বাজার প্রবিধান এবং বাণিজ্য একে অপরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত। বাজার প্রবিধান হলো সরকারের বা কোনো নিয়ন্ত্রক সংস্থার দ্বারা প্রতিষ্ঠিত নীতি ও নিয়ম, যা বাজারের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে। এর মূল উদ্দেশ্য হলো প্রতিযোগিতামূলক, ন্যায্য এবং স্বচ্ছ বাণিজ্য নিশ্চিত করা, যাতে ক্রেতা ও বিক্রেতারা সুরক্ষিত থাকে এবং অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় থাকে।
প্রথমত, বাজার প্রবিধান বাণিজ্যের গতি ও দিকনির্দেশনা নির্ধারণ করে। বিভিন্ন দেশে পণ্যের আমদানি ও রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক, ট্যাক্স, কোটার মতো নিয়মকানুন রয়েছে, যা স্থানীয় অর্থনীতি সুরক্ষার জন্য প্রয়োজন। উদাহরণস্বরূপ, কোনো দেশ যদি নির্দিষ্ট পণ্যের উৎপাদনে স্বনির্ভর হতে চায়, তবে সেই পণ্যের আমদানিতে বেশি শুল্ক আরোপ করতে পারে। এর ফলে স্থানীয় উৎপাদকরা প্রতিযোগিতার সুবিধা পায়, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক হয়।
দ্বিতীয়ত, বাজার প্রবিধান প্রতিযোগিতা বজায় রাখে এবং বাজারে মনোপলি বা অবৈধ কার্যক্রম রোধ করে। এর মাধ্যমে বৃহৎ কোম্পানিগুলি যাতে ছোট ব্যবসায়ীদের দমিয়ে রাখতে না পারে, তা নিশ্চিত করা হয়। এছাড়া, অ্যান্টিট্রাস্ট আইন এবং ভোক্তা সুরক্ষা আইন ব্যবসায়ের নৈতিকতা এবং মান বজায় রাখে।
তৃতীয়ত, পরিবেশগত ও সামাজিক দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতেও বাজার প্রবিধানের ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বাণিজ্যিক কার্যক্রমের কারণে পরিবেশগত ক্ষতি বা শ্রমিকদের অধিকার লঙ্ঘন রোধে নিয়মিত প্রবিধান কার্যকর করা হয়। এর ফলে বাণিজ্য শুধু মুনাফা অর্জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না থেকে সামাজিক উন্নয়নে ভূমিকা রাখতে পারে।
সার্বিকভাবে, বাজার প্রবিধান ও বাণিজ্য একে অপরকে প্রভাবিত করে এবং উভয়ের মধ্যেই একটি ভারসাম্য বজায় রাখার মাধ্যমে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক সুরক্ষা নিশ্চিত করা সম্ভব। সঠিক নিয়মনীতি বজায় থাকলে বাণিজ্য কার্যক্রম সুষ্ঠু ও স্বচ্ছ হয়, যা দেশীয় ও আন্তর্জাতিক স্তরে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।