২০২৫ সালে আহনাফের এইচএসসি পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।আন্দোলনে অংশ নিয়ে টিয়ার গ্যাস ও রাবার বুলেটে আহত হয়ে সে একবার বাসায় ফিরেওছিল। তবে ৪ আগস্ট আর ফিরে আসতে পারেনি। আহনাফের মা বলেন, ‘বাইরের পরিস্থিতি দেখে মানা করেছিলেন। তবে ছেলে কিছুতেই নিষেধ মানতে চাচ্ছিল না। বারবার বলছিল, সে যাবেই।
বিকেল সাড়ে চারটার দিকে ফোন করলে আহনাফ তার মাকে বলে, ‘মিরপুর ১০ নম্বরে আছি, ভালো আছি। চিন্তা কোরো না।’ এরপর ছেলেকে আর ফোনে পাননি তার মা-বাবা।
একটা সময় পর ছেলের ফোন আর বাজে না। এরপর তাকে খুঁজে পাওয়া যাচ্ছিল না। বন্ধুরাও কেউ খোঁজ দিতে পারেনি। এরপর অচেনা একটা নম্বর থেকে ফোন আসে। ফোন পেয়ে আহনাফের বাবা এবং পরিবারের সদস্যরা যান মিরপুরের ইসলামিয়া হাসপাতালে। সেখানে এক ব্যক্তি আন্দোলনে প্রাণ হারানো মানুষদের ছবি দেখান। ছবি দেখে তাঁরা বুঝতে পারেন, এ তো আহনাফ!
শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মর্গে আহনাফের লাশ পান পরিবারের সদস্যরা। আহনাফ পড়াশোনায় ভালো ছিল বলে জানান তাঁর শিক্ষক বোরহান উদ্দিন। ফিন্যান্সের এই প্রভাষকই আজ পরীক্ষার হলে আহনাফের নামে রাখা ফুলের তোড়ার ছবি তুলে কলেজের ফেসবুক পেজে শেয়ার করেছেন। এরপর কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সেই ছবি ভাইরাল হয়ে পড়ে।
বিএএফ শাহীন কলেজ ঢাকার ভাইস প্রিন্সিপাল শাকিলা নার্গিস বলেন, ‘আন্দোলনের পর সরকারি সিদ্ধান্তে কলেজ খুলেছে। আজ থেকে আহনাফদের বাকি পরীক্ষা শুরু হলো। এই পরীক্ষার আগেই আমরা সিদ্ধান্ত নিই যে হলে আহনাফের নামে একটা ফুলের তোড়া রাখা হবে। আমাদের কাছে প্রত্যেক শিক্ষার্থীই সন্তানসম। ওদের জন্য আমাদের গভীর ভালোবাসা।’