–আমার না খুব ইচ্ছা করছে তোমার কাছে ছুটে যেতে...
–তো আসো না কেন?
–কি করব বলো সিরাজগঞ্জ তো আমার কোন রিলেটিভ নেই যে তার পাশেই যাব।
–রিলেটিভ না থাকলে কি আসা যায় না?
–যাওয়া যায় তো কিন্তু আমি তো কিছুই চিনি না কোথায় যেতে কোথায় চলে যাব।
–হা হা হা.. তুমি কোন দুনিয়ার মানুষ হুম?
–কেন?
–তুমি ডিজিটাল যুগে এসে হারিয়ে যাওয়ার ভয় করছ?
–আমি আমার ভয় করিনা। যদি তুমি কোন কারণে হারিয়ে যাও সেদিন আমার মরন ছাড়া কিছু হবে না।
–হুম হইছে এখন আর ইমোশনাল হতে হবে না..
–হুম।
তারপর জান্নাতের সাথে অনেকক্ষণ কথা বলে ফোনটা রেখে একটু ছাদে যাই। আমাদের ছাদে একটি দোলনা আছে তো ছাদে গিয়ে দোলনায় বসে দোল খাচ্ছিলাম এমন সময় সুমনের ফোন আসলো....
–হ্যালো হৃদয় তুই কোথায়? (অনেকটা আতঙ্কিত কন্ঠে বলল)
_________________চলবে?মেয়েটা ওয়েলকাম জানিয়ে চলে গেল। হঠাৎই আমার আমার ফোনে কল বেজে উঠলো। জান্নাত ফোন করেছে..
–তাহলে তুমি সিরাজগঞ্জ এসেই গেলে?
–তুমি কিভাবে জানলে?
–এখন থেকে তোমার প্রত্যেকটি কদম ই আমি দেখতে পাবো..
–মানে! কিভাবে?
–সেটা তো তোমাকে বলা যাবে না। আচ্ছা তুমি এখন লাল শার্ট পড়ে আছো না?
–তুমি এগুলো কি ভাবে বলছো?
–সব জানতে পারবে। এখন থেকে তুমি আমার নজরে নজরে থাকবে। তুমি কখন কি করছো সবকিছুই আমি জানতে পারবো।
–(আমি কিছুতেই বুঝতে পারছিনা জান্নাত এগুলো কিভাবে জানি) আচ্ছা জান্নাত তুমি কি আমাকে একটু খুলে বলবে?
–সময় হোক সবকিছু জানতে পারবো...
–এটা আবার কেমন কথা? আমার সাথে লুকোচুরি খেলছো?
–যা মনে করবে তাই।
–তোমার জন্য এত কষ্ট করে আমি সিরাজগঞ্জে আসলাম আর তুমি..
–উফ এত কথা বলো না তো। এখন ফোন রাখলাম পরে কথা হবে বাই।
এটা বলে জান্নাত ফোনটা রেখে দিল। আমিতো বিছানার উপর বসে গেলাম। বিছানার উপর বসে ভাবছি (জান্নাত আমার উপস্থিতি বুঝলা কিভাবে? আর জানলেই বা কিভাবে আমি কি পোশাক পড়ে আছি? না ঘটনাটা কেমন জানি এলোমেলো লাগছে) এগুলা ভাবতে ভাবতে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিলাম। ফ্রেস হয়ে একটু রেস্ট নিলাম। অনেকক্ষণ পর ইব্রাহিম আমার রুমে এসে আমাকে ডেকে বলল..
–হৃদয়! দুইটা কখনো গ্রামে আসিস নি আর আমিও অনেকদিন ধরে গ্রামে আসেন চল বাহিরে থেকে একটু ঘুরে আসি..
–আচ্ছা ঠিক আছে চল।
আমি আর ইব্রাহিম বাড়ি থেকে বের হতে যাবো এমন সময় মিম সামনে এসে দাড়িয়ে বলল..
