দ্বিতীয় সন্তান। আমার বড় ভাই আছে নাম হচ্ছে সাইম আহম্মেদ। আমার বাবা হলেন এদেশের টপ বিজনেসম্যান দের একজন। বাবা আর ভাইয়া মিলে আমাদের বিজনেস দেখা শুনা করেন।
আর একটু আগে যিনি আমার ঘুম ভাঙানো তিনি হলেন আমার কলিজার টুকরা আম্মু এবং বেস্ট ফ্রেন্ড।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করতে গেলাম। খাবার টেবিলে বসতেই আম্মু এসে খাবার বেড়ে দিল।আমি আম্মুকে
জিজ্ঞাসা করলামঃ আম্মু ভাইয়া আর আব্বু কে তো দেখতেছি না।
আম্মুঃ তোর আব্বু আর ভাইয়া অফিসে গেছে।আজকে নাকি জরুরী মিটিং আছে তাই সকালে গেছে।
আমিঃ ওহহ।
নাস্তা শেষ করে আম্মুকে বলে কলেজে যাওয়ার জন্য বের হলাম। বাসা থেকে বের হয়ে আমার বন্ধু রাফিকে ফোন দিলাম,,,,
আমিঃহ্যালো, কোথায় আছিস?
রাফিঃ বাসা থেকে বের হয়েছি। তুই কোথায়?
আমিঃ আমি রাস্তায় আছি।
রাফিঃ আচ্ছা ওয়েট কর।
আমিঃ তাড়াতাড়ি আসিস।
এরপর সিফাত কে ফোন দিয়ে আসতে বললাম।
সিফাত রাফি এবং আমি এই তিন জন হলাম বেস্ট ফ্রেন্ড। ফ্রেন্ড বললে ভুল হবে আমরা তিনজন হলাম একেঅপরের ভাইয়ের মতো।
আমাদের তিনজনের মধ্যে যদি কারো সমস্যা হয় তাহলে আমরা তিনজন মিলে সমাধান করি।
এছাড়া আমাদের তিনজনের একটি সংগঠন আছে। যেটার মাধ্যমে গরিব,এতিম, ভিক্ষুক দের সাহায্য করি।
যাইহোক, তিনজন একত্রে হওয়ার পর একটা রিকশা ডাকলাম। রিকশায় তিনজন ধরবেনা। এজন্য সিফাত আমাকে কোলে নিলো।
তাদের তুলনায় আমার ওজন কম হওয়াতে আমি আর না করিনি। আমাদের বাসা থেকে কলেজ বেশি দুরে নয়।
রিকশা করে আসলে আধাঘণ্টা সময়ের মধ্যে আসা যায়।
কলেজের গেটের সামনে রিকশা দাঁড় করালো। আমি নামিয়ে ভাড়া দিলাম। কলেজে ঢুকে দেখলাম বেশ ভালোই কলেজ।
যাজ্ঞে, আমরা এখানে লেখাপড়া করতে এসেছি। কলেজে দেখতে নয়।
তিনজন মিলে ক্লাসে গেলাম।যাইয়ে সামনের একটি বেঞ্চে বসে পড়লাম। আসলে আমার প্রথম বেঞ্চ ছাড়া ভালো লাগেনা।
একটু পর স্যার আসলেন। স্যার এসে সবার সাথে পরিচিত হয়ে আমাদেরও পরিচয় নিলেন।এভাবে প্রতিটা স্যারের সাথে পরিচিত হওয়ার পর ক্লাস থেকে বের হয়ে ক্যান্টিনে গেলাম কিছু খাওয়ার জন্য।অতঃপর তিনজন কলেজ থেকে বাসায় আসলাম।
বাসায় আসার পর,,,,,
#পর্বঃ ২য়
বাসায় এসে গোসল করে যোহরের নামাজ পড়লাম। নামাজ পড়ে লাঞ্চ করে ঘুমিয়ে গেলাম।
সন্ধ্যায় উঠলাম। আমি আসলেই একটা ঘুম পাগল??
