শুনছিলাম।
ও আপনাদের তো আমাদের পরিচয় টা দেয়া হলো না । আমি কাব্য আহমেদ(নীল) । বাবা-মায়ের আদরের তিনমাত্র সন্তান মানে তৃতীয় সন্তান। অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র আমি। আর এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম, সে হচ্ছে রিয়া।
রাহিয়া চৌধুরী রিয়া। বাড়ি চট্টগ্রাম আমার আম্মুর বান্ধাবীর মেয়ে। সেই সূত্রে ওর সাথে আমার পরিচয়। পরিচয় থেকে ভালোলাগা। আর ভালোলাগা থেকে
ভালোবাসা।♥
ওর সাথে আমার রিলেশনশিপটা এসএসসির পর
থেকেই। কিন্তু বর্তমানের রিয়া আর অতীতের
রিয়ার সাথে অামি আর মিল খুঁজে পাই না। রিয়া আগে আমার অনেক কেয়ার নিতো, আর অভিমানটাও আহ্লাদী সুরে ভাঙ্গাতো। কিন্তু এখন সে অনেক ব্যস্ত। হয়তো তার লেখাপড়া নিয়ে। তাই হয়তো সময়
দিতে পারছে না। যাইহোক ওর ভালোটা আমিও চাই। তাই সবকিছু মেনে নেই। কিন্তু আমার ছোট ছোট আবদার গুলোও কী পূরণ করতে পারে না। খুব বেশী কিছুতো চাই নি। শুধু আমাকে একটু সময় দিবে। তাও ওর এটুকু সময় হয়ে উঠে না তারপরও আমি রিয়াকে অনেক বেশী ভালোবাসি।♥
মাগরিবের আযানের সুর ভেসে আসলো পাশের মসজিদ থেকে। গানটা বন্ধ করে উঠে আস্তে আস্তে বাসার উদ্দ্যেশে হাঁটতে লাগলাম। আর আনমনে ভাবতে লাগলাম ফেলে আসা দিনগুলো। এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে এলাম। এসে ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম। একটা থ্রিডি ডিজাইন করতে হবে। আম্মু এসে চা দিয়ে গেলো। চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ফোন আসলো একটা নাম্বার থেকে। যার কোড সংখ্যা নয়টা। আমি
পিকআপ করতেই, বললো....
--Hello Are You Kabbo Ahammad.?
--Yes I'm Kabbo Ahammad (আমি)
--Good. You are selection for study in Australia.
University of Melbourne.....
(ভালো আপনি অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশুনার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে)
--Really..?
I'm Very Excited. Thanks For your good news.
(সত্যি..?
আমি অনেক আনন্দিত আপনার সুসংবাদটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
--Oky Good Bye....
--Oky Thanks..
আমি খবরটা শুনে খুশিতে আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম...
--আম্মু আমি অস্ট্রেলিয়াতে পড়ার চান্স পেয়েছি।
আর আমার কথাটা শুনে আম্মু সাথে সাথেই খুশিতে কেঁদে ফেললো। তারপর খুশিতে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলো বাবাকে খুশির খবরটা
জানাতে। আম্মুরা হয়তো এমনই হয়, সন্তানের
আনন্দের সংবাদ শুনে যেমন কাঁদে। তেমনি
দুঃখের সংবাদ শুনেও কাঁদে। গুড নিউজ টা শুনে আব্বু ও কেঁদে দিলেন। অজান্তে আমার চোখ থেকেও দু'ফোটা জল গড়িয়ে নিচে পড়লো। আমি এবার বেসিনে গিয়ে চোখে পানির ঝাপটা দিয়ে আসলাম। আর ল্যাপটপটা বন্ধ করে ভাবলাম। রিয়াকে তো গুড নিউজটা জানানো দরকার। আর এমন সময় এসে আম্মু ডিনারের জন্যে ডাকলেন। তাই ভাবলাম খাওয়া দাওয়া শেষে জানাবো।
খাওয়া দাওয়া শেষ করে এসে রিয়াকে ফোন দিলাম। রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ পিকআপ করছে না। প্রায়
অনেকবার রিং-এর পর ফোন ধরলো রিয়া।, ধরেই
বলতে লাগলো।
--এতো বার ফোন দেওয়া লাগে নাকি? জানোনা আমি এই সময়ে ব্যস্ত থাকি।
রিয়া অনেক রেগে বললো কথাগুলো। তাই আমি কিছু না বলে চুপ করে আছি...। আমার চুপ করে থাকা
দেখে ও আবার বললো...
