স্ত্রীকে ভালো না লাগার হাজারটা কারণ থাকতে পারে,কারণ সে মানবীয় ত্রুটির উর্ধ্বে না। তবে তাকে ভালোবাসার জন্য একটি কারণই যথেষ্ট....“সে আপনার সন্তানের মা”। পুরুষ জাতি কৃষকের মতো। বীজ বপনের মরসুমে বীজ ছড়িয়ে অপেক্ষা করে সুন্দর একটি অঙ্কুরোদগমের! ভালো ফলনের আশায় হয়তো জমির একটু যত্নও নেই! কিন্তু নরম মাটির বুক আঁকড়ে ধরে তার প্রানরস শুষে কিভাবে একটি বীজ গাছে রুপান্তরিত হয় তা আমাদের নিকট অজানা!
একটি শরীরের মাঝে আরেকটি জীবন্ত শরীর টানা ৯ মাস ধরে বেড়ে ওঠার পিছনে লুকিয়ে থাকে না জানা অনেক ভেজা গল্প! অশ্রুসজল নির্ঘুম রাত, তীব্র ক্ষুধা সত্বেও খেতে না পারার নির্মম কষ্ট,হাজারো শারীরিক জটিলতা এমনকি মৃত্যু ভয়কে উপেক্ষা করে সে অপেক্ষার প্রহর গোনে ‘পিতৃত্ব’ উপহার দিয়ে ভালোবাসার মানুষটির মুখের হাসি দেখতে! সন্তান জন্মদানের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার প্রতিটি মূহুর্তে অসহ্য সীমাহীন যন্ত্রণায় বুক বিদীর্ণ করা এক একটি চিৎকারের গভীরে কয় সাগর ব্যাথার অশ্রু ঝরে পড়ে তা কেবল সৃষ্টিকর্তাই বোঝেন!
নাক-কান ফোঁড়ানোর সামান্য সূচ দেখে চিৎকার করা মেয়েটি আপনার প্রোথিত বীজের ফলটিকে আরও নিরাপদে আপনাকে হস্তান্তর করতে অস্ত্রোপচারের কক্ষে বীরাঙ্গনার মতো হেঁটে যায় স্বেচ্ছায় নিজেকে ডাক্তারের ধারালো অস্ত্রের নিচে বলী দিতে, আর ফিরে আসে স্ট্রেচারে পড়ে থাকা আহত ও রক্তাক্ত অবশ দেহটি নিয়ে! কখনোবা সত্যিকারের এই বীরাঙ্গনারা আঁতুড়ঘরের কোণায় কিংবা হাসপাতালের বেডে জীবনের ইতি টেনে নীরবে ওপারে চলে যায়!
আপনার স্ত্রী ছিলো একজন বাবার রূপ সচেতন রাজকন্যা,যে বাবার গলা ধরে হরেকরকম প্রসাধনীর জন্য বায়না ধরতো। সৌন্দর্য রক্ষায় আপোষহীন সেই মেয়েটি আপনার সন্তানকে গর্ভে ধারণ করতে নিজের সৌন্দর্যকে চিরদিনের জন্য উৎসর্গ করে। একজন মা কখনোই তার পূর্বের শারীরিক গঠন ও সৌন্দর্য ফিরে পায় না জেনেও আপনার সেই বীরাঙ্গনা একটুও পিছপা হয়না।
বলুন তো,এই মানুষটিকে ভালো না বেসে থাকা আদৌ সম্ভব কি?