ঘুমানোর সময় পাশ থেকে কেউ যদি আমর বউকে নিয়ে চলে যায়, তবুও বলতে পারবোনা।তাই বলে আপনারা যেনো চান্স নিয়েন না।আসে লাভ হবেনা।কারণ, এখনো আমি বিয়ে করিনি ????
যাইহোক, একটু ছাদে গেলাম।তারপর নিচে এসে হালকা নাস্তা করে পড়তে বসলাম।
রাতে পরিবারের সবাই একসাথে ডিনার করলাম। ডিনার শেষে আব্বু আমাকে জিজ্ঞাসা করল,,,
আব্বুঃ প্রথম দিন কেমন কাটলো?
আমিঃ ভালো।
ভাইয়াঃ যাওয়ার সময় অসুবিধা হয়নি তো?
আমিঃ না ভাইয়া।
আব্বুঃ তোমাকে কতো করে বলি গাড়ি ব্যবহার করবে।
আমিঃ না আব্বু ।আমাকে এভাবেই ভালো লাগে।
আব্বুঃ আচ্ছা,,যা ভালো বুঝো।যাও ঘুমিয়ে পড়।
আমিঃ ঠিক আছে।
রুমে এসে একটু ফেসবুক লগইন করলাম।
আসলে আসলে আব্বু আমাকে খুব ভালো বাসে। রিকশা করে যেতে যদি অসুবিধা হয় তাই গাড়ি নিয়ে যাতে বলতেছে।
কি করব বলেন, আমার এসব ভালো লাগে না। সাধারণ ভাবে চলাফেরা করতে পছন্দ করি।
ঘুমিয়ে পড়লাম।ফজরে ওঠে না নামাজ পড়ে আবার ঘুমিয়ে গেলাম।আজকেও আম্মু এসে ডেকে তুলে দিয়ে গেলেন। ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে তিনজন একসাথে কলেজে গেলাম।
গেট দিয়ে ঢুকতে যাবো তখন ধাক্কা খেয়ে পড়ে গেলাম। ওমা আমার সাথে একটা মেয়েও পড়ে আছে। তারমানে এর সাথেই ধাক্কা খেয়েছি।
দেখতে তো মাশাআল্লাহ। ক্রাশ খেলাম।
যাইহোক, মেয়েটি কে তুলে বললামঃ সরি।দেখতে পাইনি।
মেয়েটিঃ ইটস্ ওকে। কোন ইয়ার?
আমিঃ ফাস্ট ইয়ার। আপনি?
মেয়েটিঃ সেকেন্ড ইয়ার। সিনিয়র সম্মান দিবে। বলেই একটা মুচকি হাসি দিয়ে চলে গেল।
আমি তো তার ব্যবহার দেখে মুগ্ধ।মনে করেছিলাম, কয়েকটা চড় দিবে। তা না কর কত সুন্দর করে কথা বলল। আমি আবার ক্রাশ খেলাম। আমি একধানে মেয়েটি র চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছি।
রাফিঃ কি যে মামা কি হয়েছে?
আমিঃ ক্রাশ খাইছি মামা।
সিফাতঃ কস কি মামা। এই রাফি আমাকে চিমটি দেতো। আমি কোনো স্বপ্ন দেখছি না তো।
সিফাতঃ আহহ,,,
আমিঃ কি হলো রে।
সিফাতঃ ঐ শালা তোকে আমি এতো জোরে চিমটি দিতে বললাম।(রাফি কে বললো)
রাফিঃ তুই বলেছিস ধিরে দিতে।
আমিঃ তোরা পারিসও বটে।
রাফিঃ মামা ট্রিট দিবি কখন?
আমিঃ পরে দিবো আগে ক্লাসে চল।
ক্লাস করার পর ক্যান্টিনে তিনজন মিলে নাস্তা করতেছি।
এমন সময়,,,,,
# পর্বঃ ৩য়
ক্লাস করার পরে তিনজন মিলে ক্যান্টিনে গিয়ে নাস্তা করতেছি এমন সময় মেয়েটি মানে আমার ক্রাশ আসলো???
এসে সোজায় আমার পাশে বসলো, আমার হাত পা কাঁপতে শুয়ে করে দিয়েছে।আসলে মেয়েদের প্রতি আমার এলার্জি আছে,, কাছে থাকলেই কেমন জানি ভয় ভয় লাগে???