--কী হলো কথা বলছো না কেন ফোন দিয়ে? গাধা কোথাকার। কোন ছাগলের পাল্লায় যে পড়লাম আল্লাহ।
আমি চুপচাপ শুধুই ওর বলা কথা গুলো শুনছিলাম আজকে ওর গাধা বলায় অন্য দিনের মতো ভালোবাসা,
আর আদর মিশ্রিত ছিলো না। আজকে খুব বিরক্তি ও অবহেলা করে বলেছে রিয়া কথাগুলো। সে আমাকে এভাবে কখনো বলে নি। তারপর আমি ওসব বাদ দিয়ে বললাম.......
--স্যরি রিয়া অসময়ে ফোন দেওয়ার জন্যে...।
(একটু কান্নাময় কণ্ঠে)
--কিহ্ এখন ঢং শুরু করেছো?
অভিনয় না করে সোজাসুজি বলো কেন ফোন দিয়েছে...?
--দুপুরে খেয়েছিলে.?
--না। তুমি খেয়েছো.?
--হুম।
--আমার বদলে তুমি খেয়েছো। আমার না
খেলেও চলবে। (রাগ নিয়েই বললাে)
--ওহহহ...!!! আচ্ছা রাত্রে খেয়েছো...?
--না।
আর আমার খাওয়া নিয়ে তোমার এতো মাথাব্যাথা
কেন.?? তুমি তোমার টা নিয়ে ভাবো।(রিয়া)
--তুমি তো আমার প্রিয় মানুষটা তাই তোমার কেয়ার না নিয়ে কার কেয়ার করবো বলো!!!!
--যত্তোসব ঢং।
আমি খাই না খাই তা আমি নিজে বুঝবো। তোমাকে বলে দিতে হবে না। আর আমার যদি এতোই কেয়ার নেও তাহলে পড়ার সময়ে আর ফোন দিবে না।
--আচ্ছা ঠিক আছে।
তুমি ঠিক ঠাক মতো পড়ো, খাওয়া-দাওয়া করবে।
ঠিক মতো ঘুমাবে না হলে শরীর খারাপ করবে। তখন আবার ভালোকরে পড়তে পারবে না ওকে।।।।
(কান্না আটকিয়ে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কথা গুলো বললাম)
তারপর রিয়া আমার কথাগুলো শুনে আমাকে ছাগল বলে ফোন রেখে দিলো।
রিয়ার সাথে কথা বলার পড়েই সাথে সাথে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে ট্যাপ ছেড়ে কিছুক্ষণ খুব কাঁদলাম। কেনোনা শুনেছি কাঁদলে নাকি মানুষের মন হালকা হয়। কিন্তু আমার মনটা এতো কাঁদার পড়েও হালকা হচ্ছিলো না। তখন আমার মনে হচ্ছিলো কেউ আমার বুকে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে। তারপর খুব কান্না করলাম রাত্রে। আর কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম। তারপর ব্রেকফাস্ট করে, উঠে নিজের কাগজপত্র সবকিছু রেডি করলাম। জমা দিতে হবে। খুব বেশী দিন সময় নেই আর আমার হাতে। কিন্তু এই সুখবরটাও রিয়াকে এখনো জানাতে পারলাম না। ওর কথা মনে পড়তেই আবারো আমার চোখ দিয়ে পানি চলে এলো মনে হলো গতকাল রাত্রের কথা।
তারপরেও এতো কিছুর পরেও আমি রিয়াকে ফোন দিয়ে ওর খোঁজ খবর নিতাম।
ওর খাওয়া-দাওয়া,পড়া-শোনার খবর নিতাম।
কিন্তু ও?
ও ওর মতোই নির্লিপ্তি থাকতো। আর আমার সাথে তেমন খুব একটা ভালোভাবে কথা বলতো না। তখন আমার ওর কাছে নিজেকে খুব নিঃস্ব মনে হতো।
এখন আর রিয়া রাত্রে আমায় ফোন দেয় না। ও হয়তো ব্যস্ত থাকে ওর পড়াশোনা নিয়ে। কিন্তু আমার রাত্রে ও কী খাওয়া-দাওয়া করেছে কিনা জানতে ইচ্ছে করতো খুব।
মাঝে মধ্যে ফোনও দিয়ে দিতাম। আর ও খুব বকতো আমার, মনে হয় আমি ওর কাছে কোনো গুরুত্বই বহন করছি না। আমার খুব কষ্ট হতো তখন। বুক ফেটে কান্না আসতো। ছাদে বসে খুব কাঁদতাম। ভালোবাসার শুরুটা আবেগ-এ হলেও পরিণতিটা যে অবহেলায় হয়, আজ তা বুঝতে পারলাম'ওর কাছ থেকে।
ছাদে বসে আমি অনেক জোরে জোরে কান্না করলাম। আর উপর ওয়ালা কে বলতে লাগলাম যে।
:-হে আল্লাহ্ কী অপরাধটা ছিল আমার যার জন্য আমাকে তুমি এমন করে কষ্ট দিচ্ছো।
কষ্ট যদি দাও তবে সইবার ক্ষমতা দাও না কেন?
