আধুনিক যুগে তথ্যপ্রযুক্তির অগ্রগতি মানুষের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে তুলেছে। স্মার্টফোন, ট্যাবলেট, কম্পিউটার – এই সব যন্ত্র আমাদের হাতের মুঠোয় বিশ্বকে এনে দিয়েছে। কিন্তু এই সুবিধার পাশাপাশি একটি নতুন সমস্যাও দেখা দিয়েছে, আর তা হল মনোযোগ স্বল্পতা।
মনোযোগ স্বল্পতা কী?
মনোযোগ স্বল্পতা হল এক ধরনের অবস্থা যেখানে একজন ব্যক্তি কোনো একটি বিষয়ে দীর্ঘক্ষণ মনোযোগ দিতে পারে না। তার মন ক্রমাগত অন্য কোথাও ঘুরতে থাকে। সোশ্যাল মিডিয়া, ইমেইল, মেসেজ – এই সবই আমাদের মনোযোগকে ছিনিয়ে নিয়ে যায়।
মনোযোগ স্বল্পতার কারণ:
স্মার্টফোন ব্যবহার: স্মার্টফোন ব্যবহারের ফলে আমাদের মস্তিষ্কের নিউরনগুলো ক্রমাগত নতুন নতুন তথ্য গ্রহণ করতে থাকে। ফলে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
সোশ্যাল মিডিয়া: সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন নতুন পোস্ট, নোটিফিকেশন দেখার জন্য আমরা ক্রমাগত ফোন চেক করি। এতে মনোযোগ স্বল্পতা বৃদ্ধি পায়।
মাল্টিটাস্কিং: একই সাথে একাধিক কাজ করার চেষ্টা করলে মনোযোগ বিভক্ত হয়ে যায়।
ঘুমের অভাব: পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মনোযোগ কেন্দ্রীভূত করা কঠিন হয়ে পড়ে।
মনোযোগ স্বল্পতার প্রভাব:
কাজের ক্ষমতা হ্রাস: মনোযোগ স্বল্পতার কারণে কাজের গতি ও গুণগত মান দুইই কমে যায়।
সম্পর্কের অবনতি: পরিবার ও বন্ধুদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখতে মনোযোগ দেওয়া জরুরি। কিন্তু মনোযোগ স্বল্পতার কারণে এই সম্পর্কগুলো ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাব: দীর্ঘদিন মনোযোগ স্বল্পতা থাকলে মানসিক চাপ, উদ্বেগ এবং হতাশা বৃদ্ধি পেতে পারে।
মনোযোগ স্বল্পতা কাটিয়ে উঠার উপায়:
স্মার্টফোন ব্যবহার কমান: স্মার্টফোন ব্যবহারের সময় নির্ধারণ করে নিন।
সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার সীমিত করুন: সোশ্যাল মিডিয়ায় কম সময় ব্যয় করার চেষ্টা করুন।
একবারে একটি কাজ করুন: মাল্টিটাস্কিং এড়িয়ে চলুন।
পর্যাপ্ত ঘুম নিন: প্রতিদিন কমপক্ষে ৭-৮ ঘন্টা ঘুমাতে হবে।
ধ্যান বা যোগাসান করুন: ধ্যান বা যোগাসান মনোযোগ বাড়াতে সাহায্য করে।
মনোযোগ স্বল্পতা আজকের সমাজের একটি বড় সমস্যা। এই সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে আমাদের সবারই সচেতন হতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।