরি আপনারা সকলে গল্পটি মনোযোগ সহকারে পড়?

[পার্ট-০৩]

 

যোগীর কথাটা শোনা মাত্রই সেই মুহূর্তে গ্রামের মানুষদের মুখটা রক্তশূন্য হয়ে গিয়ে ফ্যাকাসে হয়ে গেল। কারোর মুখে কোনো কথা নেই।
যোগী গ্রামের মানুষের মনের কথা বুঝতে পেরে, পরক্ষণেই বলে “এত ভয় পাওয়ার কিছু নেই, আমি ভয় পাওয়ার মত কিছুই বলিনি।”
 
গ্রামের এক মাঝবয়সী লোক জিজ্ঞাসা করেন “আপনি সেই জীবটা কে নিয়ে কি করবেন?”
কথাটা শোনা মাত্রই যোগীর বিকট অট্টহাসিতে পাহাড়ের নিস্তব্ধতায় আঘাত লাগলো । গ্রামের লোকেদের হাত পা ঠান্ডা বরফ হয়ে গেল। 
 
পরক্ষণেই যোগী হাসি থামিয়ে বললো, “আমি ঐ প্রাণীটার তাজা রক্ত আমার সাধনার উদ্দেশ্যে কাজে লাগবো। আমি যে প্রাণীর কথা বলছি সেটা তোদের সবার বাড়িতে আছে এমন প্রাণী। বাড়িতে পোষা প্রাণী না হলে আমার তন্ত্রসাধনা সম্পূর্ন হবে না,আর আমার সাধনা সম্পূর্ন না হলে তোদের গ্রামে সুখ শান্তি ফিরবে না।”
 
তারপরেই গ্রামের লোকেদের মধ্যে গুঞ্জন হতে থাকে সবার বাড়িতে গোরু, ছাগল,মুরগি ছাড়া আর তো কিছু নেই। কিন্তু কে বা নিজের ঘরের পোষা প্রাণীকে এই যোগীর হাতে সমর্পণ করবে।
 
 
 
খানিকক্ষণ পর একজন বললো “ঠিক আছে আমার ঘরের মুরগিটা আপনার তন্ত্র সাধনার জন্য সমর্পন করবো, কিন্তু আমাদের গ্রামে কোনো ক্ষতি হবে না তো? আর গ্রামে সুখ শান্তি ফিরবে?”
 
যোগী তখন প্রতিশ্রুতি দিয়ে বললো “হ্যাঁ এই গ্রামে সুখ শান্তি ফিরবে, আর কারোর কোনো ক্ষতি হবে না।”
গ্রামের সমস্ত লোকজনেরা বললো “তবে কবে হবে আপনার এই তন্ত্র সাধনা।”
“আমি সামনে অমাবস্যায় রাত্রিতে আমার সাধনা করবো। তবে ওই দিন এই গুহায় কাউকে আসা যাবে না, আমাকে অমাবস্যার আগের দিন প্রাণী টাকে দিয়ে দিতে হবে।”
 
গ্রামের সবাই একসাথে বললো “ঠিক আছে তাই হবে।”
তারপর সকলে ওই গুহা থেকে বাড়ি ফিরে এল। দুদিন বাদে অমাবস্যা, তাই অমাবস্যার আগের দিন গ্রামের কয়েকজন মিলে একটা মুরগি নিয়ে গিয়ে যোগী কে দিলো। যোগী ওই অবলা প্রাণীটা নেবার পর ওদের কে চলে যেতে বললো। ওরা সবাই মনের আনন্দে বাড়ি ফিরে এল।
 
অমাবস্যার দিন সকাল থেকে আকাশে কাক শকুনের দল গোটা গ্রাম জুড়ে ঘুরপাক খেতে থাকে। যেন মনে হচ্ছে গ্রামে মোড়ক লেগেছ। গ্রামবাসীদের অজান্তে গোটা গ্রামে আতঙ্কের করাল ছায়া ক্রমশ গ্রাস করেছে। গ্রামের রাস্তাঘাট একদম ফাঁকা। দিনের বেলায় মনে হচ্ছে কত না রাত্রি, চারিদিকে নিঃশব্দ, যে গ্রামে কত না হৈ হুল্লোড় হত, কত বাচ্চারা খেলা করত মাঠে, তা আজ একদম স্তব্ধ হয়ে গেছে। 
 
একদিনে নিশ্চিন্তা গ্রামটা কেমন যেন থমথমে হয়ে গেছে। দিনের আলো পশ্চিম আকাশে ডুব দিলো, ক্রমশ অন্ধকার গভীর থেকে গভীরতর হতে লাগলো। নিস্তব্ধে ঘন অন্ধকারে গোটা গ্রামটা কে ঘিরে ফেলেছে। শুনশান গ্রামে মাঝে মাঝে কুকুর শিয়ালগুলো কিসের যেন অজানা ভয়ে তারস্বরে চিৎকার করে চলেছে। আর তা বাতাসে প্রতিধ্বনিত হয়ে আরো ভয়ংকর পরিবেশ সৃষ্টি করেছে। প্রতিটা মুহূর্তে একটা ঘোর আতঙ্কের মধ্যে দিয়ে রাতটা কোনোক্রমে পার হলো সবার।

Fahad Alim

19 Blog posts

Comments