হিলফুল ফুজুল ছিল আরবের প্রাক-ইসলামী যুগের একটি সামাজিক চুক্তি বা জোট, যা ন্যায়বিচার ও সামাজিক সমতা প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্যে গঠিত হয়েছিল। এই জোটের সূচনা হয়েছিল ৬০৫ খ্রিস্টাব্দে, যখন মক্কায় এক বণিকের প্রতি অন্যায় করা হয়েছিল। ঐ বণিক মক্কার কুরাইশ গোত্রের এক সদস্যের কাছে তার মালামালের ন্যায্য মূল্য দাবি করলে, ওই ব্যক্তি তা দিতে অস্বীকার করে। এই ঘটনার পর, মক্কার কিছু ন্যায়পরায়ণ ব্যক্তি একত্রিত হয়ে সিদ্ধান্ত নেন যে, তারা সমাজে ন্যায়বিচার ও নির্যাতিতদের অধিকার রক্ষা করবেন।
এই চুক্তির প্রধান উদ্যোক্তাদের মধ্যে ছিলেন মক্কার বিভিন্ন প্রভাবশালী গোত্রের নেতারা, বিশেষ করে বনু হাশিম ও বনু জাহরা গোত্রের সদস্যরা। তাদের নেতৃত্বে এই জোট গঠিত হয় এবং এর লক্ষ্য ছিল অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো, দুর্বল ও নির্যাতিতদের সাহায্য করা এবং সমাজে শৃঙ্খলা ও ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করা।
হজরত মুহাম্মদ (সা.) এই জোটে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছিলেন এবং এর প্রতি সমর্থন জানিয়েছিলেন। নবুওয়াতের পরও তিনি হিলফুল ফুজুলের প্রতি তার সমর্থন অব্যাহত রাখেন এবং বলেছিলেন যে, এমন ন্যায়বিচার ও মানবতার সেবার চুক্তিতে আবারও ডাকলে তিনি অংশ নিতেন।
হিলফুল ফুজুল ইসলামের ন্যায়বিচার ও মানবাধিকার রক্ষার শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ ছিল। এটি আরব সমাজে সামাজিক ন্যায়বিচারের প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে গণ্য হয় এবং পরে ইসলামের সামাজিক নীতিমালা গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।