যাইহোক, মেয়েটি কে আমার পাশে বসতে দেখে রাফি আর সিফাত অন্য টেবিলে বসলো।
আমার হাত কাঁপছে দেখে মেয়েটি বললঃ এই যে,মশাই কাপতেছো কেন???
আমিঃ কই নাতো,,,(সত্যি টা বললে মন সম্মান আর থাকবে না)
মেয়েটিঃ বাই দা ওয়ে,, তোমার নাম কি?
আমিঃ সাহিদ হাসান সাহি। আপনার?
মেয়েটিঃ সামিয়া জাহান।
আমিঃ আহা কি নামরে যেমন চেহারা তেমন নাম।আবার ক্রাশ খেলাম,,(বিড়বিড় করে)
সামিয়াঃ কিছু বললে।
আমিঃ কইইই ন নাতো।
সামিয়াঃ তোমার নাম্বার দেও।
আমিঃহোয়াট,,, আমি কেন আপনার মতো ডাইনিকে নাম্বার দিতে যাবো। আমাকে কি ঐ রকম ছেলে মনে হয়,,।( ভাব নিয়ে)
সামিয়াঃ কি বললি,????
আমিঃকইই কিছু না।এই নিন নাম্বার,০১৭৬৪৪৯****
( এহেরে ভাব নিতে যাইয়ে একটু বেশি রাগাইয়া ফেলেছি,,)
সামিয়াঃ আর শোন কোন মেয়ের সাথে কথা বলবি না এবং চোখ তুলে তাকাবি না।
আমিঃ ঠিক আছে আপু।
সামিয়াঃ আপু বলে ডাকবি না।বুঝলি??
আমিঃ তাহলে কি বলবো।
সামিয়াঃ নাম ধরে ডাকবি।
আমিঃ ঠিক আছে।
সামিয়া কে বিদায় দিয়ে রাফি দের টেবিলে দেখি ওরা দুজন নাই,,
আমি বিল দিতে চাইলে বলল, সামিয়া নাকি দিয়ে গেছে।
ক্যাম্পাসের বকুল গাছের নিচে দেখি ওরা দুজন বসে আছে।
ওদের কাছে যাতেই রাফি বললঃ মামা এতো দেরী হলো কেন?
আমি ওদের কে সব কিছু বললাম।
সিফাতঃ মামা সামিয়া আপি মনে হয় তোকে ভালোবাসে।
আমিঃ তাই যেন হয় মামা দোয়া কর।
ওদের সাথে কিছুক্ষণ আড্ডা দেওয়ার পর বাসায় আসলাম।
রোটিং অনুযায়ী আবার সন্ধ্যায় আম্মু ঘুম থেকে জাগিয়ে দিলো।
ফ্রেশ হয়ে নাস্তা করে একটু ঘুরাঘুরি করতেই আজান দিলো।
নামাজ পড়ে বাসায় এসে পড়তে বসলাম।রাতে ডিনার করে ঘুমাতে যাবো এমন সময় ফোনটা বেজে উঠলো।
দেখি অপরিচিত নাম্বার থেকে ফোন এসেছে। প্রথমে ধরলাম না।পরে আবার দিলো ধরলাম না।
আবার দিলো এবার ধরলাম,,,
আমিঃ আসসালামুয়ালাইকুম।কে বলতেছেন?
অপরিচিতঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। আমি সামিয়া।
আমিঃ এতো রাতে কি জন্য ফোন দিয়েছেন?
সামিয়াঃ কথা বলার জন্য।
আমিঃ আজব তো, আমি এই প্রশ্ন করলাম,।
সামিয়াঃ ওসব বাদ দাও। ডিনার করেছো?
আমিঃ হ্যাঁ। আপনি করেছেন?
সামিয়াঃ হুমম।
এভাবে কিছুক্ষণ কথা বলে রাখে দিলাম।
পরের দিন ক্যাম্পাসে বসে তিনজন মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম এমন সময় একটা মেয়ে এসে বললো,,,,,
#পর্বঃ ৪র্থ
তিনজন মিলে আড্ডা দিচ্ছিলাম এমন সময় একটা মেয়ে এসে জিজ্ঞাসা করলোঃ ভাইয়া অনার্স ফার্স্ট ইয়ারের রুম কোনটি?