আমি আর কষ্টগুলো বহন করতে পারছি না।
আমায় তোমার কাছে নিয়ে যাও। আমার এ কান্নার শব্দগুলো অনেক দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ জানে না এই কান্নারর কারণটা কী।।।।।
তারপর আস্তে আস্তে আমাে কান্না কমে আসলো। নিজেকে এখন খুব ভারি বোঝা মনে হলো নিজের কাছে....। তারপর খুব কষ্টে রুমে চলে এলাম। এসে না খেয়েই শুয়ে পরেছি। ফ্রেশ-ট্রেশ কিচ্ছু হইনি। আম্মু
ডাকছিলো, বললাম ক্ষুধা নেই।
এর মধ্যে এগিয়ে আসছে ১৪ই ফেব্রুয়ারী। এই দিনটা তাকে নিয়ে কাটাতে চাই, যেভাবেই হোক.....
এজন্য ফোন দিলাম রিয়াকে...। কিন্তু সে না ধরে ওর আম্মু ধরলেন...
--হ্যালো..!!(তুবার আম্মু)
--আন্টি. আসসালামু ওয়ালাইকুম..।(আমি)
--ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো বাবা কাব্য?
তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে.??
--জ্বী আন্টি আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ভালো আছি।
(মিথ্যা বললাম) আর আব্বু-আম্মুও ভালো আছে..। আর আপনারা কেমন আছেন.?
--হ্যাঁ বাবা আমরাও সবাই ভালো আছি। আর আমি শুনলাম তুমি নাকি অস্ট্রেলিয়া চান্স পেয়েছো বিএসসি করার জন্য?
--আলহামদুলিল্লাহ্ জ্বী আন্টি দোয়া করবেন।
--তাতাে অবশ্যই।
ওখানে গেলে আমাদের ভুলে যেও না আবার।
--কী যে বলেন আন্টি..?
আমি কি আর আপনাদের ভূলতে পারি!! নাহ্ আন্টি আমি আপনাদের কে কখনই ভুলতে পারবো না। আন্টি রিয়া কই..?
--রিয়া তো ওর রুমেই আছে.... ওয়েট করো দিচ্ছি।
কিছুক্ষণ পরে.......
--হ্যালো....!!!(রিয়া)
--কেমন আছো রিয়া...?
--আছি ভালোই।
খারাপ থাকার তো কোনো কারণ নেই।
(তাচ্ছিল্যেরর সুরে)
--ওহহ। ভালো..! (একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম)
আমি কেমন আছি জানতে চাইবে না।
--না।
কারণ তুমি ভালো আছো...। সেটা আমি খুব ভালো করেই যানি.!
আমি ওর বলা কথা গুলো শুনে মনে মনে অনেক বেশী কষ্ট পেলাম। তারপরেও:-
--নাহ্ আমি একটুও ভালো নেই। তোমায় ছাড়া.!(কেঁদেই দিলাম এবার)
--হুম! বুঝলাম।
--রিয়া প্লিজ আমায় এভাবে আর কষ্ট দিও না। আমি খুব মিস করি তোমায়। তোমায় জন্য কাঁদি খুব।
প্লিজ তুমি এমন পাশান মনের মানুষ হয়ো না।
(কাঁদার কারণে ফুঁফিয়ে বের হচ্ছে কথা)
--কাব্য আবারো তোমার সেই ন্যাকা কান্না শুরু করে দিলে। যত্তোসব..!!! দিলে তো মুডটাই নষ্ট করে।
--আচ্ছা রিয়া আমার কথা কী তোমার একবারও মনে
পড়ে না.?
--না মনে পড়ে না । তবে পড়লেও খুব কম।
--আচ্ছা তুমি তো এমন ছিলে না.। কতো ভালোবাসতে আমায়। কেয়ার করতে.। আজ এমন হলে কেন.?
কেন রিয়ক কেন...? (জোরে কেঁদে দিলাম)
--সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাব্য, হ্যাঁ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, আর তুমি একটা বোরিং ছেলে.! তোমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না আর অমার।
--এমন করে বলো না প্লিজ। আমার খুব কষ্ট হয়।
--এই তোর মতো ছেলেকে কী ভাবে বলবো রে। আহ্লাদ করে। এই সময় আর আমার নাই। আর তুই আমাকে ফোন দিবি না। ডিসগাস্টিং......টুথ টুথ টুথ.!
এই বলেই ফোনটা খুব জোরে রেখে দিলো রিয়া। এদিকে ওর বলা কথা গুলো শুনে আমার অনেক কান্না
আসছে চোখের জলগুলো বাঁধ মানছে না। আমি মানতেই পারছি না যে রিয়া আমাকে এভাবে হার্ট করতে দ্বিতীয়বার ভাবছে না। হে খোদা সবাই কেন এতো কষ্ট দেয়।
রিয়া কী আমাকে একটু ও আর বোঝে না। জবাব দাও খোদা..?? জবাব দাও......???
