গণঅভ্যুত্থানে শেখ হাসিনার সরকার ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও প্রভাবশালী মন্ত্রী-এমপিদের বিরুদ্ধে একাধিক আইনি মামলার সূত্রপাত হয়েছে। অনেককে রিমান্ডে নেয়া হচ্ছে, নেতাকর্মীদের বাড়িঘর ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে হামলা বাড়ছে। এই উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ১৬ বছর ক্ষমতায় থাকার পরও আপাতত কোনো জনসভা থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ।
আওয়ামী লীগের একাধিক শীর্ষ নেতা এ সিদ্ধান্তের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, কোটা সংস্কার ও বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের সহিংসতার সঙ্গে যুক্ত হয়ে দেশের বিভিন্ন স্থানে সাবেক সংসদ সদস্য ও নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হচ্ছে। বিএনপি-জামায়াতের মামলা-হামলার আশঙ্কায় সম্প্রতি ক্ষমতাচ্যুত দলের নেতাকর্মীরা আতঙ্কে রয়েছেন।
আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল বলেন, দল তাদের পরবর্তী পদক্ষেপের কৌশল নির্ধারণে সময় নিচ্ছে। তাদের নেতাকর্মীরা যাতে আর ক্ষতির সম্মুখীন না হয় সেজন্য তারা অভ্যন্তরীণভাবে আলোচনা করছেন। বর্তমান অবনতিশীল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি এবং প্রতিহিংসার রাজনীতি প্রধান উদ্বেগের বিষয়। দলের পক্ষ থেকে সকল নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা, মনোবল বাড়ানো ও আরও ক্ষয়ক্ষতি রোধ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগের সাড়ে ১৬ বছরের শাসনের অবসান ঘটে স্বৈরাচারের অভিযোগে। ছাত্র ও সাধারণ মানুষকে গুলি করা সহ একের পর এক দুর্বল সিদ্ধান্ত সরকারের পতন এবং দলের বর্তমান অনিশ্চিত অবস্থানের দিকে নিয়ে যায়। সর্বস্তরের নেতাকর্মীরা এখন আত্মগোপনে, রাজনৈতিকভাবে দলটি কোণঠাসা। তৃণমূল নেতারা অন্তর্বর্তী সরকার ও বিএনপি-জামায়াতের কর্মকাণ্ড পর্যবেক্ষণে মনোযোগী।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কুমিল্লা মহানগর আওয়ামী লীগের এক নেতা বলেন, দলকে পুনর্গঠনের জন্য কয়েক মাস চুপচাপ থাকতে হবে। বিপ্লব একটি চ্যালেঞ্জিং পরিবেশ তৈরি করেছে, এবং অবিলম্বে প্রতিবিপ্লব প্রচেষ্টার ফলে আরও মামলা এবং আক্রমণ হতে পারে।