–ভাইয়া কোথায় যাচ্ছিস?
–এইতো একটু বাহিরে ঘুরতে যাব কেন?
–তুই তো অনেকদিন যাবত গ্রামে আসিস না গ্রামের রাস্তাঘাট কি তোর মনে আছে?
–ওমমম না তো। আমাকে কথা একদমই মনে ছিল না।
–আচ্ছা যাওয়ার সময় সুজন কে সাথে নিয়ে যাস।
–আচ্ছা ঠিক আছে।
সুজল ইব্রাহিমের বড় চাচার ছেলে। কিন্তু বয়সে আমাদের ছোট। সুজন কে নিয়ে গ্রামে ঘুরছি। সত্যি গ্রামের দৃশ্য অনেক সুন্দর। আশেপাশে ক্ষেত-খামার আর তার মাঝখান দিয়ে রাস্তা। খুব মজা হচ্ছিল। চারপাশে পাখির কিচিরমিচির শব্দ। সত্যি শহরের সাথে গ্রামের কখনো তুলনা হয়না। ঘুরতে ঘুরতে হঠাৎ জান্নাতের একটা এসএমএস আমার ফোনে আসলো....
____________________চলবে?–ও চুপচাপ আমার ফ্রেন্ডরা যা বলে তাই শোনো। ওরা যা খেতে চাই তাই খাওয়াবেন না হলে কিন্তু তোমার সাথে দেখা করব না।
–কিন্তু তুমি কোথায় আছো? আর আজ তো আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল।
–দেখা করার কথা ভুলে যাও।যদি আমার ফ্রেন্ডরা খুশি হয় তোমার প্রতি তাহলে আমি দেখা করবো।
কি আর বলব বলির পাঠা। জান্নাতের সব ফ্রেন্ডকে বললাম..
–চলেন আপনাদের খাওয়াতে নিয়ে যায়।
–কিন্তু আমরা তো চিটার তাহলে আমাদের খাওয়াবেন কেন?
–প্লিজ বোন মাফ চাই। প্লিজ চলেন...
তারপর সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই এবং সবাইকে ইচ্ছামত খাওয়াই। একবারে বিল এসেছে 1850 টাকা। পকেট অর্ধেক ফাঁকা করে ফেলল শুধু একবারেই। আল্লাই জানে আমার পকেট থেকে আর কত খসবে। হোটেলের বিল দেবো শেষে জান্নাতের ফ্রেন্ডদের বললাম...
–এখন তো জানতে সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেবেন প্লিজ?
–আচ্ছা ভেবে দেখি।যদি মনে হয় আপনার সাথে জান্নাতের দেখা করানো যাবে তাহলে দেখা করাবো।
–এটা কেমন কথা?
–হ্যাঁ এইটাই কথা। আর হ্যাঁ আমার ভাইয়া যেন আজকের ব্যাপারে কোন কিছু না জানে। (মীম বলল)
–আচ্ছা ঠিক আছে।
একে তো পকেট থেকে এতগুলো টাকা খসালো আবার জান্নাতের সাথে দেখা করার ব্যবস্থাও করে দিলো না। কেমনডা লাগে আপনারাই বলেন তো?
দুঃখ ভরা মন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ছাদে যাই। ছাদে গিয়ে বসে আছি। কিছু ভালো লাগছে না বারে বারে জান্নাতের কথা মনে পড়ছে। জান্নাতের সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছিনা। এমনসময় মিম ছাদে চলে আসেন আর আমাকে বলে...
–কি ব্যাপার দুলাভাই ছাদে একা একা কি করেন?
–তুমি আমার সব খবর জান্নাত কে বল তাই না?
–সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
–জানে তুমি জান্নাত কে আমার সকল খবর বল। তুমি ছাড়া তুমি বাসায় আর কেউ নেই।
–হ্যাঁ আমি বলি তো কি হইছে?