এসব বলে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেলাম।
সকালে উঠে ব্রাশ করতে করতে আয়নায় দেখছি
নিজেকে। নিজেকে নিজেই চিনতে পারছি না।
সব কিছু থেকেই যেন প্রাণ হারিয়ে গেছে।
কোনো চঞ্চলতা নেই। সবকিছু প্রাণহীন লাগে। খাবারটাও স্বাদহীন....। আর এমনিতেও মন ভালো থাকলে সবকিছু ভালো থাকে.....
এভাবে আরো কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেল।
এই কয়েকদিনে আম্মু আমার অবস্থাটা বুঝতে
পারেছে। এটা নিয়ে রিয়ার আম্মুর সাথেও মনে
হয় কথা বলেছে। আর এটা আমার সাথে ব্রেকফাস্ট টেবিলে কথা বলার সময় বোঝতে পারলাম।
তারপর রিয়ার আম্মু হয়তো রিয়াকে বুঝিয়েছে.! তাই আজকে রিয়া ফোন দিলো বিকেলে আমাকে.! আর আমিতো ওর ফোন পেয়ে খুশিতে আত্তহারা।
--হ্যালো...।
--হ্যালো কাব্য কোথায় তুমি.?(রিয়া)
আমার তো খুশিতে কথাই বের হচ্ছে না। ওফোন দিয়ে
কথা বলছে দেখে....।
--আআআ আমি...।
বাসায়.। কেমন আছো তুমি.?
--এইতো ভালো।
আজকে সন্ধ্যায় তুমি সিপি ফাইভ স্টারে দেখা করবে?
--আচ্ছা ঠিক আছে...
আমি ওর সাথে কথা বলতে পেরে খুশি মনে ওয়াশরুমে ঢুকে সেভ করে নিজেকে ফ্রেশ করে নিলাম। তারপর রেডি হলাম আস্তে আস্তে....।
বিকেলবেলা আমি ওর জন্যে বসে আছি। অনেক্ষণ ওয়েট করার পর রিয়া আসলো। এসেই বসলো মুখোমুখি চেয়ারে.। তারপর সে ওর হ্যান্ডব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে মুখটা মুছলো। আর এদিকে আমি ওর দিকে শুধুই তাকিয়েই আছি.। রিয়া ওর মুখ মুছে আমার দিকে খেয়াল করলো। এতো সময় ধরে যে তার সামনে একটা ছেলে বসে আছে হয়তো তার মনেই হচ্ছে না.। তাই আমিই বললাম....
--কেমন আছো রিয়া....???
--হুম। ভালোই...।
কী বলবে তাড়াতাড়ি বলো আমার সময় নেই...।
--দুপুরে খেয়েছিলে..?
--তুমি এগুলো বলতে আমায় ডেকেছো.?
আমি শুধুই মাথা নাড়লাম.। ও আবার বললো...
--আচ্ছা আমি যে কারণে ডেকেছি তোমায়.।
--হুম বলো..। কি কারণে?
--আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমার পরীক্ষা শুরু হবে। তাই আমি চাইনা তুমি আমার আম্মু বা আমাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব কর...।
আর……
পর্ব :- ০২
:--আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমার পরীক্ষা শুরু হবে। তাই আমি চাইনা তুমি আমার আম্মু বা আমাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব কর.!!
আমি রিয়ার কথায় শুধু মাথা নাড়লাম। এমনিতেও রিয়ার বলা কথাগগুলো শুনে আমার চোখে অশ্রু ভীড় করছে। আমি মাথা নিচু করে আছি। কারন ওকে বুঝতে দিব না তাই।
তারপর রিয়া আমার মাথা নাড়ানো দেখে আবার বললো।
(তবে এবার একটু রেগে গিয়ে বললো,)
--কাব্য তোমার কী কিছুই বলার নেই?
;-হুম। আছে...
(খুব ছোট্ট করে ভাঙ্গা গলায় বললাম....)
--হ্যাঁ তাহলে বলো কী বলবে?
