বণিকদল-… সাইকোহিস্টোরিক অনিবার্যতায় ফাউণ্ডেশনের অর্থনৈতিক নিয়ন্ত্রণ বাড়তে থাকল। সম্পদশালী হয়ে উঠল বণিকরা। এবং সম্পদের হাত ধরে এল ক্ষমতা।…
হোবার ম্যালো যে একজন সাধারণ বণিক হিসাবে তাঁর কর্মজীবন শুরু করেছিলেন সেকথা লোকে প্রায়ই ভুলে যায়। কিন্তু যে কথা তারা কখনোই ভোলে সেটি হচ্ছে, মারা যাবার সময় তিনিই ছিলেন প্রথম বণিক রাজপুত্র।…
–ইনসাইক্লোপীডিয়া গ্যালাকটিকা
.
জোরেন সাট তাঁর সযত্নচর্চিত নখের ডগাগুলো এক করে বলে উঠলেন, ব্যাপারটা বেশ রহস্যজনক। সত্যি বলতে কী- কথাটা কিন্তু গোপনে বলছি- এটা হয়ত আরেকটা সেলডন ক্রাইসিস।
উল্টোদিকে বসা লোকটি তার খাটো স্মিরনীয় জ্যাকেটের পকেট চাপড়ালেন সিগারেটের জন্যে। সেকথা ঠিক বলতে পারব না, সাট। বরাবরই তো দেখে আসছি মেয়র নির্বাচনের সময় এলেই রাজনীতিবিদরা সব সেলডন ক্রাইসিস বলে চেঁচাতে শুরু করে।
ক্ষীণ একটা হাসির রেখা দেখা দিল সাটের ঠোঁটে। আমি এখানে ভোটের জন্যে আসিনি, ম্যালো। পারমাণবিক অস্ত্র আমাদের নাকের ডগা দিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে অথচ সেগুলো কোত্থেকে আসছে আমরা জানিই না।
স্মিরনিয়ার মাস্টার ট্রেডার হোবার ম্যালো শান্তভাবে, অনেকটা নির্লিপ্ত ভঙ্গিতে সিগারেটে টান দিলেন। বলে যান। আরো কিছু বলার থাকলে, ঝেড়ে কাশুন।
ফাউণ্ডেশনের লোকজনের সামনে বিনয়ে বিগলিত হবার মতো ভুলটি কখনন করেন না ম্যালো। তিনি একজন আউটল্যাণ্ডার হতে পারেন, তাই বলে ফেলনা নন।
টেবিলের ওপর একটা ট্রাইমেনশনাল স্টার-ম্যাপ রয়েছে। সেটার দিকে ম্যালোর দৃষ্টি আকর্ষণ করলেন সাট। কন্ট্রোলগুলো অ্যাডজাস্ট করতেই আধ ডজন স্টেলার সিস্টেমে লাল আলো জ্বলে উঠল। শান্ত কণ্ঠে সাট বললেন, এটা হচ্ছে কোরেলিয়ান রিপাবলিক।
মাথা ঝাঁকালেন ট্রেডার। গিয়েছি ওখানে। দুর্গন্ধ ভরা ইঁদুরের গর্ত একটা! ওটাকে আপনি রিপাবলিক বলতে পারেন, কিন্তু প্রতিবারই দেখা যায়, এমন এক লোক কমোডর নির্বাচিত হয়েছে যে কি না আর্গো পরিবারের কেউ নয়। আর ব্যাপারটা যদি কারো পছন্দ না হয়, তাহলে কপালে খারাবি আছে তার। ঠোঁট বাঁকিয়ে কথার পুনরাবৃত্তি করলেন তিনি, গিয়েছি ওখানে।
কিন্তু তুমি ফিরে এসেছ, আর এ-ব্যাপারটা বার বার ঘটে না। গত বছর রিপাবলিকের এলাকার ভেতর থেকে তিনটে ট্রেডশিপ হাওয়া হয়ে গেছে। তিনটি শিপই কনভেনশনের আওতায় অনাক্রমণ চুক্তিবদ্ধ। তিনটে শিপই সব ধরনের সাধারণ নিউক্লিয়ার এক্সপ্লোসিভ আর ফোর্স-ফিল্ড ডিফেন্সে সজ্জিত ছিল।
শেষবারের মতো কী খবর পাঠিয়েছিল ওগুলো?
রুটিন রিপোর্ট, তার বেশি কিছু নয়।
তা, কোরেল কী বলে এ-ব্যাপারে?
বিদ্রুপের ঝিলিক খেলে গেল সাটের দুচোখে, কোনো কিছু জিগ্যেস করার জো ছিল না ওদেরকে। গোটা পেরিফেরি জুড়ে ফাউণ্ডেশনের ক্ষমতার যে খ্যাতি ছড়িয়ে আছে সেটাই এর সবচেয়ে বড় সম্পদ। তোমাদের কি মনে হয় মাত্র তিনটে শিপ খুইয়ে সে-সম্পর্কে খোঁজ-খবর করা সাজে আমাদের?
বেশ তো, সেক্ষেত্রে আপনি আমার কাছে ঠিক কী চান সেটা আমাকে বলে ফেললে হতো না?
বিরক্তি প্রদর্শন করে বাজে সময় খরচ করলেন না জোরেন সাট। কিছু লোক আছে যারা মনে করে, হ্যারি সেলডন নির্দেশিত ভবিষ্যৎ ইতিহাসের গতিপথের সন্ধান পেয়ে গেছে তারা। এদের মধ্যে আছে বিরোধীদলীয় কাউন্সিল সদস্য, চাকুরি প্রার্থী, সমাজ সংস্কারক আর বাতিকগ্রস্ত লোকজন। মেয়রের সেক্রেটারি হিসেবে তিনি ভাল করেই জানেন, এ-ধরনের লোকজনকে কী করে এড়িয়ে চলতে হয় বা দূরে সরিয়ে রাখতে হয়। সুতরাং তার বিরক্তি উৎপাদন করা খুব কঠিন কাজ।
তিনি তাই শান্তভাবে বললেন, এক মিনিট। একই সেক্টরে আর একই বছরে তিন তিনটে শিপ খোয়া যাবার ব্যাপারটা কিছুতেই দুর্ঘটনা হতে পারে না। আর পারমাণবিক শক্তিকে কেবল