ইসলামে মানব জীবনের সকল বিধি-বিধান রয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর যৌন মিলনের জন্যে সঠিক নিয়ম দেওয়া আছে। কিভাবে সহবাস করতে হবে, কিভাবে সহবাস করা হারাম, কখন সহবাস করা নিষিদ্ধ ইত্যাদি নিয়ম বা পদ্ধতিগুলো কুরআন এবং হাদিসে বর্ণনা করা হয়েছে। ইসলাম দাম্পত্য জীবনকে মধুর ও রোমান্টিক করতে উৎসাহিত করেছে।
সহবাসের শুরুতে নিয়ত করা
আরবিতে নিয়ত করতে হবে এমনটা নয়। নিয়ত মানে মনোস্থির করা। মনে মনে এই কামনা করা যে, আমি সাওয়াব অর্জনের উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্যে সহবাস করবো। এর মাধ্যমে নিজেকে হারাম থেকে বিরত রাখবো এবং সন্তান লাভের আশা থাকবে। হাদিসে আছে, স্ত্রী সহবাসও সাদকা। এর মাধ্যমে সাওয়াব বা নেকি লাভ করা যায়।
সহবাসের সময় আদর-সোহাগ করা
ইসলামে সহবাসের সময় স্বামী-স্ত্রী একে অপরকে আদর করার কথা বলা হয়েছে। হাদিসে এই আদর সোহাগের ব্যাপারে উৎসাহিত করা হয়েছে। যৌন মিলনকে মধুর করতে যত উপায় আছে যেকোনভাবে তা করা যাবে। স্বামী চুম্বন, আলিঙ্গন, মর্দন ইত্যাদির মাধ্যমে স্ত্রীকে আদর করবে। তেমনি স্ত্রীও স্বামীকে আদর-সোহাগ করবে। এক্ষেত্রে উভয়ের Response বা সাড়া দেওয়া খুবই জরুরী। একে অপরকে মিলনের জন্য আগ্রহী করে তুলবে।
দাম্পত্য জীবনে Romantic Sexual Relations থাকা খুবই প্রয়োজন। এতে করে সম্পর্ক গভীর হয়। অন্যথায় শয়তান খারাপ পথে নিয়ে যায় যা ডিভোর্সের কারণ হতে পারে।
সহবাসের সময় দোয়া করা
শয়তান মানুষের রক্তের শিরা-উপশিরায় অবস্থান করতে পারে। এইজন্যে সহবাসের সময় দোয়া করতে হয়। স্বামী-স্ত্রী মিলনের আগে যে দোয়া পড়তে হয়- بِسْمِ اللّهِ اللّهُمَّ جَنِّبْنَا الشَّيْطَانَ وَ جَنِّبِ الشَّيْطَانَ مَا رَزَقْتَنَا
উচ্চারণ : ‘বিসমিল্লাহি আল্লাহুম্মা জান্নিবনাশ শায়ত্বানা ওয়া জান্নিবিশ শায়ত্বানা মা রাযাক্বতানা।
’অর্থ : ‘হে আল্লাহ! তোমার নামে (যৌন মিলন বা সহবাস) আরম্ভ করছি, তুমি আমাদের (স্বামী-স্ত্রী উভয়ের) কাছ থেকে শয়তানকে দূরে রাখ। আমাদের এ মিলনের ফলে যে সন্তান দান করবেন, সে সন্তানকেও শয়তান (যাবতীয় আক্রমণ) থেকে দূরে রাখ।’ রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, এরপরে যদি তাদের দু’জনের মাঝে কিছু ফল দেয়া হয় অথবা বাচ্চা পয়দা হয়, তাকে শয়তান কখনো ক্ষতি করতে পারবে না। (বুখারী ৪৭৮৭)
ইসলামে সহবাসের পজিশন
نِسَآؤُکُمۡ حَرۡثٌ لَّکُمۡ ۪ فَاۡتُوۡا حَرۡثَکُمۡ اَنّٰی شِئۡتُمۡ ۫ وَ قَدِّمُوۡا لِاَنۡفُسِکُمۡ ؕ وَ اتَّقُوا اللّٰہَ وَ اعۡلَمُوۡۤا اَنَّکُمۡ مُّلٰقُوۡہُ ؕ وَ بَشِّرِ الۡمُؤۡمِنِیۡنَ
অর্থ- তোমাদের স্ত্রী তোমাদের ফসলক্ষেত্র। সুতরাং তোমরা তোমাদের ফসলক্ষেত্রে গমন কর, যেভাবে চাও। আর তোমরা নিজদের কল্যাণে উত্তম কাজ সামনে পাঠাও। আর আল্লাহর তাকওয়া অবলম্বন কর এবং জেনে রাখ, নিশ্চয় তোমরা তাঁর সাথে সাক্ষাৎ করবে । আর মুমিনদেরকে সুসংবাদ দাও।(সূরা বাক্বারা-২২৩) সহবাসের পদ্ধতি সম্পর্কে সরাসরি কোন বিধি নিষেধ নেই। দাঁড়িয়ে, বসে, শুয়ে, কাত হয়ে, সামনে থেকে, পিছন থেকে যেভাবে ইচ্ছা সেভাবে সহবাস করা যাবে। তবে শর্ত হচ্ছে তা যৌনিপথে করতে হবে। কিছু বর্ণনায় স্বামী উপরে আর স্ত্রীকে নিচে থাকার কথা বলা হয়েছে। ইহা সুবিধাজনক ও প্রশান্তিদায়ক এবং উত্তম। তবে বাধ্যতামূলক নয়। আর স্ত্রী যদি উপরে থাকে আর স্বামী যদি নিচে থাকে এতে গুনাহের কিছু নেই। কিন্তু সতর্ক থাকতে হবে এই পজিশনে বীর্যপাত হলে বীর্য আটকে কষ্টের কারণ হতে পারে।