--ভালো ভাবে পরীক্ষা দিয়ো। টিক মতো খেয়ো। সময় মতো ঘুমিয়ো। আর নিজের যত্ন নিয়ো।
আমার কথাগুলো শুনে রিয়া খুব রেগে গিয়ে আমাকে বললো:-
--এই তোর কী এসব ছাড়া কোনো কথা নেই। আমি আমার মতো থাকবো তাতে তোর কী.? আর তুই আমার খোঁজ করবি না। তোর কেয়ার গুলো
আজ আমার বিরক্ত লাগছে। আমাকে মুক্তি দে তুই এসব থেকে.। (রিয়া)
এই বলেই রিয়া আমার কাছ থেকে হনহনিয়ে চলে গেলো। আর এদিকে আমি কান্না ভেঁজা চোখ নিয়ে ওর গমন পথের দিকে তাঁকিয়ে থাকলাম। ও আমার চক্ষের আঁড়াল হয়ে যাবার সাথে সাথেই আমি ডুকরে কেঁদে উঠলাম। হয়তো অনেকেই হাঁসছে। কিন্তু তারা তো আমার কষ্ট বুঝবে না। তারা তো আর এটা জানে না যে আমি এখানে কেনো কাঁদছি। তারপর হঠাৎ কেউ একজন এসে আমার পিঠে হাত দিয়ে মাথায় হাত
দিলো। আমি চোখগুলা বাম হাত দিয়ে মুছে তার দিকে তাকালাম। দেখলাম একটা ছেলে আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে। আমি চোখ তুলে তাকানোতে বললো...
--ভাইয়া এভাবে কেঁদোনা, একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে...??(ছেলেটা)
--সত্যিই কী ঠিক হবে ভাইয়া.। চাইলেই কী সব ঠিক হয়...(ভাঙ্গা কণ্ঠে বললাম আমি)
--এখন বাসায় যান আর কাঁদবেন না.। সবাই তাকাচ্ছে আপনার দিকে...!!!
--হুম....।
এই বলেই সেখান থেকে সোজা বাসায় চলে আসলাম।
আর বাসায় এসেই আমি আম্মু আর আব্বুকে ধরে খুব কাঁদলাম.। তারপর বললাম :-
--আম্মু তোমার ছেলেতো কাউকে কষ্ট দেয় নি জেনে-শুনে.? তাহলে সবাই আমাকে কেন কষ্ট দেয়?
আমার কথা শুনে আম্মুও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন :-
--কী হয়েছে তোর বাবা? তুই এভাবে কাঁদছিস কেন? আমাকে বল.! এই বলেই আমার সাথে আম্মুও কেঁদে দিলো...।
--আম্মু তুমি তোমার পাগল ছেলেটাকে ক্ষমা করে দিয়ো। তোমায় হয়তো না বলে কষ্ট দিয়েছি কতো?
--কী বলছিস তুই যাতা কথা। তুই এরকম তো করিস না কখনো হঠাৎ আজ কি হলো?
( আম্মু কান্নাভেঁজা কণ্ঠে খুব কষ্টে বললো..)
তারপর কাঁদতে কাঁদতে বাবাকেও বললাম...
--বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো. আমি হয়তো তোমায়
কতো কষ্ট দিয়েছি...???
বাবা এবার আমার কথা শুনে কেঁদে ফেললো তারপর।
--কী বলছিস বাবা তুই এসব। আর তুই এমন করছিস কেন? তোর কি হয়েছে রে বাবা....!!! (বাবা)
--না বাবা।
আমি জানি যে আমি তোমাকে আর মাকে খুব জ্বালাই, আর তোমরাও আমার দেয়া কষ্ট গুলো মুখ বুঝে সহ্য করো। তাই তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো প্লিজ। (কথা গুলো অনেক কেঁদে কেঁদে বললাম )
:- আর জানো বাবা এখন আমার না নিজেকে খুব একা একা লাগছে। নিজেকে যেন হাঁরিয়ে ফেলেছি আমি বাবা। হঠাৎ আমার এমন কথা শুনে এবার আব্বু-আম্মু দুজন ই এক সাথে কেঁদে উঠলেন। তারপর বললো।
--না বাবা। না। কী উল্টাপাল্টা বকছিস তুই এসব? তুই আমাদের ছেলে... আর কিছুই বলতে পারলেন না আব্বু-আম্মু। দু'জনেই সমানে কাঁদছেন। সাথে আমিও কাঁদছি.....।
একটু পর তাদেরকে ছেড়ে সেখান থেকে রুমে চলে
আসলাম। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই শুয়ে পড়লাম। আম্মু এসে ডাকতে শুরু করলো। আব্বু দরজা খুলতে বললো। আমি দরজা খুলে দেখি। আব্বু
ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রুমে ঢুকে বেডে বসলো, আমাকে তার পাশে বসিয়ে নিজ হাতে খাঁইয়ে দিলো আব্বু। আম্মু পানির গ্লাস নিয়ে আব্বুর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো চলে যাবো বলেই আম্মুর আর আব্বুর একটু কষ্ট হচ্ছে। কেনোনা তারা আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝেন না। তারা দুইজনিই আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসেন।
এদিকে এরমধ্যে আমার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় চলে
এসেছে। সামনের সপ্তাহে চলে যাবো। নিজেকে একটু গোছাতে ব্যস্ত ছিলাম তাই আমার আর রিয়ার খোঁজ
নেওয়া হয় নি।
তবে ওর অনেক গুলো পরীক্ষাই শেষ হয়েছে। তবে পরীক্ষা গুলো কেন জানি ভালো হয় নি। তাই চলে যাওয়ার আগে যদি একটু দেখা করা যেতো। কিন্তু ওর পরীক্ষা তাই ওকে ডিস্টার্ব করিনি।
আর তাছাড়া ও তো আর আমার সাথে দেখা করতে না করেছিলো তাই আর আমিও ওর সাথে দেখা করিনি.