আমিঃ তুমি নতুন নাকি?
মেয়েটিঃ হ্যাঁ।
রাফিঃ আমরাও সেম ইয়ার।
মেয়েটিঃ তাহলে কি আমি আপনাদের বন্ধু হতে পারি।না মানে আমি এখানে নতুন তেমন কেউ পরিচিত নেই।
আমিঃ ঠিক আছে। কিন্তু তুই করে বলতে হবে।
মেয়েটিঃ আচ্ছা।
আমিঃ তোর নাম কি?
মেয়েটিঃ মিম। তোদের?
আমিঃ আমি সাহিদ হাসান সাহি।
রাফিঃ আমি রাফি।
সিফাতঃ আমি সিফাত।
মিমঃ ক্লাসে যাবি না।
আমিঃ হুমম চল।
ক্লাস শেষে বসে থেকে চারজন বসে আড্ডা দিচ্ছিলাম তখন সামিয়া আমার দিকে রাগি ভাবে তাকিয়ে চলে গেল।
আমি তো ভয় পেয়ে গেলাম।
যাইহোক, আড্ডা দিয়ে বাসায় গেলাম। রাতে ঘুমানোর সময় ফেসবুক লগইন করলাম।
একটু পরে সামিয়া ফোন দিলো,,
আমিঃ আসসালামুয়ালাইকুম।আপু কেমন আছেন?
সামিয়াঃ ওয়ালাইকুমুস সালাম। ওই আমি তোর কোন কালের আপু লাগি। আমাকে আর আপু ডাকি না???? ( একদম রেগে)
আমিঃ ঠিক আছে।কি করতেছেন?
সামিয়াঃ বয়ফ্রেন্ডের সাথে কথা বলতেছি (অস্পষ্ট কর)
আমিঃ কীছু বললেন?
সামিয়াঃ কিছু না। ডিনার করেছো?
আমিঃ হ্যাঁ। আপনি করেছেন?
সামিয়াঃ হ্যাঁ।
কথা বলার পর ঘুমিয়ে গেলাম। সকালে ঘুম থেকে উঠে কলেজে গেলাম।
দেখি ওরা তিনজন বসে আছে। আমিও মিমের পাশে বসলাম।
চারজন মিলে কথা বলতেছি আর হাসাহাসি করতেছি।
ঠিক তখনি,কোথা থেকে সামিয়া এসে আমার শার্টের কলার ধরে টেনে নির্জনে নিয়ে গেল। আমি স্পষ্ট দেখতে পেলাম রাগে সামিয়ার চোখ লাল হয়ে গেছে।
সামিয়াঃ বল তোর এতো কেন মেয়ের সঙ্গে কথা।কই আমার সাথে তো হেঁসে হেঁসে কথা বলিস না???
আমিঃ আপনি আমার কে যে আপনার সাথে কথা বলতে হবে।
সামিয়ার মুখ নিমিষেই মলিন হয়ে গেল।
সামিয়াঃ তুমি কি কিছুই বোঝ না।( করুন সুরে)
আমিঃ না বললে কী ভাবে বুঝবো।
সামিয়াঃ দেখো, আমি তোমাকে আমি স্পষ্ট ভাবে বলতেছি, তোমাকে অন্য কোন মেয়ের পাশে দেখলে আমার সহ্য হয়না। তোমাকে অন্য মেয়ের পাশে দেখলে আমার মনে হারানোর ভয় থাকে। এসবের কারণ কি জানো? কারণ টা হলো, আমি তোমাকে ভালবাসি। ( এক নিঃশ্বাসে)
আমিঃ এতো দেখছি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি ???।,(মনে মনে)
আমিঃ কবে থেকে আমাকে ভালবাসেন?
