সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করার চেয়ে বরং নিজেকে খুশি রাখার চেষ্টা করো। তাহলে তুমি দিনশেষে ভালো থাকতে পারবে। কারণ হাজার বার চেষ্টা করলেও তুমি সবাইকে খুশি করতে পারবে না সবাইকে খুশি রাখতে পারবেনা। সবাইকে খুশি রাখার বারবার ব্যর্থ প্রচেষ্টা একসময় তোমাকে হতাশ করে তুলবে বিষণ্ণতায় বিষিয়ে তুলবে জীবন।
কিন্তু তুমি চাইলে অল্পতেই নিজেকে খুশি করতে পারো নিজেকে খুশি রাখতে পারো। তুমি মানুষের জন্য সবসময় কল্যাণ কামনা করো। তুমি নিজের স্বার্থ অনুযায়ী মানুষের জন্য কাজ করো। কিন্তু সবাইকে খুশি করতে যেও না। মানুষকে খুশি করা আর খুশি রাখার মত কঠিন কাজ পৃথিবীতে সম্ভবত আর দ্বিতীয় টি নেই।
এই পৃথিবীতে মানুষের সবচেয়ে বড় সীমাবদ্ধতা হলো একজন মানুষ কখনো সবার প্রিয় হয়ে উঠতে পারে না। যেটা পারেন নি স্বয়ং পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ মানব হযরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু ইসলাম। তার চারপাশের এই সবাই তাকে রাসুল হিসেবে মেনে নিতে পারেনি। এমনকি তাকে হত্যা করারও ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল।
প্রিয় হওয়াটা সম্পূর্ণ শ্রদ্ধা ভালোবাসা আর বিশ্বাসের মাত্রার ওপর নির্ভরশীল। তাই কারো প্রিয় হওয়ার চেষ্টা করার চেয়ে প্রিয় কাজ করা শ্রেয়। আমি কখনো সবার প্রিয় হতে চাইনি। এই সংক্ষিপ্ত জীবনের সবার প্রিয় হয়ে ওঠাটা কখনো সম্ভবও নয়। তাই আমার প্রতি কেউ বিরাট ভাজন হলে কিংবা অসন্তুষ্ট হলে আমাকে খুব একটা ভাবায় না। কেউ কেউ আমার প্রতি অসন্তুষ্ট হলে বা আমার প্রতি বিদ্বেষ পোষণ করলেও আমি খুব একটা বিচলিত হই না। কারণ আমি ভালো করেই জানি একজন ব্যক্তির পক্ষে সবার মন জুগিয়ে চল আবার সবাইকে খুশি রাখা সম্ভবপর নয়। সবাইকে খুশি রাখার চেষ্টা করাই মানুষ নিজে অসুখী হওয়ার মূল কারণ। তাই কারো প্রিয় হওয়ার জন্য নিজেকে কষ্ট দিও না। তুমি যার প্রিয় হওয়ার জন্য কষ্ট করছ সেই প্রিয় মানুষটি একদিন আরও বেশি কষ্ট দিয়ে তোমাকে ছেড়ে অন্য কারোর প্রিয় হবে। তাই কারো প্রিয় হওয়ার জন্য কষ্ট না করে বরং তোমাকে প্রিয় হিসেবে পাওয়ার জন্য কারো যেন কষ্ট করতে না হয় সেভাবে নিজেকে গড়ে তোল। আবার কষ্ট করে কিংবা প্রমাণ দিয়ে কারও সত্যিকারের প্রিয় হওয়া যায় না।
সফল হতে চাইলে আগে নিজের কাজের দিকে ও লক্ষের দিকে নজর দিতে হবে অন্যের খুশি হওয়া খুশি হওয়া দিকে নয়। সফল হতে গেলে সবাইকে পাশে পাওয়া লাগে না কিংবা সবাইকে পাশে পাওয়ার প্রয়োজন নেই। কেবল নিজের স্বপ্ন পূরণের প্রবল ইচ্ছা শক্তি আর পরিশ্রম করার সুদৃঢ় ধৈর্য শক্তি সফলতা অর্জনের জন্য যথেষ্ট। তাই স্বপ্ন বাস্তবায়নের পথে কাউকে পাশে পাওয়া না গেলে হতা সবার কিংবা স্বপ্নকে পরিহার করার কোন মানে নেই।
তুমি যখন কোন ভালো কিছু করতে চাইবে বা ভালো কাজ করবে তখন তুমি সবাইকে পাশে পাবে না। ভালো কাজ করতে গেলে সবাই তোমাকে উৎসাহ দেবে অনুপ্রেরণা জাগাবে এমনটিও ভাববে না। কোন ব্যক্তি যখন তার স্বপ্ন পূরণে অগ্রসর হয় তখন ব্যক্তিকে নিজের বেশি কাজ করতে হয়। এই সময় কেউ কাজে সাহায্য করবে আবার কেউ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে। কেউ উৎসাহ দেবে কেউ নিরাশ করবে।
তবে সাহায্যকারীর চেয়ে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টিকারী এবং উৎসাহ প্রদানকারীর চেয়ে নিরাশকারীর সংখ্যাই বেশি হতে পারে। তাই বলে তুমি হতাশ হয়ো না কিংবা নিজের স্বপ্ন থেকে বিচ্যুত হয়ো না বরং স্বপ্ন পূরণের জন্য নিজেকে দৃঢ় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে কিছু মানুষকে এড়িয়ে চলাই ভালো। এতে করে স্বপ্ন পূরণ করার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়া এবং স্বপ্ন পূরণ করাটা সহজ হয়ে যায়।
স্বপ্নকে ছুঁতে চাইলে কিছু মানুষকে এড়িয়ে চলো
তুমি যাদের বন্ধু ভাবো কিংবা আপনজন মনে করো তাদের কেউ যদি তোমার দুর্বলতা নিয়ে মজা করে সুযোগ পেলে অন্যের সামনে তোমাকে নিয়ে ঠাট্টা বিদ্রুপ করে আনন্দ পায় বা অন্য কেউ ঠাট্টা বিদ্রুপ বা অপমান করলে তোমার জন্য ব্যতীত না হয় তাহলে সে আর যাই হোক তোমার প্রকৃত বন্ধু কিংবা শুভকাঙ্ক্ষী হতে পারেনা। নিশ্চিত ভাবে ধরে নিতে পারো প্রয়োজনের সময় বা বিপদে পড়লে তুমি তাকে কাছে পাবে না তাই এসব মানুষের সঙ্গে দূরত্ব বজায় রেখে চলাটাই শ্রেয়। একজন বন্ধু কখনো আরেকজন বন্ধুকে অন্য মানুষের সামনে হেয় প্রতিপন্ন করতে পারে না তার যদি কোন ভুল ত্রুটি থাকেও সে সেটা অন্যের অগোচরে বলবে শুধরে নিতে লজ্জা দিতে নয়।
এইসব মানুষকে এড়িয়ে চলো-
যেসব বন্ধু বা সহপাঠী পড়ার সময় বলে আরে এত পরে কি হবে চল ঘুরে আসি পড়ার অনেক সময় পাবি।
এসব বন্ধুকে এগিয়ে চলার চেষ্টা করব।