কৌতুক মানুষের সামাজিক জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ এবং এটি সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি গঠনে প্রভাব ফেলে। কৌতুকের মাধ্যমে সমাজে প্রচলিত মূল্যবোধ, রীতিনীতি এবং বিশ্বাস সম্পর্কে মন্তব্য করা যায়, যা মানুষকে হাস্যরসের মাধ্যমে গভীর বিষয়গুলি উপলব্ধি করতে সহায়তা করে। কৌতুক প্রায়শই সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক প্রতিবিম্ব হিসেবে কাজ করে, কারণ এর মাধ্যমে সমাজের বৈপরীত্য ও অপ্রাসঙ্গিকতাগুলো তুলে ধরা হয়।
কৌতুক সামাজিক সমালোচনার একটি শক্তিশালী হাতিয়ার। এটি অনেক সময় বিদ্রূপাত্মক বা ব্যঙ্গাত্মক হয়, যা সমাজের ত্রুটি বা অসামঞ্জস্যগুলোকে তুলে ধরে। উদাহরণস্বরূপ, রাজনৈতিক বা সামাজিক কৌতুকের মাধ্যমে ক্ষমতাবানদের আচরণ, সমাজের বৈষম্য, এবং নৈতিক মূল্যবোধের অসামঞ্জস্যগুলি হাসির আড়ালে প্রকাশ করা যায়। এই ধরনের কৌতুক মানুষকে নতুন করে চিন্তা করতে এবং প্রথাগত চিন্তাধারার বাইরে গিয়ে সমস্যাগুলোকে বিশ্লেষণ করতে উদ্বুদ্ধ করে।
কৌতুকের মাধ্যমে সামাজিক বন্ধনও গড়ে ওঠে। মানুষ হাসির মাধ্যমে নিজেদের মধ্যে সম্পর্ক মজবুত করে এবং দলগত সংহতির অনুভূতি তৈরি করে। এটি অস্বস্তিকর বা সংবেদনশীল বিষয়গুলোকে সহজভাবে আলোচনা করতে সহায়তা করে, যা পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহমর্মিতার পরিবেশ তৈরি করে।
তবে, কৌতুক সবসময় ইতিবাচক ভূমিকা পালন করে না। কিছু ক্ষেত্রে, এটি সমাজে বিদ্যমান পক্ষপাত, লিঙ্গ বৈষম্য, বর্ণবাদ বা অন্যান্য নেতিবাচক সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে স্থায়ী করতে পারে। সুতরাং, কৌতুক সমাজের প্রতিফলন হলেও, এটি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দায়িত্বশীল হতে হবে।