সামিয়াঃ মনে আছে, একদিন তুমি একটা এতিম খানায় গিয়েছিলে বাচ্চাদের খাবার আর পোশাক দিতে। আমি কোন সেখানে গিয়েছিলাম।
তোমার এই কাজ আমার খুবই ভালো লাগে।তারপর ম্যানেজারের কাছে থেকে জানতে পারি চুমু এখানে নিয়মিত আসো।তখন থেকেই তোমাকে নিয়ে ভাবতে থাকি।
তার কয়েক দিন পরে তোমাকে দেখি, একটা ভিক্ষুকে রেস্টুরেন্টে নিয়ে যাইয়ে লাঞ্চ করাতে। তারপর থেকে তোমার প্রতি আমার ভাবনা কে আরো গভীর করে তুলেছে।আর আস্তে আস্তে এই ভাবনা টাই ভালোবাসা য় পরিণত হয়েছে।আর যখন জানতে পারলাম যে এই কলেজেই তুমি ভর্তি হয়েছো।তখন,,,
# পর্বঃ ৫ম
সামিয়াঃ আমি যখন জানতে পারলাম তুমি এই কলেজেই ভর্তি হয়েছো,তখন যে আমি কি পরিমাণ খুশি হয়েছিলাম তা তোমাকে বোঝাতে পারবোনা। প্লিজ তুমি আমাকে ফিরিয়ে দিয়ো না।( লক্ষ্য করলাম সামিয়ার চোখের কোনে পানি এসেছে)
আমি ওর চোখের পানি মুছে দিয়ে বললামঃ আমিও যে ভালোবাসি আমার সিনিয়র ক্রাশকে।
সামিয়াঃ সত্যি।আই লাভ ইউ।
বলেই জড়িয়ে ধরলো।
আমিও জড়িয়ে ধরে বললামঃ আই লাভ ইউ টু।
সামিয়া জড়িয়ে ধরে কান্না করতেছে।
আমিঃ এই পাগলি কান্না করতেছেন কেন?
সামিয়াঃ কখনো ছেড়ে যাবে না তো।
আমিঃ যাবো না।আল্লাহ ছাড়া কেউ আমাদের আলাদা করতে পারবে না।
দুজন জড়িয়ে ধরে কথা বলতেছি। হঠাৎ করে কে যেন গলা ঝাড়া দিলো। পিছনে ফিরে দেখি রাফি আর সিফাত দাঁড়িয়ে আছে।
আমি আর সামিয়া ওদের দেখে সাথে সাথে ছেড়ে দিয়ে মাথা নিচু করে আছি।
রাফিঃ হয়েছে থাক আপনাকে আর লজ্জা পেতে হবেনা স্যার।
সিফাতঃ আমরা তোর জন্য কতো চিন্তা করেছিলাম।আর তুই এখানে। কর মামা কর সমস্যা নেই।
রাফিঃ ভাবি আমাদের বন্ধু টাকে দেখে রাখেন।
সামিয়াঃ সেটা আর তোমাদের বলতে হবে না।
সিফাতঃ আচ্ছা। কিরে দোস্ত তুই আজকে ক্লাস করবি।
আমিঃ না আজকে আর ক্লাস করব না। ঘুরতে যাব।
রাফি ও সিফাতঃ ঠিক আছে যা।
ওরা চলে গেল।আর আমি সামিয়া কে বললামঃ চলেন পার্কে যাই।
সামিয়াঃ এখনো কি আপনি করে বলবে? তুমি করে বলবা।
আমিঃ ঠিক আছে চলো।
সামিয়া কে নিয়ে একটা পার্কে আসলাম। কোনদিন কোনো মেয়ে সাথে আসিনি। নিজেকে কেমন কেমন মনে হচ্ছে।
যাইহোক, সামিয়া কে নিয়ে অনেক ঘুরলাম।ওকে ওর বাসায় রেখে আমিও আমার বাসায় আসলাম।
রাতে শুয়ে আছি তখন সামিয়া ফোন দিলো।ওর সাথে কথা বলে ঘুমিয়ে গেলাম।
লেখাপড়া করা, আড্ডা দেওয়া, সামিয়া কে ঘোরাফেরা করা এভাবে চলে গেল একবছর। সামিয়া আর আমার ভালোবাসা টা অনেক গভীর হয়েছে।
আমাদের সম্পর্ক টা আমাদের বাবা মা জেনে গেছে।
আগামীকাল থেকে আমার ইয়ার চেন্জ পরিক্ষা।
আল্লাহর রহমতে এক একে সব পরিক্ষা ভালো ভাবেই দিয়েছি।
