মানুষের জীবন ধারণের জন্য অক্সিজেন অপরিহার্য। আমাদের শরীরের প্রতিটি কোষ অক্সিজেনের সাহায্যে শক্তি উৎপাদন করে এবং এর অভাবে জীবন সম্ভব নয়। কিন্তু কেন অক্সিজেন এত গুরুত্বপূর্ণ, এবং অন্য গ্যাস দিয়ে কেন আমাদের বাঁচা সম্ভব নয়, তা বিশ্লেষণ করা প্রয়োজন।
অক্সিজেন আমাদের শরীরের মৌলিক মৌলিক শক্তির উৎস। আমাদের শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন প্রবাহিত হয়, যা শ্বাস-প্রশ্বাসের মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। মাইটোকন্ড্রিয়া, যা আমাদের কোষের শক্তি কেন্দ্র, অক্সিজেন ব্যবহার করে গ্লুকোজকে শক্তিতে রূপান্তরিত করে। এই প্রক্রিয়াটি অক্সিডেটিভ ফসফোরিলেশন নামে পরিচিত এবং এর মাধ্যমে ATP (অ্যাডেনোসিন ট্রাইফসফেট) তৈরি হয়, যা কোষের সব কাজের জন্য শক্তি প্রদান করে।
অক্সিজেনের অভাব হলে, মাইটোকন্ড্রিয়ার শক্তি উৎপাদন ব্যাহত হয়, যার ফলে কোষের কার্যক্রম বিপর্যস্ত হয়। এ পরিস্থিতিতে শরীরের প্রতিটি অঙ্গ এবং সিস্টেম কাজ করতে ব্যর্থ হয়। অক্সিজেনের অভাবে শরীরে অ্যাসিডোটিক কন্ডিশন সৃষ্টি হয়, যা অত্যন্ত বিপজ্জনক এবং অঙ্গগুলির ক্ষতি করতে পারে। দীর্ঘ সময় অক্সিজেনের অভাবে মৃত্যুর ঝুঁকি বেড়ে যায়।
অন্যান্য গ্যাস, যেমন কার্বন ডাইঅক্সাইড, হাইড্রোজেন, বা নাইট্রোজেন, অক্সিজেনের বিকল্প হিসেবে কাজ করতে পারে না।
- কার্বন ডাইঅক্সাইড: কার্বন ডাইঅক্সাইড মানুষের শরীরের জন্য বিষাক্ত, বিশেষ করে উচ্চ মাত্রায়। এটি রক্তের পিএইচ স্তর পরিবর্তন করে এবং শ্বাসকষ্ট সৃষ্টি করতে পারে।
- হাইড্রোজেন: হাইড্রোজেন জ্বালানির জন্য ব্যবহৃত হলেও, এটি কোষের শক্তি উৎপাদনে সহায়ক নয় এবং শরীরের জন্য নিরাপদ নয়।
- নাইট্রোজেন: নাইট্রোজেন আমাদের শরীরে গ্যাস হিসেবে বিদ্যমান, তবে এটি অক্সিজেনের বিকল্প হতে পারে না কারণ এটি কোষের শক্তি উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় রসায়ন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণ করে না।
অক্সিজেনের অভাবের বিরুদ্ধে সামঞ্জস্যপূর্ণ প্রক্রিয়া প্রয়োগ করা দরকার। যেমন, অক্সিজেনের মাত্রা পর্যবেক্ষণ, শ্বাস-প্রশ্বাসের নিয়মিত অনুশীলন, এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন।
মোটকথা, অক্সিজেন ছাড়া মানুষের জীবন সম্ভব নয় কারণ এটি শরীরের শক্তি উৎপাদনের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অন্য কোনো গ্যাস অক্সিজেনের এই মৌলিক ভূমিকা পালন করতে সক্ষম নয়।