কাল্পনিক চরিত্রের বিবর্তন সাহিত্যে, চলচ্চিত্রে, এবং জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারা। শুরুতে, গল্পের চরিত্রগুলো সাধারণত নির্দিষ্ট ধরনের বৈশিষ্ট্য ও ধাঁচে তৈরি করা হতো। যেমন, সাহসী নায়ক, দুষ্ট ভিলেন, বা নির্দোষ নায়িকা। এ ধরনের চরিত্রগুলো সরলভাবে উপস্থাপিত হতো এবং তাদের বিকাশ খুব একটা দেখা যেত না। চরিত্রের গভীরতা বা তাদের মানসিক জটিলতা কম থাকত।
কিন্তু সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, সাহিত্য ও বিনোদনের চাহিদা পরিবর্তনের কারণে কাল্পনিক চরিত্রগুলোও বিবর্তিত হয়েছে। এখন চরিত্রগুলো আরও জটিল, বহুমাত্রিক এবং মানবিক বৈশিষ্ট্য নিয়ে গড়ে ওঠে। নায়কেরাও নিখুঁত হয় না; তারা ত্রুটিপূর্ণ, কখনো দ্বিধাগ্রস্ত, কখনো নৈতিক সমস্যায় জর্জরিত। এতে চরিত্রগুলো আরও বাস্তবসম্মত এবং পাঠক বা দর্শকের সঙ্গে সংযুক্ত হতে সক্ষম হয়।
এই পরিবর্তনটি মূলত আধুনিক সাহিত্যে এবং চলচ্চিত্রে দেখা যায়, যেখানে চরিত্রগুলোর মানসিক ও আবেগীয় দিকগুলো গভীরভাবে অনুসন্ধান করা হয়। ভিলেনরাও কেবল দুষ্ট নয়, তাদের অতীত, কারণ বা উদ্দেশ্যগুলো তুলে ধরা হয়, যা তাদেরও মানবিক করে তোলে। এছাড়া, নারী চরিত্রগুলোর ক্ষেত্রেও দেখা গেছে উন্নতি; তারা এখন কেবল পুরুষ চরিত্রের সহায়িকা নয়, বরং নিজেদের লক্ষ্য ও সত্তা নিয়ে গড়ে ওঠে।
এই বিবর্তন শুধু চরিত্রগুলোর জটিলতা বৃদ্ধি করেনি, বরং কাহিনির গভীরতাও অনেকাংশে বাড়িয়েছে। কাল্পনিক চরিত্রের এই পরিবর্তন গল্প বলার নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে, যেখানে পাঠক বা দর্শক আরও সংযুক্ত এবং মনস্তাত্ত্বিকভাবে আকৃষ্ট হতে পারেন।