আজকে আমার রেজাল্ট দিয়েছে। আমি ফার্স্ট হয়েছি।
আর সামিয়া ওদের ডিপার্টমেন্টে ফার্স্ট হয়েছে।
এজন্য আমাদের বাসায় সকলেই খুশি। তাদের কথা যাইহোক, লেখাপড়া ঠিকমতো হচ্ছে তো।
আরেকটা কথা, আমাদের রিলেশনের কথা কলেজের কেউ জানে না। শুধু আমার আর সামিয়ার বান্ধুরা জানে।
আজকে আমার কলেজে আসতে একটু দেরি হয়ে গেছে।
কলেজে ঢুকতেই আমার মাথায় রক্ত উঠে গেলো। কেননা, কলেজের মাঠে,,,,,
#পর্বঃ ৬ষ্ঠ
কলেজে ঢুকতেই আমার মাথায় রক্ত উঠে গেল। কেননা,রিপন সামিয়া কে বাজে কথা বলতেছে আর ওড়না নিয়ে টানাটানি করতেছে।
রিপন হলো এই কলেজের সবচাইতে বেশি বখাটে টাইপের ছেলে।এর আগে আমরা রিপনকে এসব কাজ থেকে দূরে থাকার জন্য সতর্ক করেছি।
যাইহোক, আমি সিফাত কে আমাদের সিক্রেট স্থান থেকে হকিস্টিক গুলো নিয়ে আসতে বললাম।
আমি দ্রুত সামিয়ার কাছে গেলাম। আমাকে দেখে রিপন বলতে লাগলোঃ দেখ সাহিদ তুই আমাদের কাজে বাঁধা দিস না। প্রয়োজনে তুইও আমাদের সাথে ইনজয় করতে পারিস।
রিপনের কথা শুনে রক্ত টগবগ করতে শুরু করলো। সামিয়া কে ওর বান্ধবীদের কাছে রেখে এসে রিপনকে আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে এলোপাথাড়ি মারতে শুরু করলাম।
আমি রিপনকে মারতেছি আর ঐদিকে রাফি, সিফাত আরো কয়েকজন মিলে রিপনের বন্ধুদের মারতেছে।
আমাদের কাছে হকিস্টিক থাকায় ওরা আমাদের সাথে পেরে উঠতে পারে নি।
আমি রিপনকে মারতে মারতে ওর মুখ দিয়ে রক্ত বের করে দিয়েছি।
রাফি আর সিফাত এসে আমাকে রিপনের কিছু থেকে সরে নিয়ে গেল আর রিপনকে হাসপাতালে ভর্তি করে দিলো।
আমি আর ক্লাস করলাম না। বাসায় চলে আসলাম।
বাসায় আসার পর আম্মু জিজ্ঞাসা করলঃ কি হয়েছে?
আমি আম্মুকে সব বলে দিলাম। আম্মু জানে যে আমি কোন অন্যায় সহ্য করতে পারিনা।
বিকেলে বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিলাম। পরদিন সকালে কলেজে গিয়ে জানতে পারলাম যে রিপন অনেক অসুস্থ।
আসলে রিপনের বাবা এই কলেজের সভাপতি হওয়াই তার ছেলে কে মারার জন্য আজকে আমাদের বিচার হবে। হলরুমে বিচার শুরু হলো,,সকল ছাত্র-ছাত্রী রিপনের বিরুদ্ধে অভিযোগ করতেছে।কারণ,সকল ছাত্র-ছাত্রী রিপনের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে গেছে। যাইহোক, রিপনের জন্য শাস্তি তেমন দেয়নি। শুধু 50 হাজার টাকা জরিমানা করেছে।
আজকে ক্লাস শেষে সামিয়া কে নিয়ে ঘুরতে বের হয়েছি। ঘোরাফেরা করে বাসায় আসলাম।
এভাবে কেটে গেল 15 দিন। আজকে কলেজের ক্যাম্পাসে বসে আছি এমন সময় একটি মেয়ে এসে বললোঃ আমি। কি আপনাদের ফ্রেন্ড হতে পারি।
আমিঃ কোন ইয়ার?
