বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব সাধারণত অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক এবং সামাজিক স্তরে গভীর ও বহুমুখী হয়। বাণিজ্য যুদ্ধ বলতে বোঝায় দুই বা ততোধিক দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক ক্ষেত্রে আরোপিত শুল্ক, কোটার মতো সীমাবদ্ধতাসমূহ। এর ফলে পণ্য ও সেবার মূল্যে বৃদ্ধি ঘটে এবং বৈশ্বিক সরবরাহ চেইনে বিঘ্ন ঘটে।
প্রথমত, অর্থনৈতিক প্রভাব। বাণিজ্য যুদ্ধের কারণে আমদানি পণ্যের উপর শুল্ক বৃদ্ধি পায়, যা স্থানীয় বাজারে পণ্যের দাম বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে ভোক্তারা উচ্চ মূল্যে পণ্য কিনতে বাধ্য হয়, যা সামগ্রিকভাবে জীবনযাত্রার ব্যয়ে প্রভাব ফেলে। উৎপাদকরাও এর প্রভাব ভোগ করে, কারণ তারা আমদানি করা কাঁচামাল বা যন্ত্রাংশের জন্য বেশি খরচ করে। দীর্ঘমেয়াদে, এটি কর্মসংস্থানের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে কারণ উৎপাদকরা খরচ কমাতে শ্রমিক ছাঁটাই করতে পারে।
দ্বিতীয়ত, রাজনৈতিক প্রভাব। বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে দেশগুলির মধ্যে সম্পর্ক খারাপ হতে পারে, যা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও কূটনৈতিক সম্পর্কে বিঘ্ন সৃষ্টি করে। এ ধরনের দ্বন্দ্ব বৈশ্বিক বাণিজ্য ব্যবস্থায় আস্থার অভাব সৃষ্টি করে এবং রাজনৈতিক অস্থিরতা বাড়ায়। এছাড়া, ছোট দেশগুলো যারা বৈশ্বিক বাণিজ্যের উপর নির্ভরশীল, তারা সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
তৃতীয়ত, সামাজিক প্রভাব। বাণিজ্য যুদ্ধের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার মান কমে যেতে পারে, বিশেষ করে নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষদের জন্য। দাম বাড়ার কারণে খাদ্য, পোশাক, এবং অন্যান্য মৌলিক প্রয়োজনীয় পণ্যের প্রাপ্যতা কমে যায়, যা সামাজিক অস্থিরতা সৃষ্টি করতে পারে।
সার্বিকভাবে, বাণিজ্য যুদ্ধের প্রভাব সরাসরি শুধু দুই দেশের ওপর নয়, বরং বৈশ্বিক অর্থনীতিতে এর ঢেউ ছড়িয়ে পড়ে।