জুতোর দুঃখ

এই গল্পটি শেখ সাদীর মুখেই শোনা যাকঃ

একদা ছিল না জুতো চরণযুগলে। অর্থাৎ আমার জুতো নেই। টাকাপয়সাও নেই। টাকা??

এই গল্পটি শেখ সাদীর মুখেই শোনা যাকঃ

 

একদা ছিল না জুতো চরণযুগলে। অর্থাৎ আমার জুতো নেই। টাকাপয়সাও নেই। টাকার অভাবে জুতো কিনতে পারছি না। মনে খুব দুঃখ। অভাবে পড়লে জীবনের চাওয়া-পাওয়া নষ্ট হয়ে যায়।

 

জুতোর দোকানের সামনে দিয়ে যাচ্ছি একদিন। দোকানে থরে থরে সাজানো রঙবেরঙের কত জুতো। কিন্তু আমার কেনার সামর্থ্য নেই।

 

হঠাৎ করেই চোখ পড়ল একজন লোকের দিকে তাকিয়ে দেখি লোকটা রাস্তার ধারে গড়িয়ে গড়িয়ে হাঁটছে। লোকটা খোড়া। তার পা দুখানিই নেই।

 

জুতো নেই বলে আমার দুঃখ হচ্ছে। কিন্তু বেচারার নেই। তার দুঃখ আমার চেয়ে আরো অনেক বেশি। আমি তো তবে ওর চেয়ে অনেক সুখেই আছি।

 

জুতো না-থাকার বেদনা আমি মুহূর্তেই ভুলে গেলাম। কারণ ঐ লোকটার চেয়ে আমার অবস্থা অনেক অনেক ভালো।

 

⇐⇐⇐ ⇒⇒⇒

 

হাসিঠাট্টা

একজন ব্যবসায়ী। খুব বুদ্ধিমান। কিন্তু বেচারা হঠাৎ করে ব্যবসায় বেশকিছু টাকা লোকসান করে ফেলল। কী আর করা! ব্যবসা করতে গেলে লাভ-লোকসান তো থাকবেই।

 

ব্যবসায়ীর একটি মাত্র পুত্র। সে বাবার সঙ্গে ব্যবসা করত। পিতা একদিন পুত্রকে ডেকে বললেন—লোকসান হয়েছে বলে ভেঙে পড়ো না। লোকসানের কথা লোকজনকে বলার কোনো দরকার নেই।

 

পুত্র তো এই শুনে অবাক!

 

কেন বাবা?

 

বুদ্ধিমান ব্যবসায়ী-পিতা তখন বললেন—লোকসানের দুঃখেই আমরা কাতর। লোকে যদি জানতে পারে তবে দুঃখ হবে দ্বিগুণ। 

 

ক্ষতির দুঃখ আছেই, তার ওপরে লোকে জানলে আমাদের নিয়ে হাসিঠাট্টা করবে, অহেতুক উপহাস করবে-সেই দুঃখ সহ্য করা আরো কঠিন হবে।

 

যদিও খুব অন্যায় তবু লোকে অন্যের বিপদ দেখলে আনন্দিত হয়।

 

⇐⇐⇐ ⇒⇒⇒

 

 

বিশ্বাস

গজনীর সুলতান মাহমুদ।

 

খুব বিখ্যাত একজন শাসক, যোদ্ধা এবং বীর। তার একজন সভাসদ ছিলেন। খুবই বিশ্বস্ত। নাম তার হোসেন।

 

প্রায় প্রতিদিনই সুলতানের সঙ্গে কোনো-না-কোনো বিষয় নিয়ে তার শলাপরামর্শ হত। সেসব আলোচনা ছিল খুবই গোপনীয়। একদিন দীর্ঘক্ষণ ধরে আলোচনা চলছে সুলতান ও সভাসদ হোসেনের মধ্যে।

 

আলোচনা শেষে হোসেন বেরিয়ে এলেন বাইরে। কয়েকজন লোক তাকে ঘিরে ঘরল—সুলতানের সঙ্গে আপনার এতক্ষণ কী কী বিষয়ে পরামর্শ হল আমরা জানতে পারি কি?

 

হোসেন একটুক্ষণ তাকিয়ে রইলেন ওদের দিকে। তারপর বললেন-এই বিষয়টা জানার জন্যে সুলতানের সঙ্গেই আপনাদের কথা বলাটা বুদ্ধিমানের কাজ নয় কি?

 

লোকগুলো কিছুক্ষণের জন্যে থমকে গেল। পরে একজন বলল—বুঝতে পেরেছি, আপনি বিষয়টা গোপন রাখতে চাইছেন আমাদের কাছে।

 

হোসেন বললেন—এটা তো পানির মতো সহজ বিষয়। গোপন রাখব বলেই তো সুলতানের আমি এত বিশ্বাসভাজন। আমাকে মেরে ফেললেও আমি সুলতানের বিশ্বাস ভঙ্গ করব না।

 

বিশ্বাস ভঙ্গ করা মহাপাপ।

 

⇐⇐⇐ ⇒⇒⇒

 

 

গুণের আদর


Bablu islam

204 Blog posts

Comments