–মিম প্লিজ জান্নাতের সাথে একবার দেখা করার ব্যবস্থা করে দাও না।
–সরি আমি পারবো না।
এটা বলে মীম আমাকে ভেংচি কেটে নিচে চলে যায়। কি বলব কারো ভাবসাব কিছু বুঝিনা। সবাই আমার সাথে প্রতারণা শুরু করে দিয়েছে। কার জন্য এই সিরাজগঞ্জে আসলাম তার সাথে আমার দেখা হচ্ছে না।
বিয়ের এখনো তিন দিন বাকি। আর তাই সবাই প্ল্যান করে যমুনা নদীতে ঘুরতে যাবে। ইব্রাহিম দের বাড়ি থেকে যমুনা নদী বেশি দূর না তাই প্ল্যান অনুযায়ী পরের দিন সকালে যমুনা নদীতে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়ি। যমুনা নদীর বাড়ি গিয়ে সবাই অনেক আনন্দ করছি। নদীতে প্রচুর স্রোত বইছে। নদীর আরে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সবাই মিলে প্ল্যান করি নৌকা চলে নদীর ভিতর করব। কথামতো একটা নৌকায় উঠে পড়ি। আজ জীবনে প্রথম নৌকায় উঠছি খুব ভয় করছে যদি নৌকা থেকে পড়ে যায় বা নৌকাটা ডুবে যায়। কিন্তু সবাই নৌকায় অনেক মজা নিচ্ছে। সবাই নৌকার উপর নাচানাচি করছে। আমি সাঁতার জানিনা তাই আমার ভয়টা অনেক বেশি ছিল। ইব্রাহিমও সাঁতার জানত না কারণ ও ছোট থেকেই ঢাকায় বড় হয়েছে। ইব্রাহিম আর আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। সবাই নাচানাচি করছে খুব মজা করছে তারা। তাদের দেখে খুব হিংসা হচ্ছিল। উফ আমিও যদি ওদের সাথে একটু নাচতে পারতাম। কিন্তু আমার তো ভয় করছে যদি নৌকাটা ডুবে যায়। সবকিছু ভুলে ভাবলাম যা হবার হবে সবার সাথে আমিও নাচবো। সবার সাথে নাচতেছি হঠাৎ এমন সময় একজনের সাথে ধাক্কা লেগে আমি নৌকার উপর থেকে নদীর ভেতর পড়ে যায়......–ও চুপচাপ আমার ফ্রেন্ডরা যা বলে তাই শোনো। ওরা যা খেতে চাই তাই খাওয়াবেন না হলে কিন্তু তোমার সাথে দেখা করব না।
–কিন্তু তুমি কোথায় আছো? আর আজ তো আমার সাথে দেখা করার কথা ছিল।
–দেখা করার কথা ভুলে যাও।যদি আমার ফ্রেন্ডরা খুশি হয় তোমার প্রতি তাহলে আমি দেখা করবো।
কি আর বলব বলির পাঠা। জান্নাতের সব ফ্রেন্ডকে বললাম..
–চলেন আপনাদের খাওয়াতে নিয়ে যায়।
–কিন্তু আমরা তো চিটার তাহলে আমাদের খাওয়াবেন কেন?
–প্লিজ বোন মাফ চাই। প্লিজ চলেন...
তারপর সবাইকে নিয়ে রেস্টুরেন্টে যাই এবং সবাইকে ইচ্ছামত খাওয়াই। একবারে বিল এসেছে 1850 টাকা। পকেট অর্ধেক ফাঁকা করে ফেলল শুধু একবারেই। আল্লাই জানে আমার পকেট থেকে আর কত খসবে। হোটেলের বিল দেবো শেষে জান্নাতের ফ্রেন্ডদের বললাম...
–এখন তো জানতে সাথে দেখা করার ব্যবস্থা করে দেবেন প্লিজ?
–আচ্ছা ভেবে দেখি।যদি মনে হয় আপনার সাথে জান্নাতের দেখা করানো যাবে তাহলে দেখা করাবো।
–এটা কেমন কথা?
