মধুপুর জাতীয় উদ্যান
বাংলাদেশের সবচেয়ে জীববৈচিত্র্যপূর্ণ পাবলিক পার্কগুলির মধ্যে একটি হল মধুপুর জাতীয় উদ্যান। ঢাকা থেকে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার দূরে টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলায় অবস্থিত। এই বনটি মূলত তার শাল গাছের জন্য পরিচিত এবং এটি শত শত বছরের পুরানো বলে মনে করা হয়। 1974 সালের বন্যপ্রাণী আইন বাংলাদেশ সরকারকে 1982 সালে মধুপুর বনকে একটি জাতীয় উদ্যান হিসাবে মনোনীত করার অনুমতি দেয়। মধুপুর জাতীয় উদ্যান 1962 সালে বন বিভাগের এখতিয়ারের অধীনে রাখা হয়েছিল।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানের আয়তন প্রায় ৮৪,৩৬৬ হেক্টর। মধুপুর জাতীয় উদ্যানের প্রধান ফটকটি টাঙ্গাইল জেলা কেন্দ্র থেকে ময়মনসিংহ যাওয়ার পথে রসুলপুর মাজারের বাম পাশে অবস্থিত। সহকারী বন সংরক্ষকের কার্যালয় এবং মধুপুর জাতীয় উদ্যান রেঞ্জ অফিস গেটের পাশে অবস্থিত। 25 মাইল নামে পরিচিত একটি জায়গায় অল্প দূরত্বে এগিয়ে যান। ডানদিকে 9 কিলোমিটার পেরিয়ে গেলে আপনি দোখলা রেস্ট হাউস এবং রেঞ্জ অফিস দেখতে পাবেন। ময়মনসিংহ বন বিভাগের রসুলপুর রেঞ্জ অফিস জাতীয় উদ্যানের পাশেই অবস্থিত। এর পাশেই মহুয়া কটেজ ও জলাই রেস্ট হাউস।
প্রধান ফটক দিয়ে জঙ্গলে প্রবেশ করলেই দেখা যায় শালবন এবং আশেপাশের গাছপালা। বেহুলা, আজুকি/হারগাজা, বিধা, বহেরা, আমলকি, হলুদ, আমড়া, জিগা, ভাদি, অশ্বথ এবং বট সর্পগন্ধার মতো বিভিন্ন ধরণের গাছ ও লতা রয়েছে। মধুপুর জাতীয় উদ্যানে প্রায় ১১ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী, ৭ প্রজাতির সরীসৃপ, ৪ প্রজাতির উভচর এবং ৩৮ প্রজাতির পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল মুখপোড়া হনুমান, লাল মুখের বানর, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, পেঁচা, কাঠ ময়ূর এবং বন্য শুকর। শাটি ও পাহাড়ি আলু বিভিন্ন প্রজাতির আসে।
মধুপুর জাতীয় উদ্যানে জুঁই ও চামেলী বাগান, দোখলা রেস্ট হাউস, বকুল কটেজ, চুনিয়া কটেজ এবং দুটি পিকনিক এলাকা রয়েছে। বেশ কিছু উপজাতীয় বসতি এবং একটি ছোট বাজারও রয়েছে। উপরন্তু, কারিতাস নামে একটি দোকানে বিভিন্ন ধরনের সিল্ক টেক্সটাইল বিক্রি হয় যা আদিবাসীদের হাতে তাঁত। বনের গভীরে একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র। কেন্দ্রটি লাহরিয়া বিট অফিসের পাশে প্রশস্ত চোখের চিত্রা হরিণের চারপাশে ঘুরে বেড়াতে দেখা যায়। সেখানে হনুমানের সমারোহ দেখে সবাই মুগ্ধ হবেন।
কিভাবে যাবেন?
ঢাকা থেকে শুধুমাত্র সড়কপথে মধুপুর উদ্যানে যেতে হয়। ঢাকার মহাখালি বাস টার্মিনাল থেকে বিনিময় ও শুভেচ্ছা পরিবহন নামে দুটি বাস সার্ভিস সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত এই রুটে চলাচল করে। এ দুটি পরিবহনের ভাড়া জনপ্রতি ২৫০ থেকে ৩০০ টাকা।
কোথায় থাকবেন?
ঢাকা থেকে সাধারণত দিনে গিয়ে দিনেই মধুপুর উদ্যান দেখে ফিরে আসা যায়। থাকার জন্য মধুপুর উদ্যানের ভেতরে দোখলা নামক স্থানে গড়ে তোলা হয়েছে দোখলা রেস্ট হাউজ। এছাড়াও জলই, বকুল, মহুয়া ও চুনিয়া নামে আরো চারটি কটেজে অনুমতি নিয়ে থাকতে পারবেন। এই কটেজগুলোতে রাত্রিযাপনের সকল সুযোগ সুবিধা রয়েছে।
Please visit: https://basicknowledge-bd.blogspot.com/2024/05/madhupur-national-park.html