মিঃ শার্লক হোমস
রক্ত সমীক্ষা

সামরিক চিকিৎসা বিভাগ থেকে অবসরপ্রাপ্ত জন এইচ, ওয়াটসন, এম, ডি-র স্মৃতি-চারণা থেকে

১৮৭৮ সালে আমি লণ্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের ডক্টর অব মেডিসিন ডিগ্রী লাভ করি এবং সেনাবিভাগে সার্জনদের জন্য নির্ধারিত পাঠক্রমে যোগদানের জন্য নেট্‌লি যাত্রা করি। সেখানকার পাঠ শেষ করে যথারীতি সহকারী সার্জনরূপে পঞ্চম নর্দাম্বারল্যাণ্ড রেজিমেণ্টের সঙ্গে যুক্ত হয়। সিএ সময়ে ঐ রেজিমেণ্টের কর্মস্থল ছিল ভারতবর্ষ। আমি সেখানে যোগদান করবার আগেই দ্বিতীয় আফগান যুদ্ধ বেধে যায়। বোম্বাইতে জাহাজ থেকে নেমেই জানতে পারলাম আমার রেজিমেণ্ট গিরিবর্ত্মের ভিতর দিয়ে অগ্রসর হয়ে ইতিমধ্যেই শত্রুপক্ষের দেশে প্রবেশ করেছে। আমার মত আরও অনেক অফিসারের সঙ্গে যাত্রা করে নিরাপদেই কান্দাহার পৌঁছলাম এবং আমার রেজিমেণ্টকে পেয়ে সঙ্গে সঙ্গে নতুন কর্মভার গ্রহণ করলাম।

 

সেই অভিযান অনেকের জন্যই এনে দিল সম্মান আর পদোন্নতি, কিন্তু দুর্ভাগ্য আর বিপদ ছাড়া আমাকে সে আর কিছুই দিল না। আমার বাহিনী থেকে সরিয়া আমাকে বার্কশায়ার বাহিনীর সঙ্গে যুক্ত করা হলে এবং তাদের সঙ্গেই মাইওয়ান্দের মারাত্মক যুদ্ধে আমি অংশগ্রহণ করলাম। সেখানেই একটি ‘যেজাইল’ বুলেট আমার কাঁধে বিদ্ধ হয়ে একখানা হাড় ভেঙে চুরমার করে দিল আর সাবক্লেভিয়ান ধমনীটা ঘেসড়ে গেল। আমার আর্দালি মারের প্রভুভক্তি আর সাহসের জন্যই খুনে গাজীদের হাত থেকে কোনরকমে বেঁচে গেলাম। একটা ভারবাহী ঘোড়ায় চাপিয়ে সে আমাকে নিরাপদে বৃটিশ লাইনে নিয়ে এল।

 

যন্ত্রণায় ক্লিষ্ট এবং দীর্ঘস্থায়ী কষ্টভোগের ফলে দুর্বল অসহায় অবস্থায় একদল আহত সৈনিকের সঙ্গে আমাকে পেশোয়ারের বেস-হাসপাতালে পাঠিয়ে দেওয়া হল। সেখানেই ধীরে ধীরে সুস্থ হতে লাগলাম। ক্রমে ওয়ার্ডের ভিতরে হাঁটাচলা করা আর বারান্দায় রৌদ্রে একটু-আধটু বেড়াবার মত স্বাস্থ্যও ফিরে পেলাম। হঠাৎ ভারতের অভিশাপ আন্ত্রিক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে পড়লাম। কয়েক মাস আমার জীবনের কোন আশাই ছিল না। অবশেষে আমার যখন সেরে উঠলাম তখন আমি এতই দূর্বল ও শীর্ণকায় হয়ে পড়লাম যে একটা মেডিক্যাল বোর্ড স্থিত করলেন,–আর একটি দিনও নষ্ট না করে আমাকে লণ্ডনে পাঠিয়ে দেওয়া উচিত। তদনুসারে আমাকে সৈন্যবাহী জাহাজ ‘ওরোণ্টেস’-এ তুলে দেওয়া হল এবং তার এক মাস পরে পোর্টসমাউথ জেটিতে নামলাম। নষ্টস্বাস্থ্য পুনরুদ্ধারের কোন আশাই তখন ছিল না, তবু স্নেহময় সরকার স্বাস্থ্যোন্নতির জন্য নয় মাস সময় দিলেন।

 

ইংলণ্ডে আত্মীয়-স্বজন কেউ ছিল না। কাজেই আমি তখন বাতাসের মত স্বাধীন, অবশ্য দৈনিক এগারো সিলিং ছয় পেনি আয়ে একজন লোক যতটা স্বাধীন


Rx Munna

447 Blog posts

Comments