এভাবে সময় চলার পথে। আস্তে আস্তে আমার অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার দিন চলে এসেছে। নিজেকে খুব একা একা লাগছে। আম্মু-আব্বু আর রিয়ার আম্মু-আব্বুও এসেছেন। আমার যাওয়ার সময় চলে এসেছে দেখে আমি আম্মু কে জড়িয়ে ধরে বললাম :-
--আম্মু আমার জন্য দোয়া করো। আমি যেনো তোমাদের সবাই ইচ্ছে পূরণ করতে পারি। এই বলে কেঁদে দিলাম। আর এদিকে আম্মুও আমাকে
জড়িয়ে ধরে ঢুকরে কেঁদে দিলেন। তারপর বাবা আমাকে বললেন :-
--বাবা টিক মতো খাওয়া-দাওয়া করিস। নিজের
খেয়াল নিস। (আব্বু)
--হুম আব্বু।
এই বলে চোখ মুছে বাবা বলে জড়িয়ে কেঁদে দিলাম। পৃথিবীতে বাবা মানুষটাই হয়তো এমন যাকে
খুব কমই কাঁদতে কম দেখা যায়।
--বাবা আমার জন্য দোয়া করো। আম্মুর আর তোমার
নিজের খেঁয়াল রেখো। (আমি)
--আরে কাঁদছিস কেন বাবা? কাঁদিস না। আমরা
ভালো থাকবো। তুই নিজের যত্ন নিস। আর আমাদের জন্য দূর্চিন্তা করিস না। (আব্বু)
--আচ্ছা বাবা। সময় মতো নিজের ঔষূধ গুলো খেয়ো। তারপর আমি আন্টি আর আঙ্কেল কে বললাম....
--আপনাদের অনেক মিস করবো। আম্মু-আব্বুকে একটু দেখে রাখবেন.?
--আরে বাবক তুমি সে নিয়ে ভেবো না। তুমি ভালো থাকলেই আমাদের ভালোথাকা.। (আঙ্কেল-আন্টি)
--জ্বী আঙ্কেল-আন্টি আমার জন্য দোয়া করবেন? আর রিয়াকে এই জিনিসটা দিবেন।
আন্টির হাতে একটা চিঠি দিলাম রিয়ার কাছ থেকে শেষ বিদায় নিতে। তারপর আব্বু-আম্মুকে নিচু হয়ে
সালাম করে বিদায় নিলাম। পিঁছু ফিরে আঁকাশের
দিকে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলাম। আজ আঁকাশ টা খুব
মেঘলা। হয়তো আমার মনের মতো ওর মনটাও খারাপ....।।
এদিকে রিয়ার আম্মু বাসায় গিয়ে দেখে যে রিয়া কলেজ থেকে ফিরে এসেছে। তাই তিনি রিয়াকে ডেকে আমার দেয়া চিঠিটা রিয়ার হাতে দিলেন। চিঠিটা পেয়ে তারপর রিয়া হাতে চিঠিটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো.......
রিয়া……………
হয়তো ভাববে প্রিয় বলে ডাকিনি কেন?
