মাকসুদ, একজন প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ও মেধাবী শিক্ষার্থী, বর্তমানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন এবং ছাত্রলীগের রাজনৈতিক খেলার শিকার হয়ে জীবনযুদ্ধে অবরুদ্ধ। তার সাথে ন্যায়বিচারের প্রয়োজনীয়তা এখন অত্যন্ত জরুরি।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হওয়ার পর মাকসুদ কয়েক মাস মেসে অবস্থান করে। পরে, নিজ জেলার এক বড় ভাইয়ের মাধ্যমে হলে ওঠার চেষ্টা করে, যিনি হলের একজন ছাত্রলীগ নেতা। নন-পলিটিকাল একটি সিটের আশায় মাকসুদকে ছাত্রলীগের পলিটিক্যাল রুমে রাখা হয়, কিন্তু স্থায়ী রুমের প্রতিশ্রুতি কখনও পূরণ করা হয়নি। এভাবে মাকসুদ সেই পলিটিক্যাল রুমে বাধ্য হয়ে থেকে যায়, যেখানে তার পড়াশোনা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েছিল।
রিডিংরুমে তার নিয়মিত যাতায়াতই ছিলো পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার একমাত্র উপায়। শিক্ষার্থীরা জানায়, মাকসুদ তার ডিপার্টমেন্টে বরাবরই শীর্ষ ৪-৫ জনের মধ্যে ছিলো। তবে, সে সবসময় চিন্তিত ছিলো কিভাবে এই পলিটিক্যাল রুম থেকে মুক্তি পাবে। এমনকি, সে এই সমস্যা নিয়ে একজন সিনিয়র শিক্ষার্থীর সাথে আলাপও করে, যিনি তাকে আশ্বস্ত করেছিলেন যে কিছুদিন পরে তিনি রুম ছাড়লে মাকসুদ সেখানে উঠতে পারবে।
যদিও মাকসুদ রাজনীতি পছন্দ করতো না, তবে সে বাধ্য হয়েই ছাত্রলীগের রুমে থাকতে থাকে। বারবার সে চেষ্টা করেছে মিছিল ও মিটিং থেকে নিজেকে দূরে রাখতে। কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময়েও, মাকসুদ সবসময় মাস্ক পরে আন্দোলনে যোগ দিতো, যাতে কেউ তাকে চিনতে না পারে। এমনকি, যখন ছাত্রলীগ ক্যাম্পাস থেকে বিতাড়িত হয়েছিল, তখনও মাকসুদ ছাত্রলীগের সাথে যোগ না দিয়ে তার সিনিয়রের রুমে গিয়ে লুকিয়ে ছিলো।
বিশ্ববিদ্যালয়ের অনেক শিক্ষার্থী অভিযোগ করছে যে, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন যদি মাকসুদকে প্রথম থেকেই একটি সঠিক রুম প্রদান করতো, তাহলে তার এই পরিস্থিতি হতো না।
এখন, মাকসুদকে ছাত্রলীগের ট্যাগ দিয়ে আটকানো হয়েছে, যা তার জন্য সম্পূর্ণ অন্যায়। জানা গেছে, মাকসুদ সবসময় কোটা সংস্কার আন্দোলনের পক্ষে ছিলো এবং আন্দোলনে সরাসরি অংশগ্রহণ করেছে। তার সিনিয়র শিক্ষার্থীর ফোনে মাকসুদের অনেক ছবি ও ভিডিও রয়েছে, যা তার নির্দোষিতার প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে।
এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্ব হলো, মাকসুদের এই বিপদের সময়ে তাকে সহায়তা করা এবং দ্রুত তাকে থানার হেফাজত থেকে মুক্ত করে তার প্রতি সুবিচার নিশ্চিত করা।