অতলে অন্তরীণ – ০৩

জুন, সোমবার

সকালবেলা ঘ নিজে আমার জন্য ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে আসেন। হাতে

, সোমবার

 

সকালবেলা ঘ নিজে আমার জন্য ট্রেতে করে নাস্তা নিয়ে আসেন। হাতে বানানো পাতলা রুটি, ডিম, আলুপটলভাজা, চা। কাজের মহিলা দিনে দুবেলা আসে, সকালে নাস্তা আর দুপুরের রান্না করে চলে যায়, আবার সন্ধেয় এসে রাতের জন্য রান্না বান্না করে। মহিলা যখন রান্নাঘরে ব্যস্ত, ঘ এলেন এ ঘরে, চোখে তাঁর করুণা। যখন আমাকে এ বাড়িতে নিমন্ত্রণ করা হয়েছিল আগে, তখন ওই চোখে দেখেছি আমাকে নিয়ে তাঁর গর্ব। অনেককে তিনি আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন আমার সঙ্গে পরিচিত হতে। আমাকে নিয়ে সেই উচ্ছাস আর নেই, গর্বের জায়গায় দুফোঁটা করুণা চিকচিক করছে। কাজের মহিলার চোখ ফাঁকি দিয়ে বেড়ালের মত দৌড়ে গিয়ে আমাকে টুপ করে ঢুকতে হয়েছে পেচ্ছ!বখানায়। তিনি সতর্ক। কোনও জানালা দরজার ফাঁক দিয়ে কেউ যেন আবার দেখে না ফেলে আমাকে। নাস্তা খেয়ে বন্ধ ঘরটিতে বসে বসে আজকের পত্রিকাগুলো পড়ি। একটি পত্রিকাতেও কোনও বিবৃতি নেই। কেউ প্রতিবাদ করেনি আমার বিরুদ্ধে সরকারের এই মামলার, এই হুলিয়া জারির। আমি কী আশা করেছিলাম? আজকের পত্রিকা ছেয়ে যাবে প্রতিবাদে? বিবৃতিতে? হ্যাঁ আশা করেছিলাম। আমার ফাঁসি চেয়ে গত শুক্রবারে যে মিছিলটি বায়তুল মোকাররম থেকে বেরিয়েছিল, সে মিছিল থেকে কিছু লোক জনকণ্ঠ পত্রিকা আপিসে ঢিল ছুঁড়েছিল। জনকণ্ঠে ইসলামের ন্যায় নীতি আদর্শ মহিমা ইত্যাদি বর্ণনা করার জন্য একটি নিয়মিত বিভাগ থাকে, ইসলামের প্রশংসা করাই এর মূল উদ্দেশ্য। কিন্তু সেদিন এই বিভাগটিতে কোন একটি সুরার ব্যাখ্যা মৌলবাদীদের পছন্দ হয়নি। পছন্দ হয়নি বলে ঢিল ছোঁড়া। সেদিনই ঢিল ছোঁড়ার প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠলেন বুদ্ধিজীবীরা। কিন্তু মিছিলগুলো যে আমার ফাঁসির জন্য ছিল এবং সেই কথার জন্য, যে কথা আমি বলিনি এবং তা পত্রিকায় প্রকাশিত, তারপরও কেউ সেই বিবৃতিতে বলেননি যে, যে কথা তসলিমা বলেনি সে কথার ভিত্তিতে তার ফাঁসি চাওয়া অন্যায়। আজকের পত্রিকাগুলোর খবর ঃ তসলিমা নাসরিনকে পুলিশ খুঁজছে। পুলিশ তাকে গ্রেফতারের জন্য হন্যে হয়ে খুঁজে বেড়াচ্ছে। গতকাল সারা রাত এবং গতকাল রোববার সারাদিন গোয়েন্দাশাখার কয়েকটি দল ঢাকা মহানগরী এবং পাশ্ববর্তী এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি অভিযান চালায়। তার আত্মীয় স্বজনের বাসায় পুলিশ তার খোঁজ করেছে। আত্মীয় স্বজনকে জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। পুলিশের ধারণা তসলিমা গ্রেফতার এড়ানোর জন্য ঢাকা মহানগরী অথবা দেশের অন্য কোথাও নিরাপদ জায়গায় আত্মগোপন করে আছেন। দেশের বাইরে চলে যাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন। আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে বা সীমান্ত এলাকায় তাকে পেলে গ্রেফতারের


Rx Munna

447 Blog posts

Comments