কারণ তুমি আমার কাছে প্রিয় হলেও। আমি যে তোমার কাছে প্রিয় শব্দটা আর নেই।
রিয়া তুমি হয়তো ভালোই আছো আমায় ছাড়া।
আর আমিও ভালো থাকবো যেমন তোমায় ছাড়া থাকার কথা।
ও হ্যাঁ তোমার জন্য আমার একটা খুশির সংবাদ আছে।
খুশীর সংবাদ এই যে আজ আমি তোমার থেকে অনেক দূরে চলে গেলাম। অনেক দূরে। তোমাকে আর ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করবো না। তোমায় আর আমি জ্বালাবো না। তোমায় অার আমার মতো কারো উপরে বিরক্ত হতে হবে না।
হ্যাঁ আগের মতো আর নিজের কেয়ার করবে কী না জানি না। তবে খুব মিস করবো তোমার বকা গুলো। কিন্তু চাইলেও তো আর শুনতে পারবো না।
কেনোনা আজকে আমি চলে যাচ্ছি তোমার থেকে অনেক দুরে। তুমি তোমার নিজের মতো করে কাউকে খুঁজে নিয়ো।
যে তোমার মনের মতো হবে। আমি হয়তো ছিলাম ভুল ছিলাম আর খুব বাঁজে ছিলাম।
কিন্তু আমার ভালােবাসাটা সত্যি ছিলো। যা তুমি দেখোনি। আমি তোমাকে হয়তো নিজের করে পাই নি। তবে তোমার স্মৃতিগুলো আমার নিজের।
যা দিয়ে আমি আমার সারাটাজীবন কাটিয়ে দিবো। আর কোনদিন আমার এই বিরক্ত কর কণ্ঠটা শুনতে পাবে না তুমি। দোয়া করি তুমি যেন আমার চাইতে ভালো কাউকে পাও।
যে তোমাকে খুব ভালোবাসবে তোমার মতো করে। আমার ভালোবাসাটা না হয় না পাওয়ায় থাক, তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু তোমার কষ্টে যে আমার বুক ফেঁটে যাবে। আমার দেয়া কষ্টগুলোকে জীবনের খারাপ মুহূর্ত
মনে করে ভুলে যেও আমি দূর থেকেই তোমাকে ভালোবাসবো।
তুমি নিজেকে সুখী করো। আর কিছু বললাম না। কেনোনা তুমি আবার আমার উপরে বিরক্ত হবে।
তাই আর বিরক্ত করবো না তোমায়। পারলে ক্ষমা করে দিয়ো এই পাগলটাকে। যে তোমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসতে পারে নি। ভালো থেকো। নতুন কাউকে নিয়ে খুশী থেকো।
আর পারলে এই পাগলটাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দিয়ো। আমি হারিয়ে গেলাম আজ থেকে চিরতরে। ভালো থেকো তুমি। খুব ভালো থেকো।
আমার কাছ থেকে দুরে গিয়ে। কেনোনা আমি তো তোমায় ভালোবাসতে পারলাম না। যাক সে সব কথা।
Bye........
ইতি.........পাগল এবং বিরক্তিকর মানুষটা...হয়তো তোমার/হয়তো বা না.......
এদিকে চিঠিটা পড়তে পড়তে ঝাপসা হয়ে গেলো রিয়ার চোখ। দু'ফোঁটা অশ্রু টুপ করে ঝরে পড়লো। চিঠির ভাজে। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। আজ খুব কাঁদবে সে। কারণ ওর তো খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু একটা কীসের শূন্যতা অনুভব করছে হৃদয়ের গহীন। ওর মনে হচ্ছে কি জেনো একটা ওর কাছ থেকে চিরোতরে
হারিয়ে যাচ্ছে। যেটা সে আর কখনোই ফিরে পাবেনা ।
পর্ব :- ০৩
:- এদিকে চিঠিটা পড়তে পড়তে ঝাপসা হয়ে গেলো রিয়ার চোখ। দু'ফোঁটা অশ্রু টুপ করে ঝরে পড়লো। চিঠির ভাজে। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। আজ খুব কাঁদবে সে। কারণ ওর তো খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু একটা কীসের শূন্যতা অনুভব করছে হৃদয়ের গহীন। ওর মনে হচ্ছে কি জেনো একটা ওর কাছ থেকে চিরোতরে
হারিয়ে যাচ্ছে। যেটা সে আর কখনোই ফিরে পাবেনা।
এভাবেই কেটে যায় আমার ৪ টা বছর। আজ আমি
আমার অস্ট্রেলিয়া থেকে স্টাডি শেষ করে দেশে ফিরলাম।
দেশে এসেই আমার মনে পড়ে গেলো সেই পুরোনো কষ্ট গুলো। মনে পড়ে গেলো সেই সব কথা। যার কারণে
আমি দেশ থেকে কাঁদতে কাঁদতে অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছিলাম। আবারো আমার ওর কথা গুলো মনে পড়তে শুরু করলো। মনে পড়তে লাগলো রিয়ার দেওয়া সেই কষ্ট গুলোর কথা।
আমি যে রিয়াকে ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ওর কথা আমার আর মনে পড়েনি তা কিন্তু না। আমার ওর কথা সেখানে গিয়েও সারাক্ষণ মনে পড়তো। আর আমি ওর কথা ভেবে সারাক্ষণ সেখানে নীরবে কাঁদতাম।
তারপর আমি এসব কথা ভাবতে ভাবতে নিজের বাসায় চলে আসলাম। ও হ্যাঁ আর একটা কথা আমি যে দেশে আসবো সে কথাটা কিন্তু বাসার কাউকে জানাই নি। কারন সবাইকে সারপ্রাইজ দেবো বলে।
তারপর বাসায় এসে আমি আগে দরজার কলিঙ্গ বেলটা চাপলাম। আর আমার বেলটা চাপার কিছুক্ষণ পরেই আম্মু এসে দরজাটা খুললেন। দরজাটা খোলার সাথে সাথে আম্মু আমায় দেখে একদম কিছুক্ষণ শব্দহীন স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
তারপর হঠাৎ দৌড়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে আমায় জড়িয়ে ধরলেন। আর আম্মুর কান্না দেখে আমিও সাথে সাথে কাঁদতে লাগলাম। তারপরে আম্মু আমায় কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন:-
----কাব্য তুই "বাবা' তুই কেমন আছিস হ্যাঁ ...!!
