মদিনা সনদ ইসলামের প্রথম লিখিত সংবিধান, যা মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সা.) মদিনায় প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্রের জন্য প্রণয়ন করেছিলেন। ৬২২ খ্রিস্টাব্দে হিজরতের পর মদিনায় মুসলমানদের পাশাপাশি ইহুদি, খ্রিস্টান ও অন্যান্য গোত্রের লোকজনও বসবাস করত। তাদের মধ্যে শান্তি, শৃঙ্খলা এবং সামাজিক ঐক্য বজায় রাখার জন্য এই সনদ প্রণয়ন করা হয়।
মদিনা সনদের প্রধান লক্ষ্য ছিল মদিনায় বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্ম, গোত্র ও সম্প্রদায়ের মধ্যে সম্প্রীতি ও শান্তি স্থাপন করা। এটি মোট ৫২টি ধারা নিয়ে গঠিত, যেখানে মুসলিম ও অমুসলিমদের অধিকার ও দায়িত্বগুলো স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। সনদের মূল দিকগুলোর মধ্যে অন্যতম ছিল ধর্মীয় স্বাধীনতা রক্ষা, বিচার ব্যবস্থার ন্যায্যতা বজায় রাখা, এবং সকল সম্প্রদায়ের জন্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
এ সনদে উল্লেখ করা হয়েছে যে, মদিনার সব অধিবাসী একক জাতি হিসেবে বিবেচিত হবে এবং তারা মিলে মদিনার শান্তি রক্ষা করবে। পাশাপাশি, কোনো বহিরাগত আক্রমণের ক্ষেত্রে সবাই একত্রে রক্ষা করার দায়িত্ব পালন করবে। এতে ধর্ম, বর্ণ বা গোত্র নির্বিশেষে ন্যায়বিচারের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়।
মদিনা সনদ ইসলামী শাসন ব্যবস্থার প্রাথমিক ভিত্তি স্থাপন করে এবং তা বিশ্বের প্রথম লিখিত সংবিধানগুলোর একটি হিসেবে বিবেচিত হয়। এটি ইসলামের মূলনীতি ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় একটি গুরুত্বপূর্ণ দৃষ্টান্ত হিসেবে গণ্য করা হয়।