মেয়েটিঃ অনার্স ফার্স্ট ইয়ার।
রাফিঃ জুনিয়র।
মেয়েটিঃ সমস্যা নেই। ভাইয়া বলে ডাকবো।
আমিঃ নাম কি তোমার?
মেয়েটিঃ রিপা।
আমিঃ বন্ধু হতে পারবোনা।তবে ভাইবোন হিসেবে থাকতে পারি।
রিপাঃ সমস্যা নেই।আপু আপনার নাম কি?
(মিমকে বললো)
মিমঃ আমার নাম মিম।
সবাই মিলে আড্ডা দিলাম।
ক্লাস শেষে বাসায় আসলাম। লাঞ্চ করার সময় বাবু বললঃ সাহিদ সামিয়া মামনি কে নিয়ে একদিন।
আমিঃ ঠিক আছে বাবা।
লেখাপড়া করা, আড্ডা দেওয়া এভাবে চলে গেল আরো তিন মাস। রিপার সাথে আমাদের সম্পর্ক ভাই বোনের মতো।
একদিন রাতে রুমে বসে আছি রাত প্রায় আটটা বাজে।
বসে থেকে ফোন টিপতেছি।
মনে হলো কে যেন রুমে ঢুকেছে।দেখি রিপা।
আমিঃ রিপা তুমি এখানে?
এরপর রিপা যা করলো,,,,,
# পর্বঃ ৭ম
রিপা কে রুমে ঢুকতে দেখে আমি অবাক হয়ে গেলাম। কেননা, রিপা আসবে একথা সে আমাকে আগে বলেনি। তারপরেও এই সময়ে আসাটা কেমন জানি সন্দেহ হচ্ছে।
রিপা কে প্রশ্ন করলামঃ রিপা তুমি এখানে?
রিপা মুচকি হেসে বললোঃ আমি না আসলে কে আসবে মিস্টার সাহিদ হাসান সাহি।
আমিঃ মমমানে,,( অবাক হয়ে)
রিপাঃ মানে টা নাহয় একটু পরেই জানতে পারবে।আগে হিসাব টা মিটিয়ে নেই।
আমিঃ কিসের হিসাবের কথা তুমি বলতেছো,,(অবাক হয়ে)
রিপাঃ মনে আছে তোমার আজ থেকে 15 দিন আগে তুমি আমার ভাইকে মেরে ছিলে।
আমার ভাই এখনও বিছানায় পড়ে রয়েছে। তখন থেকে আমি প্রতিজ্ঞা করেছিলাম যে করেই হোক আমি এটার প্রতিশোধ নেব।
তারপর থেকে তোমার সাথে বন্ধুত্ব করতে চেয়েছিলাম কিন্তু তুমি করোনি। তুমি বলেছিলে ভাই বোন থাকতে আমিও রাজি হয়ে গেছিলাম।
শুধুমাত্র আমার প্রতিশোধ নেওয়ার জন্য।
একথা বলেই রিপা দরজা লাগিয়ে দিয়ে নিজের জামা টেনে ছিড়তে শুরু করল আর চিৎকার করতে লাগলো। আমি শুধু নির্বাক দর্শকের মত
দেখতেছি। রিপার কাহিনী দেখে আমি বাকরুদ্ধ হয়ে গেলাম। রিপার শীৎকার শুনে বাবা বলতেছেঃ কি হয়েছে মা দরজা খোলো।
রিপা দরজা খুলে সবাই তার বাবাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতেছে আর বলতেছে বাবা তোমরা না আসলে সেহেতু আমার সাথে,,,,, বলে কান্না শুরু করে দিল।
রিপার বাবার পিছনে দেখি মা বাবা, ভাইয়া আর ভাবী দাঁড়িয়ে আছে।
বাবার কোনো কথা না বলে সোজা এসে আমাকে ঠাস ঠাস করে দুইটা চড় মারল।
আমি বললামঃ আব্বু বিশ্বাস করো,,,,
আব্বুঃ ঠাসস ঠাসস এই মুখ দিয়ে