শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণ হল শিক্ষাব্যবস্থাকে একটি পণ্য হিসেবে দেখা, যেখানে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো মুনাফা অর্জনের লক্ষ্যে পরিচালিত হয়। এটি বিশেষত বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে বেশি দেখা যায়, যেখানে উচ্চ শিক্ষা লাভের জন্য শিক্ষার্থীদের প্রচুর অর্থ ব্যয় করতে হয়। শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের ফলে শিক্ষার মূল উদ্দেশ্য—জ্ঞান প্রদান ও সামাজিক উন্নয়ন—প্রায়শই ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণে একটি বড় সমস্যা হল শিক্ষা সবার জন্য সমানভাবে সহজলভ্য থাকে না। উচ্চ শিক্ষার খরচ বৃদ্ধি পাওয়ায় আর্থিকভাবে পিছিয়ে পড়া শিক্ষার্থীরা মানসম্পন্ন শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হয়। এটি সমাজে বৈষম্য সৃষ্টি করে এবং উচ্চতর শিক্ষার সুযোগ শুধুমাত্র বিত্তবানদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকে।
এছাড়া, বাণিজ্যিকীকরণ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে মুনাফার ওপর বেশি গুরুত্ব দিতে বাধ্য করে, ফলে শিক্ষার গুণগত মান কমে যায়। শিক্ষার্থীদের দক্ষতা এবং জ্ঞান বিকাশের পরিবর্তে ফলাফলনির্ভর শিক্ষা ব্যবস্থা চালু হয়, যা তাদের সৃজনশীলতা এবং উদ্ভাবনী চিন্তার পরিপন্থী।
তবে, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের কিছু ইতিবাচক দিকও রয়েছে। এটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে বিনিয়োগ করতে এবং শিক্ষার্থীদের জন্য উন্নত সুযোগ-সুবিধা প্রদান করতে উৎসাহিত করে।
অতএব, শিক্ষার বাণিজ্যিকীকরণের ফলে যে সমস্যাগুলো দেখা দেয়, সেগুলোর সমাধান করা জরুরি, যাতে শিক্ষার মৌলিক উদ্দেশ্য ক্ষতিগ্রস্ত না হয় এবং সবার জন্য মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা যায়।