আমার মেডিকেলের সিনিয়র ডাক্তার ডা.জামান অ্যালেক্স।তিনি একবার তার চিকিৎসা জীবনের একটি মজার অভিজ্ঞতা আমার সাথে শেয়ার করেন। তার সেই অভিজ্ঞতাটি আমি নিচে তার জবানিতে তুলে দিলাম।
আমার সামনে বসা অস্থির চিত্তের যুবক বেশ কয়েকবার খুকখুক করে কাশলেন। এই টাইপের কাশি আসলে কোন কাশি না, কোন গোপন কথা শুরু করার এটা হলো পূর্বসংকেত। আমি গোপন রোগ শোনার মানসিক প্রস্তুতি নিলাম...
যুবকটি তার গোপন সমস্যা প্রকাশ করলেন। তার বিচি নাকি দিনকে দিন ছোট হয়ে যাচ্ছে। এ নিয়ে তিনি ও তার স্ত্রী খুবই উদ্বিগ্ন...
রোগীর ভাষায় যেটা 'ছোট বিচি', আমার কাছে সেটার মেডিকেল টার্ম Testicular atrophy. এর পাঁচটা কারণ জানি, বিড়বিড় করে সেগুলো মনে করার চেষ্টা করলামঃ Previous trauma or mumps orchitis, CLD, Klinefelter, Myotonic dystrophy আর Kennedy syndrome...আপনারা কতটুকু বুঝছেন জানি না, তবে আমি আমার বুঝ অনুযায়ী শর্টকাট হিস্ট্রি নিয়ে হাতে গ্লাভস্ পরে এক্সামিন করা শুরু করলাম...
আমাকে হতাশ হতে হলো। রোগীর Testis ঠিকই আছে, বাম সাইডেরটা একটু ছোট-যেটা স্বাভাবিক। কোন সমস্যা নেই। কথোপকথন শুরু করলামঃ
--বিচি তো ঠিকই আছে, শুধু শুধু টাকা খরচ করে আমার কাছে আসলেন কেন?
--আমার স্ত্রী তো বললো আমার বিচি নাকি অন্যদের থেকে ছোট...
--মাবুদে এলাহী! আপনার স্ত্রী সেইটা জানলো কেমনে!!
--এ্যা...ইঁয়ে...সেইটা তো আমারও কথা...মাবুদে এলাহী!( যুবক দাঁড়িয়ে গেলেন)
--আরেহ! বসেন বসেন, দাঁড়াইলেন কেন?...
যুবক বসে পড়লেন। পকেট থেকে বানানো পান বের করে উত্তেজিত ভঙ্গিতে সেটা চিবুতে শুরু করলেন। শার্ট-প্যান্ট পড়া কোন লোককে এ বয়সে পান চিবুতে সাধারণত দেখা যায় না...
--স্যার, বউটারে নিয়া বড় বিপদে আছি।খালি আমারে খোঁচা দিয়া কথা কয়...
--ওহ, আপনি কি কাজ করেন?
--একটা গার্মেন্টস্ ফ্যাক্টরীতে কোয়ালিটি কন্ট্রোল করি স্যার...
--বউ কি করে?...
--কিছু করে না স্যার, বাসায় থাকে আর সারাক্ষণ মোবাইল চিপে।খালি কয়-আমি নাকি দূর্বল, বিচিও নাকি ছোট। খুব পেরেশানিতে আছি স্যার(মনক্ষুন্ন হয়ে শেষের কথাগুলো বললেন)...
আমি দেখলাম, এরজন্য আসলে কোন ওষুধ না বরং মানসিক শক্তিটাই বেশী জরুরী। ভাবলাম, একটু সাহস দেই।আমি ভাব ধরে কথাবার্তা শুরু করলামঃ...
--হিটলারের নাম শুনছেন কখনো?...
--হিটলারের নাম শুনবো না! এইটা কি বলেন!পুরা পৃথিবী কাঁপাইলো...
--হিটলারের বিচি ছিলো কিন্তু একটা...
--বলেন কি!সত্য কথা বলতেছেন!( এটা বলতে বলতে উনি আবার উঠে দাঁড়ালেন)
--আরেহ যন্ত্রণা! আমি আপনের সাথে মিথ্যা কথা বলবো কেন! আপনে আমার বেয়াই লাগেন নাকি! দাঁড়াইলেন কেন, বসেন মিয়া...
--হিটলারের বিচি মাত্র একটা!!!...
--(আমি হাই তুলে)জ্বি, একটা। বিশ্বাস না হইলে গুগল করেন, এখন তো আবার নেটের যুগ...
--আমার তো বিশ্বাস হইতেছে না!( 'হইতেছে না' বলতে গিয়ে উনার পানের চিপটির কিছু অংশ আমার গায়ে পড়লো)...
--(আমি পানের চিপটি মুছতে মুছতে) শোনেন মিয়া, হিটলার তার এক বিচি নিয়া পুরা বিশ্ব কাঁপাইলো, আপনেই তো বললেন, আর আপনে সুস্থ দুই ছোট বিচি নিয়া একটা খাঁট কাঁপাইতে পারবেন না?...
উত্তেজনায় যুবক দাঁড়িয়ে গেলেন, বুক সটান করে বললেনঃ
"পারবো না কেন স্যার! একশো বার পারবো..."
শেষ কথাগুলো বলতে গিয়ে তার পানের চিপটি আবার আমার শরীরে লাগলো। টিস্যু নিয়ে সেই পানের চিপটি আমি পরিস্কার করা শুরু করলাম...