গাড়ির সিটবেল্ট প্রযুক্তি উন্নয়ন মানুষের সড়ক নিরাপত্তায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। সিটবেল্ট প্রথম আবিষ্কৃত হয়েছিল ১৯৫০-এর দশকে, যখন তা শুধুমাত্র একটি দুই-পয়েন্ট বেল্ট হিসাবে ব্যবহৃত হতো, যা গাড়ির যাত্রীর কোমরকে ধরে রাখতো। এই সিস্টেমটি একদম প্রাথমিক ছিল এবং দুর্ঘটনার সময় এর কার্যকারিতা সীমিত ছিল।
১৯৫৯ সালে ভলভো গাড়ি নির্মাতা প্রতিষ্ঠান তিন-পয়েন্ট সিটবেল্টের ধারণা নিয়ে আসে। নিলস বোহলিন নামে ভলভোর এক প্রকৌশলী এই প্রযুক্তি উন্নয়ন করেন, যা বর্তমানেও ব্যবহার করা হচ্ছে। তিন-পয়েন্ট সিটবেল্ট গাড়ির যাত্রীদের কাঁধ এবং কোমর উভয় স্থানে ধরে রাখে, যার ফলে সংঘর্ষের সময় শরীরের উপরের অংশের ওপরেও সমানভাবে চাপ ভাগ হয়ে যায় এবং ক্ষতির সম্ভাবনা কমে।
এছাড়াও, আধুনিক গাড়িতে সিটবেল্টের উন্নত প্রযুক্তি হিসেবে প্রিটেনশনার ও লোড লিমিটার যুক্ত করা হয়েছে। প্রিটেনশনার গাড়ি দুর্ঘটনার আগে সিটবেল্টকে দ্রুত টেনে যাত্রীর শরীরের সাথে নিবিড়ভাবে লাগিয়ে ফেলে, যাতে আঘাতের ঝুঁকি কমে। লোড লিমিটার সিটবেল্টের টান কমায়, যাতে শরীরের ওপর অতিরিক্ত চাপ না পড়ে এবং বুক বা পাঁজরের আঘাত এড়ানো যায়।
বর্তমানে সিটবেল্ট ব্যবহারে বেশ কিছু অটোমেটিক প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে, যেমন অটোমেটিক বেল্ট ফাস্টেনিং ও সিটবেল্ট রিমাইন্ডার সিস্টেম। গাড়ির সিস্টেমের সাথে যুক্ত সেন্সর প্রযুক্তি দুর্ঘটনার পূর্বাভাস দেয় এবং যাত্রীদের বেল্ট বাঁধার নির্দেশনা প্রদান করে।
সিটবেল্ট প্রযুক্তির এই উন্নয়নগুলির মাধ্যমে সড়ক দুর্ঘটনায় গুরুতর আঘাতের সংখ্যা ব্যাপকভাবে কমিয়ে আনা সম্ভব হয়েছে, যা গাড়ির নিরাপত্তা ব্যবস্থার একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি।