দ্বিতীয় পর্ব : ফাউণ্ডেশনের অনুসন্ধান

দ্বিতীয় পর্ব : ফাউণ্ডেশনের অনুসন্ধান

২.০১ আর্কেডিয়া

ডেরিল, আর্কেডি… ঔপন্যাসিক, জন্ম ১১, ৫,৩৬২ এফ. ই., মৃত্যু ১, ৭,৪৪৩ এফ, ই.। মূলত কল্পকাহিনী লিখতেন, তবে আর্কেডি ডেরিল সবচেয়ে বেশি খ্যাতি অর্জন করেন তার পিতামহী, বেইটা ডেরিল-এর আত্মজীবনী লিখে। যতটুকু জানা যায়, প্রায় শতাব্দী জুড়ে এটাই ছিল মিউল এবং তার শাসনকাল সম্পর্কে জানার একমাত্র উপায়। তার ‘আনকীড মেমোরিজ’ ‘টাইম এও টাইম এণ্ড ওভার’ ইত্যাদি উপন্যাসে সেই অরাজকতার যুগেও কালগানের জৌলুসপূর্ণ সমাজের চমৎকার প্রতিচ্ছবি ফুটে উঠেছে, ধারণা করা হয়ে থাকে তরুণ বয়সে একবার কালগানে ভ্রমণের অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে তিনি এই উপন্যাসগুলো লিখেছিলেন…

 

–এনসাইক্লোপেডিয়া গ্যালাকটিকা

 

.

 

‘সেল্ডনস প্ল্যানের উত্তরকাল, এ. ডেরিল’

 

ট্রান্সক্রাইবারের মাউথপিসে দৃপ্তকণ্ঠে কথাগুলো বলে আর্কেডিয়া ডেরিল থামল। সে ঠিক করে রেখেছে একদিন যখন সে অনেক বড় লেখিকা হবে তখন তার সমস্ত মাস্টারপিসগুলো আর্কেডি ছদ্মনামে লিখবে। শুধু আর্কেডি, আর কিছু না।

 

এ. ডেরিল তার নামের সংক্ষিপ্ত আকার, স্কুলের জন্য যে রচনা লিখতে হয় সেগুলোর গুরুত্ব বৃদ্ধির জন্য এই নামটা সে ব্যবহার করে। অন্যরাও তাই করে, শুধু অলিনথাস ড্যাম ছাড়া। প্রথম দিনেই অলিন্থাস ড্যাম-এর আচরণ দেখে পুরো ক্লাস হেসে উঠেছিল। আর আর্কেডিয়া ছোট মেয়েদের নাম। এই নাম রাখা হয়েছে কারণ তার মহান পিতামহীকে এই নামে ডাকা হত। একেবারেই নীরস নাম। বাবা-মার কোনো কল্পনাশক্তিই নেই।

 

দুদিন আগে তার বয়স চৌদ্দ পূর্ণ হয়েছে, এখন সে বড় হয়েছে, তাকে আর্কেডি ডাকা উচিত। বাবার কথাগুলো মনে পড়তেই ঠোঁট দুটো পরষ্পর চেপে বসল। বুক ভিউয়ার থেকে চোখ তুলে তিনি বলেছিলেন, কিন্তু এখনই যদি তুমি নিজেকে উনিশ বছরের দেখাও, পঁচিশ বছর বয়সে কী করবে, ছেলেরা মনে করবে তোমার বয়স ত্রিশ।’

 

নিজের বিশেষ আর্মচেয়ারে হাত পা ছড়িয়ে বসে আছে সে, সেখান থেকে ড্রেসারের আয়নাটাও দেখা যায়। ঘরে পড়ার স্যাণ্ডেল খুলে সে ঘাড়টা অস্বাভাবিকভাবে সোজা করল। বুঝতে পারছে ঘাড় প্রায় দুই ইঞ্চি লম্বা হয়ে গেছে এবং একটা রাজকীয় ভাব এসেছে।

 

নিজেকে আয়নায় বিভিন্নভাবে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখতে লাগল আর্কেডিয়া। মুখ মনে হল বেশি মোটা। জিভ দিয়ে দ্রুত ঠোঁট ভেজাল। আঙুল দিয়ে চোখের পাতা টেনে ধরে ইনার স্টার সিস্টেমের মহিলাদের মতো রহস্যময় ভাব আনার চেষ্টা করল, কিন্তু হাতের জন্য ভালোভাবে বুঝতে পারল না। চোয়াল একটু উঁচু করে চোখ টান টান করে এমন ভাবে আয়নার দিকে তাকাল যে ব্যথা শুরু হয়ে গেল ঘাড়ে।

 

স্বাভাবিকের চেয়ে একটু নিচু স্বরে বলল, ‘সত্যি বাবা তুমি যদি ভেবে থাকো ঐ সব বাজে বয়স্ক ছেলেরা কী মনে করল, আমার কাছে তার কোনো গুরুত্ব রয়েছে তা হলে তুমি–’

 

খেয়াল হতেই হাতের ট্রান্সমিটার বন্ধ করল ঝট করে।

 

হালকা বেগুনি কাগজের বাঁ দিকে উজ্জ্বল মার্জিন। তাতে লেখা ছিল—

 

সেল্ডনস্ প্ল্যানের উত্তরকাল

 

‘সত্যি, বাবা, তুমি যদি ভেবে থাকো ঐ সব বাজে বয়স্ক ছেলেরা কী মনে করল আমার কাছে তার কোনো গুরুত্ব রয়েছে, তা হলে তুমি—’

 

‘ওহ, গোলি।‘

 

বিরক্তির সাথে কাগজটা বের করল মেশিন থেকে। ক্লিক শব্দ করে স্বয়ংক্রিয়ভাবে আরেকটা কাগজ জায়গা মতো এসে গেল।

 

সেটা দেখেই মুখের বিরক্তি দূর হয়ে আত্মতৃপ্তির হাসি ফুটল। অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে মার্জিত ও মুগ্ধভাবে কাগজটা ছুঁয়ে দেখল সে। আসলে লেখার কৌশলই


Rx Munna

447 Blog posts

Comments