বিশ্বের দেশে দেশে ধুমপাইদের সংখ্যা খুব বেড়ে গেছে। ধূমপান আমাদের দেশে সর্বদায় কু অভ্যাস বলে নিন্দিত হলেও এখনো ধূমপাইদের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে। আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের মতে আমাদের শরীরের অনেক রোগের মোড়। ধূমপানের কারণে অধম পাইরা ও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। প্রেমের কামরায় বাসে বা কোন যাত্রী বিশ্রাম কারে ধূমপায়ীদের বিড়ি সিগারেটের ধোঁয়া পরিবেশ হর হামেশাই দূষিত করে। ধূমপান না করলেও আদম পাই শিশু বৃদ্ধ নারী সহ অনেকেই তামাকের তীব্র বিষক্রিয়া আক্রান্ত হয়।
শৈশব কৈশোর কাল থেকেই ধূমপানের কু অভ্যাস গড়ে ওঠে। এতে কোন উপকার নেই শুধু ক্ষতি হয় । না না কারণে শিশু কিশোরদের মধ্যে ধূমপানের গু অভ্যাস গড়ে ওঠে। শিশুরা খুব কৌতুহলী। তারা সব কিছুরই স্বাদ গ্রহণ করতে চায়। হাতের কাছে যা পায় তাই ইনক্রি এর সাহায্যে উপভোগ করতে চাই। বড়দের দেখাদেখি ছোটরা ধূমপান করতে শেখে। নিছক কি আগের বয়সেও ধূমপান করে কেউ কেউ। নেশায় পরিনত হলে এই কু অভ্যাস কেউ সহজে ছাড়তে পারে না। দুষ্ট বন্ধু ও ধূমপাই র সংস স্বর্গে থাকলে ধূমপানের অভ্যাস গড়ে ওঠে। ছোটরা খুব অনুসরণ প্রিয়। তাই দর্শনীয় বিজ্ঞাপনে রঙিন নেশার ভাবভঙ্গি দেখে ছোটরা সিগ্রেট পাইপ ইত্যাদি টানতে চাই। সিনেমায় টিভি পর্দায় পত্রিকায় রাস্তার বিজ্ঞাপন বোর্ডে তামাক কোম্পানিগুলো চমকপ্রদ ভাষায় ধূমপানের গুণ ভাববঙ্গী ব্যক্তিত্বের মহিমা প্রচার করে। ছোটরা সহজেই এতে ধরা দেয়। বাড়িতে সিক্রেট ও দিয়া সোনাই সহজলভ্য হলে কেউ আর ফেরাতে পারে না তাদের।
নারায়ণ জাতীয় তামাক দিয়ে প্রস্তুত হয় সিকগ্রেট বৃ ইত্যাদি। তামাকের সঙ্গে সুগন্ধি রাসায়নিক দ্রব্য মেশানো হয়। কেউ কেউ হুক্কা পায় ব্যবহার করে ধূমপান করে থাকে। যেভাবে পান করুক ধূমপানের ফলে শরীরের ক্ষতি হবেই। তামাকে থাকে নিকোটিন তামাক উগ্র বিষ। ধূমপানে তাই নিকোটিন 20 গ্রহণ করা হয়। প্রতিটি সিগারেট বা বিড়িতে ৫ ধরনের ৫ থেকে ৬ মিনিট আয়ু কমে যায়। ধূমপানে নানা রূপ-দুর আরোগ্য ব্যাধি দেখা দেয়। কোন কোন ব্যাধি অতি দ্রুত মৃত্যু আনে। ধূমপানের ফলে নেশাগ্রস্ত ভাব সৃষ্টি হয়। মস্তিষ্ক হয় প্রায় অচল। এই অচলাবস্থার জন্য মস্তিষ্কে কোনো চিন্তা চালিত হয় না বা কোন প্রশ্নের সঠিক মীমাংসা আসে না। তাৎক্ষণিক যা আসে তা খুবই হট কারী সিদ্ধান্ত। দেহে মনে ব্যক্তিত্বের ও সারা জীবনে একজন ধূমপায় খুবই ক্ষতিগ্রস্ত হয়। অর্থহীন সঙ্গে ঘটে স্বাস্থ্যহানি, যার পরিণাম মৃত্যু।
