আব্বুর ইচ্ছা, ছেলে মেডিকেলে পড়ে ডাক্তার হোক। তারও ইচ্ছা আমি ডাক্তার হই। কিন্তু আমার শখ—সংগঠন, লেখালেখি আর ভ্রমণ। ডাক্তারি পড়ার ইচ্ছা না থাকলেও রংপুরে কোচিং করেছিলাম মেডিকেলে ভর্তির। কোর্চিং পর্ব শেষ হলো। এরই মধ্যে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলাম। কোথাও চান্স পাচ্ছিলাম না।
এমন সময় মেয়েটি আমার সঙ্গে নরম সুরে কথা বলা শুরু করল। মনে হলো মন একটু গলেছে। নিয়মিত আমার খোঁজ নিত। আমি পড়াশোনায় আগ্রহী হলাম। মেরিন ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে ভর্তির সুযোগ পেলাম।
এভাবেই চলল বছর দুই। তখন আমাদের খুব ভালো বোঝাপড়া। আমাকে সব সময় পাশে থেকে সাপোর্ট দিত। খুব ভালোই চলছিল। হঠাৎ দমকা হাওয়ায় সবকিছু যেন ওলট–পালট হয়ে গেল। তখন সে ভর্তি হয়েছে রুয়েটে। আমাদের সম্পর্কের ব্যাপারটা আমাদের বাবারা ছাড়া সবাই জানত। ওর মা আমাকে সহ্য করতে পারত না। কারণ একটাই, ওরা উচ্চবংশীয়। সম্পর্কে টানাপোড়েন শুরু হলো।
তারও কিছুদিন পর, আমি ওর জীবন থেকে মুছে যাই যাই অবস্থা। তখনই একটা বুদ্ধি আঁটলাম। ওর পছন্দ—ডাক্তার।
তাই ফেসবুকে ডাক্তার হিসেবে একটা ফেইক আইডি খুললাম। কয়েকজন বন্ধু বানালাম। তারপর ওকে ফ্রেন্ড রিকোয়েস্ট পাঠালাম।
অ্যাকসেপ্ট করল। কথা শুরু হলো ডাক্তার হিসেবে। আমার এক মেডিকেল বন্ধুর কাছে চিকিৎসাবিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রাথমিক জ্ঞান নিলাম। মাঝেমধ্যে কথার মধ্যে মেডিকেলীয় টার্ম যোগ করতাম। ওর মনের কথা বলে দিতাম। ও অবাক হয়ে বলল, কীভাবে ওকে এত জলদি বুঝতে পারি।
ও আমাকেই সন্দেহ করত। সন্দেহ দূর করার জন্য কয়েকটা ছবি পাঠালাম আরেকজনের। সন্দেহ দূর হলো না। ফোন নম্বর নিল। আমার এক বন্ধুকে ধরিয়ে দিলাম। আমার সে বন্ধুর সঙ্গে কথা বলল।
সন্দেহ পুরোপুরি দূর হলো ওর। ফেইক হয়ে ওর সঙ্গে ভালোই বন্ধুত্ব গড়ে তুললাম। এক মাস খুব ভালো কাটছিল আমার।
ওকে তো আমি জানি, কিন্তু ওর কাছে আমি অজানা একজন। আমি ওকে ডাক্তার হয়ে প্রপোজ করি।
আমাকে মুখের ওপর না করে দিয়ে, তার সত্যিকার প্রেমের কথা জানাল। সে প্রেমের নায়ক আমি। এখন আমরা একসঙ্গে পথ চলছি। রোজ, তোমায় অনেক ভালোবাসি।