এতোদিন পড়ে কি তোর আমাদের কথা মনে পড়লো বল? জানিস আমি'আর তোর আব্বু প্রতিটা দিন তোর আশায় এই দরজার পথ চেয়ে বসে থাকি শুধু মাত্র তোর আশায়। শুধুমাত্র এইভেবে যে এই বুঝি তুই আজকে বাসায় আসবি। আর আসবি তো আসবি.
আসার আগে আমাদের একটা ফোন করে আসবি না।তাহলে আমি ও তোর আব্বু দুইজন মিলেই এয়ারপোর্টে তোকে আনতে যেতাম।
এই বলেই আবারো আম্মু কাঁদতে শুরু করলেন।
---আরে আরে আম্মু তোমাদের কথা সেখানে সারাক্ষণ মনে পড়তো। ইচ্ছে করতো সেখান থেকে ছুটে চলে আসি তোমার কাছে। কিন্তু আমি চাইলেই তো আর তোমাদের কাছে ছুটে আসতে পারবো না!!
আচ্ছা তুমি কেমন আচ্ছো আম্মু!! আর আব্বু কেমন আছে?
---আমরা সবাই এতোদিন তোকে ছেড়ে ভালো ছিলাম না। কিন্তু এখন সবাই ভালো থাকবো।
কেন না তুই এসে গেছিস না। তাহলে কি আর আমরা সবাই খারাপ থাকতে পারি। তুই তো আমাদের সবার ভালো থাকার ঔষুধ বাবা। আচ্ছা তুই কি বাসার বাইরেই দাড়িয়ে আমার সাথে কথা বলবি!!
নাকি বাসার ভিতরেও আসবি.!!! (আম্মু)
---আমি কোথায় বাইরে দাড়িয়ে থাকার জন্য বসে আছি.! তুমিই তো আমায় বাসার ভিতরে ডুকতে দিচ্ছো না। আর তুমি ডুকতে না দিলে আমি কি করে ভিতরে যাবো বলো.?(আমি)
এই বলেই আমি বাসার ভিতরে ডুকে গেলাম। তারপর নিজের রুমে ঢুকে আবারও নিজের রুমটা কে দেখতে
লাগলাম। পুরো রুমটাই যেমন রেখে গিয়েছিলাম রুমটা ঠিক তেমন টাই আছে। তবে একটা দিকে লক্ষ করে দেখলাম যে আমার রুমের সব কিছু একদম ঠিক-ঠাক ভাবে গোছানো আছে.। কিন্তু কিভাবে আমি তো আমার রুমটা কখনোই এমন গুছিয়ে রাখতাম না.! তাহলে আমার রুমটা কে গুছিয়ে রেখেছে! পরে আবার ভাবলাম 'হয়তো আম্মুই আমার রুমটা গুছিয়ে রেখেছিলেন আমি যাবার পরে। তাই আমি আর বেশি কিছু না ভেবে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায়
নিজের শরীর টাকে এলিয়ে দিলাম।
কেন না আমি ফ্লাইটে জার্নি করে এসে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি। তারপর হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে
বিকেলে আম্মুর ডাকেই আমার ঘুম ভাঙ্গলো। তারপর উঠে আবারও ফ্রেশ হয়ে আমার রুম থেকে বাইরে বের হয়ে এলাম। বাইরে বের হয়ে এসে দেখি বাসায় অনেক মানুষ। পরে আম্মুর কাছে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন যে আমার ফিরে অাসায় তিনি আমাদের সকল কাজীন দেরকে দাওয়াদ করেছেন। তাই বাসায় এতো মানুষ আর সব আত্মীয় স্বজন।
তাই আমি আর কিছু না বলে নিচে চলে এলাম আমার কাজীন দের সাথে কথা বলার জন্য। আর নিচে এসেই তাদের সাথে হ্যানসেক করতে লাগলাম। আর তারাও আমার সাথে পরিচিতো হতে লাগলো। আর আমার ভালো মন্দ জিজ্ঞাস করতে লাগলো। আর অস্ট্রেলিয়া পড়াশুনো কেমন হয়েছে এবং ইত্যাদি.........
সন্ধ্যায় এবং রাতে অনেক মানুষ জন এবং আরো আত্মীয় স্বজন এলেন। আর এরমধ্যে আব্বুও আমি আসার খবর পেয়ে