আল্লাহর মহব্বতে আগুনে জ্বলে যাওয়া

ফেরাউনের এক মেয়ের বিশেষ এক দাসী ছিল। মেয়ের যাবতীয় খেদমত করত এই দাসী। তাঁর সাজ-সাজ্জা হতো এরই হাতে। সেও হযরত মূ??

ফেরাউনের এক মেয়ের বিশেষ এক দাসী ছিল। মেয়ের যাবতীয় খেদমত করত এই দাসী। তাঁর সাজ-সাজ্জা হতো এরই হাতে। সেও হযরত মূসা (আঃ)-এর প্রতি ঈমান রাখত। কিন্তু ফেরাউনের ভয়ে তা কখনো প্রকাশ করত না। একবারের ঘটনা। এই দাসী রাজকন্যার চুল আঁচড়াচ্ছিল। হঠাৎ হাত থেকে চিরুনিটা পড়ে গেল। 

 

দাসী বিসমিল্লাহ বলে চিরুনিটা তুলে নিল। শাহজাদী চমকিত হলো। জিজ্ঞেস করল, তুমি কার নাম নিলে? দাসী বলল, তাঁর নাম, যিনি তোমার পিতাকে সৃষ্টি করেছেন। তোমার পিতাকে যিনি রাজত্ব দিয়েছেন। একথা শুনে সে খুব বিস্মিত হলো। ভাবল, আমার পিতার চেয়েও কেউ বড় আছে নাকি? দৌড়ে গিয়ে সে সব কাহিনী পিতা ফেরাউনের কাছে বলল। ঘটনা শুনে ফেরাউন তো রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ার উপক্রম। 

 

সে বাঁদীকে ডেকে খুব গালি-গালাজ করল। ধমকা-ধমকি করল। কিন্তু বাঁদী স্পষ্ট ভাষায় বলে দিল, আপনি যা ইচ্ছা করুণ, আমি ঈমান ত্যাগ করতে পারব না। বাঁদীর দৃঢ়তায় ফেরাউন হতবাক হলো। সে মনে করেছিল, চাপ দিলেই বাঁদী ঈমান ছাড়তে বাধ্য হবে। কিন্তু এই স্পষ্ট জবাব তাঁর মাথায় আগুন ধরিয়ে দিল। সে তাঁকে কঠিন শাস্তি দিতে মনস্থ করল। এমন শাস্তি দিতে চাইল, যা সকলের জন্য শিক্ষণীয় হবে এবং সে শাস্তি দেখে ভবিষ্যতে কেউ আর আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন করার দুঃসাহস দেখাবে না। ফেরাউন বাঁদিকে গ্রেফতার করে তাঁর উপর নির্যাতনের স্টীমরোলার চালাল। 

 

সে প্রথমে বাঁদীর হাত-পায়ে পেরেক ঢুকিয়ে দিল। তাঁর শরীরে আগুনের জলন্ত অঙ্গার নিক্ষেপ করা হলো, যা বাঁদির দেহে লেগে দেহকে ক্ষতবিক্ষত করছিল ও ঝলসে দিচ্ছিল। কিন্তু বাঁদী ছিল অটল, নিজ সিদ্ধান্তে অবিচল। বাঁদির কোলে ছিল তাঁর শিশুপুত্র। তাঁকে কেড়ে নিয়ে আগুনে ছুড়ে ফেলা হলো। মায়ের চোখের সামনে শিশু বাচ্চা মুহুর্তে পুরে ছায় হয়ে গেল।

 

কিন্তু এই শিশু আগুনে থেকেই বলল, মা! ধৈর্য ধরুন। সাবধান! ঈমান ছাড়বেন না। শিশুকে আগুনে নিক্ষেপ করা হলে বাঁদীর খোদাপ্রেমে ভাটা পড়ল না। আল্লাহর মহব্বতে সে তাঁর ঈমান অটুট রাখল। বাঁদির এই দৃঢ়তায় ফেরাউনের গায়ে আগুন ধরে গেল। একসময় সে বাঁদীকেও জ্বলন্ত আগুনে নিক্ষেপ করল। বাঁদী আল্লাহর মহব্বতের সামনে নিজেকে প্রাণ কুরবানী করল। সন্তানকে উৎসর্গ করল। সে এর মাধ্যমে জগতের বুকে আল্লাহর প্রেম ও দৃঢ় ঈমানের ইতিহাস রচনা করল।


Jwel Jwel

181 Blog posts

Comments