কমেডি ও সংস্কৃতি একে অপরের ওপর গভীরভাবে প্রভাব ফেলে, কারণ উভয়ই সমাজের সামগ্রিক বাস্তবতা ও মানসিকতার প্রতিফলন করে। সংস্কৃতি হলো একটি সমাজের মূল্যবোধ, বিশ্বাস, রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের সমষ্টি, যা মানুষের দৈনন্দিন জীবন ও চিন্তাধারাকে প্রভাবিত করে। অন্যদিকে, কমেডি সেই সংস্কৃতির মধ্যে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে ব্যঙ্গাত্মক বা হাস্যরসাত্মকভাবে উপস্থাপন করে, যা একদিকে বিনোদন দেয় এবং অন্যদিকে সমাজের নানা দিক নিয়ে ভাবতে বাধ্য করে।
প্রথমত, সংস্কৃতি কমেডির বিষয়বস্তু নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এক দেশের সংস্কৃতি থেকে উৎপন্ন কৌতুক অন্য দেশের মানুষ সহজে বুঝতে নাও পারে, কারণ কৌতুকের ভিত্তি অনেকাংশে সামাজিক রীতিনীতি এবং ঐতিহ্যের ওপর নির্ভরশীল। উদাহরণস্বরূপ, কোনো একটি সমাজে প্রচলিত সামাজিক বা রাজনৈতিক অবস্থা নিয়ে তৈরি করা ব্যঙ্গ অন্য সমাজে প্রাসঙ্গিক নাও হতে পারে।
দ্বিতীয়ত, কমেডি সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করার একটি শক্তিশালী মাধ্যম হিসেবে কাজ করে। কৌতুকাভিনেতারা হাস্যরসের মাধ্যমে সমাজের বিভিন্ন অসঙ্গতি, বৈষম্য এবং রাজনৈতিক ইস্যু তুলে ধরেন। এইভাবে তারা জনসাধারণকে সচেতন করে তোলেন এবং সমাজে পরিবর্তনের জন্য চাপ সৃষ্টি করেন। অনেক সময় সংস্কৃতির প্রচলিত ধারাগুলোও কমেডির মাধ্যমে প্রশ্নবিদ্ধ হয়, যা মানুষকে নতুনভাবে চিন্তা করতে উদ্বুদ্ধ করে।
কমেডি সমাজের বিভিন্ন ভিন্নতা, সমস্যা, এবং সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে আলোচনা করার মাধ্যমে সংস্কৃতির পরিবর্তন ও বিকাশে অবদান রাখে। এটি বিনোদনের মাধ্যমে সমাজের গভীর সমস্যাগুলো তুলে ধরার একটি কৌশল, যা শুধুমাত্র মানুষকে হাসায় না, বরং তাদের ভেতরে পরিবর্তনের বীজ বপন করে।
অতএব, কমেডি ও সংস্কৃতির মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক সমাজের অগ্রগতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।