যেভাবে ধূমপান করা হোক অনিবার্য বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেবেই। প্রফেসর ডক্টর নুরুল ইসলাম বলেন ধূমপানের কারণে আপাদমস্তক মানবদেহে প্রতিটি অঙ্গে কুফল দেখা দেয়। ধূমপানের অনেক বিচিত্র ধরনের রোগ হতে পারে। তার মধ্যে বিশেষ একটা রোগ হচ্ছে খুবই পরিচিত ক্যান্সার। ধূমপানের ফলে ফুসফুসের ক্ষতি হয় সবচেয়ে বেশি আর সেটা থেকেই ক্যান্সারের সৃষ্টি হয়। ধূমপানের বিষক্রিয়া প্রথমে ফুসফুস ও করে রক্তের সঙ্গে মিশে শরীরের নানা জায়গায় ছড়িয়ে যায়। ফলে দেখা দেয় যক্ষা ব্রংকাইটিস দন্ত ক্ষয় ক্ষুধামান্দ্য গ্যাস্ট্রিক আলসার হৃদরোগ মাথা ঘোরা এমনকি মৃত্যু দুধ ক্যান্সার। চোখের দৃষ্টি পর্যন্ত নষ্ট এবং দাঁত ইত্যাদির মারাত্মক ক্ষতি করে থাকে ধূমপান। ডক্টর নুরুল ইসলাম বলেন মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণের অন্যতম কারণ হচ্ছে ধূমপান। এ কু অভ্যাস হৃদপিন্ডে রক্ত সঞ্চালনে ও বাধা সৃষ্টি করে থাকে।
ধূমপান যে বিষোবান আর বিষপানের অর্থ যে মৃত্যু তা বুঝিয়ে দেওয়া প্রয়োজন। সমাজে ধূমপানের বিরুদ্ধে সচেতন প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ গড়ে তোলা উচিত। আমাদের দেশের মহিলারা ব্যতিক্রমবাদী ধূমপান করেন না। মা বোন স্ত্রী হিসেবে ধূমপানের বিরুদ্ধে তারাযোগ্য ভূমিকা পালন করতে পারেন। জাতীয় প্রচার মাধ্যমের ধূমপান বিরোধী প্রচার অব্যাহত রাখা বিড়ি সিগারেটের প্রকাশ্য বিজ্ঞাপন প্রচারে নিষেধাজ্ঞা জারি এবং সিগরেটের গায়ে বিষপানের কথাটি লিখতে বাধ্য করা কর্তব্য। ধূমপানমুক্ত এলাকার গঠন ও ধূমপানহীন দিবস এবং ধূমপানহীন সপ্তাহ পালন করা উচিত। ধূমপানের বদ অভ্যাস ছাড়ানোর জন্য প্রতিষেধক আবিষ্কার করাও জরুরী। বড়রা ইচ্ছা শক্তি ও প্রতিজ্ঞা পূর্বক ধূমপান ত্যাগ করতে পারেন। নেশাগ্রস্ত ও ছোটদের কু অভ্যাস ছাড়াবার ব্যবস্থা করতে হবে।
এ বিষয়ে সরকারেরও করণীয় আছে। বাংলাদেশ সরকার ধূমপান বিরোধী আইন পাস করেছে। এই আইনটি কঠোরভাবে প্রয়োগ করলে ধূমপাই এর সংখ্যা কমবে।
মানুষের অসাধ্য কিছুই নেই। নেশা মুক্ত হবার পরিবেশ ও উৎসাহ সৃষ্টি হলে ধূমপান কমতে এমনকি দূরীভূত হতে পারে। ধূমপান মানে আত্মহত্যা এটা বুঝতে পারলে কেউ ধূমপান করবে না। জাতিকে ধূমপানমুক্ত করতে হলে প্রয়োজন সচেতনতা বৃদ্ধি ও সামাজিক দায়িত্ববোধের জাগরণ।