হুন্ডি, বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশে প্রচলিত একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক অর্থ লেনদেনের পদ্ধতি। এটি মূলত একটি লিখিত আদেশ, যার মাধ্যমে এক ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিকে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ পরিশোধ করার নির্দেশ দেন। এই পদ্ধতিটি প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে এবং বিশেষ করে দূরবর্তী এলাকাগুলোতে অর্থ প্রেরণের একটি জনপ্রিয় মাধ্যম হিসেবে পরিচিত।
হুন্ডির সবচেয়ে বড় সুবিধা হল এর সরলতা। ব্যাংকের জটিলতা এড়িয়ে খুব সহজেই এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় অর্থ পাঠানো যায়। বিশেষ করে যেসব এলাকায় ব্যাংকিং সুবিধা সীমিত, সেখানে হুন্ডি একটি প্রয়োজনীয় সেবা হিসেবে কাজ করে। তবে, হুন্ডির সাথে অনেক সমস্যাও জড়িত। প্রথমত, এটি একটি অপ্রাতিষ্ঠানিক পদ্ধতি হওয়ায় কোনো ধরনের নিয়ন্ত্রণ নেই। ফলে, অর্থ পাচার, ট্যাক্স ফাঁকি এবং অন্যান্য অবৈধ কার্যকলাপে হুন্ডি ব্যবহার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। দ্বিতীয়ত, হুন্ডি ব্যবস্থায় কোনো ধরনের নিরাপত্তা নেই। যদি হুন্ডি হারিয়ে যায় বা ক্ষতিগ্রস্ত হয়, তাহলে অর্থ ফেরত পাওয়ার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না।
সরকারি পর্যায়ে হুন্ডিকে অবৈধ বলে ঘোষণা করা হলেও, এটি এখনও অনেক দেশে প্রচলিত রয়েছে। এর কারণ হল, ব্যাংকিং সুবিধা না থাকা, দুর্নীতি এবং অর্থনৈতিক অস্বচ্ছতা। তবে, বিশ্বায়নের সাথে সাথে ব্যাংকিং সুবিধা বাড়ছে এবং অর্থনীতি আরো স্বচ্ছ হচ্ছে। ফলে, হুন্ডির ব্যবহার ধীরে ধীরে কমে যাচ্ছে।
সার্বিকভাবে বলতে গেলে, হুন্ডি একটি জটিল সমস্যা। এটি একদিকে যেমন অনেক মানুষের জন্য একটি প্রয়োজনীয় সেবা, অন্যদিকে এটি অবৈধ কার্যকলাপে সহায়তা করতে পারে। সরকারকে হুন্ডির বিকল্প হিসেবে নিরাপদ এবং সহজলভ্য ব্যাংকিং সুবিধা সৃষ্টি করতে হবে। একই সাথে, হুন্ডির অবৈধ ব্যবহার রোধ করার জন্য কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে।