সাধারণ সর্দি থেকে শুরু করে মারাত্মক রোগ যেমন এইচআইভি, আমরা প্রায়ই ভাইরাসজনিত রোগে আক্রান্ত হই। কিন্তু এন্টিবায়োটিকের মতো এন্টিভাইরাল ওষুধ কেন তুলনামূলকভাবে কম পাওয়া যায়, সে প্রশ্নটি অনেকের মনেই জাগে। বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসের জটিল গঠন এবং দ্রুত পরিবর্তনশীলতা এন্টিভাইরাল ওষুধ তৈরিতে প্রধান বাধা।
আমরা জানি, ব্যাকটেরিয়া এক ধরনের এককোষী জীব যা নিজে নিজে বংশবিস্তার করতে পারে। অন্যদিকে, ভাইরাস কোষের চেয়ে অনেক ছোট কণা এবং নিজে নিজে বংশবিস্তার করতে পারে না। কোনো কোষের ভেতরে প্রবেশ করে সেই কোষকে ব্যবহার করে নিজেদের প্রতিলিপি তৈরি করে।
এন্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার কোষের বিভিন্ন কাজ বাড় বাধা দিয়ে এদের বৃদ্ধি বা বংশবিস্তার বন্ধ করে দেয়। কিন্তু ভাইরাস কোষের ভেতরে বংশবিস্তার করে, তাই ভাইরাসকে আক্রমণ করতে গেলে কোষকেও ক্ষতিগ্রস্ত করা হতে পারে। এছাড়া ভাইরাসের জিনগত বৈচিত্র্য অনেক বেশি, ফলে একই ওষুধ সব ধরনের ভাইরাসের বিরুদ্ধে কাজ করতে পারে না।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, ভাইরাসের জটিল গঠন এবং দ্রুত পরিবর্তনশীলতা এন্টিভাইরাল ওষুধ তৈরিতে প্রধান বাধা। ভাইরাস খুব দ্রুত নিজেদের পরিবর্তন করতে পারে, ফলে একটি ওষুধ দিয়ে সব ভাইরাসকে নিধন করা কঠিন। এছাড়া, ভাইরাসকে নিধন করতে গেলে কোষকেও ক্ষতিগ্রস্ত করার আশঙ্কা থাকে, যা গুরুতর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারে।
বিজ্ঞানীরা ক্রমাগত নতুন এন্টিভাইরাল ওষুধ আবিষ্কারের চেষ্টা করে যাচ্ছেন। জিনগত প্রকৌশল, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য নতুন প্রযুক্তির সাহায্যে ভবিষ্যতে আরও কার্যকর এন্টিভাইরাল ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হবে বলে আশা করা যায়।
এন্টিবায়োটিক এবং এন্টিভাইরাল ওষুধের মধ্যে পার্থক্য বুঝতে হলে ভাইরাস এবং ব্যাকটেরিয়ার মধ্যকার পার্থক্য জানা জরুরি। ভাইরাসের জটিল গঠন এবং দ্রুত পরিবর্তনশীলতার কারণে এন্টিভাইরাল ওষুধ তৈরি করা অনেক বেশি কঠিন। তবে বিজ্ঞানীদের অবিরাম চেষ্টায় ভবিষ্যতে ভাইরাসজনিত রোগের বিরুদ্ধে আরও কার্যকর ওষুধ আবিষ্কার করা সম্ভব হবে।