বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা এবং মজুরি বৈষম্য একটি জটিল অর্থনৈতিক সমস্যা, যা আধুনিক অর্থনীতিতে ক্রমবর্ধমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। বিশ্বায়নের ফলে বিভিন্ন দেশের শ্রমবাজার একে অপরের সাথে সংযুক্ত হয়েছে, এবং প্রতিযোগিতামূলক বাজারে টিকে থাকতে প্রতিষ্ঠানগুলো কম মজুরিতে দক্ষ শ্রমশক্তির সন্ধান করছে। এর ফলে উন্নত দেশগুলোতে উচ্চ মজুরি এবং উন্নয়নশীল বা উদীয়মান অর্থনীতির দেশগুলোতে নিম্ন মজুরির মধ্যে একটি বৈষম্য সৃষ্টি হয়েছে।
বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার অন্যতম প্রভাব হলো, অনেক কোম্পানি উন্নয়নশীল দেশগুলোতে তাদের উৎপাদন কার্যক্রম স্থানান্তর করছে যেখানে শ্রমিকদের মজুরি তুলনামূলকভাবে কম। এর ফলে ঐসব দেশগুলোর অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটছে, তবে একইসাথে নিম্ন মজুরি এবং শ্রমিক অধিকার সম্পর্কিত সমস্যাও বৃদ্ধি পাচ্ছে। অন্যদিকে, উন্নত দেশগুলোতে শ্রমিকরা উচ্চ মজুরি দাবি করলেও, তাদের কর্মসংস্থান সুযোগ সীমিত হয়ে পড়ছে, কারণ কোম্পানিগুলো সস্তা শ্রমের সন্ধানে অন্যত্র চলে যাচ্ছে।
এই মজুরি বৈষম্য শুধুমাত্র দেশগুলোর মধ্যে নয়, একই দেশের অভ্যন্তরেও দেখা যায়। উচ্চ দক্ষতাসম্পন্ন পেশাজীবীরা বেশি বেতন পেলেও, কম দক্ষ শ্রমিকরা তুলনামূলকভাবে কম মজুরি পান। এটি সমাজে আয় বৈষম্য বৃদ্ধি করে এবং আর্থিক অস্থিতিশীলতা সৃষ্টি করতে পারে।
এই বৈষম্য কমানোর জন্য প্রয়োজন একটি ভারসাম্যপূর্ণ নীতি, যেখানে বৈশ্বিক প্রতিযোগিতা এবং শ্রমিকদের অধিকার রক্ষা উভয়ই নিশ্চিত করা হয়। দক্ষতা বৃদ্ধির প্রশিক্ষণ, শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি, এবং আন্তর্জাতিক শ্রমনীতি উন্নয়নের মাধ্যমে এই বৈষম্য কমানো সম্ভব।