–হ্যাঁ এইটাই কথা। আর হ্যাঁ আমার ভাইয়া যেন আজকের ব্যাপারে কোন কিছু না জানে। (মীম বলল)
–আচ্ছা ঠিক আছে।
একে তো পকেট থেকে এতগুলো টাকা খসালো আবার জান্নাতের সাথে দেখা করার ব্যবস্থাও করে দিলো না। কেমনডা লাগে আপনারাই বলেন তো?
দুঃখ ভরা মন নিয়ে বাসায় ফিরলাম। বাসায় ফিরে ফ্রেশ হয়ে ছাদে যাই। ছাদে গিয়ে বসে আছি। কিছু ভালো লাগছে না বারে বারে জান্নাতের কথা মনে পড়ছে। জান্নাতের সাথে খুব দেখা করতে ইচ্ছে করছে কিন্তু পারছিনা। এমনসময় মিম ছাদে চলে আসেন আর আমাকে বলে...
–কি ব্যাপার দুলাভাই ছাদে একা একা কি করেন?
–তুমি আমার সব খবর জান্নাত কে বল তাই না?
–সেটা জেনে আপনি কি করবেন?
–জানে তুমি জান্নাত কে আমার সকল খবর বল। তুমি ছাড়া তুমি বাসায় আর কেউ নেই।
–হ্যাঁ আমি বলি তো কি হইছে?
–মিম প্লিজ জান্নাতের সাথে একবার দেখা করার ব্যবস্থা করে দাও না।
–সরি আমি পারবো না।
এটা বলে মীম আমাকে ভেংচি কেটে নিচে চলে যায়। কি বলব কারো ভাবসাব কিছু বুঝিনা। সবাই আমার সাথে প্রতারণা শুরু করে দিয়েছে। কার জন্য এই সিরাজগঞ্জে আসলাম তার সাথে আমার দেখা হচ্ছে না।
বিয়ের এখনো তিন দিন বাকি। আর তাই সবাই প্ল্যান করে যমুনা নদীতে ঘুরতে যাবে। ইব্রাহিম দের বাড়ি থেকে যমুনা নদী বেশি দূর না তাই প্ল্যান অনুযায়ী পরের দিন সকালে যমুনা নদীতে ঘোরার জন্য বেরিয়ে পড়ি। যমুনা নদীর বাড়ি গিয়ে সবাই অনেক আনন্দ করছি। নদীতে প্রচুর স্রোত বইছে। নদীর আরে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর সবাই মিলে প্ল্যান করি নৌকা চলে নদীর ভিতর করব। কথামতো একটা নৌকায় উঠে পড়ি। আজ জীবনে প্রথম নৌকায় উঠছি খুব ভয় করছে যদি নৌকা থেকে পড়ে যায় বা নৌকাটা ডুবে যায়। কিন্তু সবাই নৌকায় অনেক মজা নিচ্ছে। সবাই নৌকার উপর নাচানাচি করছে। আমি সাঁতার জানিনা তাই আমার ভয়টা অনেক বেশি ছিল। ইব্রাহিমও সাঁতার জানত না কারণ ও ছোট থেকেই ঢাকায় বড় হয়েছে। ইব্রাহিম আর আমি খুব ভয় পাচ্ছিলাম। সবাই নাচানাচি করছে খুব মজা করছে তারা। তাদের দেখে খুব হিংসা হচ্ছিল। উফ আমিও যদি ওদের সাথে একটু নাচতে পারতাম। কিন্তু আমার তো ভয় করছে যদি নৌকাটা ডুবে যায়। সবকিছু ভুলে ভাবলাম যা হবার হবে সবার সাথে আমিও নাচবো। সবার সাথে নাচতেছি হঠাৎ এমন সময় একজনের সাথে ধাক্কা লেগে আমি নৌকার উপর থেকে নদীর ভেতর পড়ে যায়......