ছাব্বিশ জুন, রবিবার (?)
ঝ আজ কিঁ কিঁ করা পাখাটি পাল্টে অন্য একটি শব্দহীন পাখা দিয়েছেন। লিফলেট তো আছেই কিছু, পত্রিকাও দিয়েছেন পড়তে। আজকের খবরগুলো হরতালের পক্ষে সারা দেশে সভা সমাবেশ আর মিছিল হওয়ার খবর। ইসলামী শাসনতন্ত্র আন্দোলন বিশাল লাঠি মিছিল করেছে। হাজার হাজার মুলিবাঁশ আন্দোলিত হচ্ছে মাথার ওপর। ডঃ কামাল হোসেন গণফোরামের সভায় বলছেন, দেশের রাজনৈতিক পরিস্থিতি উদ্বেগজনক। স্বাধীনতার ২২ বছর পর গোলাম আযমের নাগরিকত্ব ও স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতিহত করতে আন্দোলনে নামতে হয় এটি অকল্পনীয় ব্যাপার। পঁচাত্তরের পর সরকারগুলো রাজাকারদের দেশে এনেছে, প্রতিষ্ঠিত করেছে ইত্যাদি ইত্যাদি, শেষে বলেছেন, এখন মৌলবাদীদের যে করেই হোক রোধ করতে হবে, তা না হলে সর্বনাশ। সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের মতবিনিময় সমাবেশ হয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি (ছাত্র শিক্ষক কেন্দ্র)র ভেতর। একই মত সবার, বিনিময়ের কিছু নেই। মত হল, জামাত শিবির সহ সকল সাম্প্রদায়িক রাজনীতি নিষিদ্ধ করার বিল পাস করতে হবে সংসদে, যুদ্ধাপরাধী গোলাম আযমের সভা সমাবেশ নিষিদ্ধ করতে হবে, ৩০ জুন সকাল সন্ধ্যা হরতাল পালন, গোলাম আযম গংদের বিশেষ ট্রাইবুন্যালে বিচার, গণআদালতের রায় কার্যকর, সাম্প্রদায়িক শক্তিকে চিরতরে নির্মূল করতে হবে। জোটের এই সভায় কেবল যে শিল্পী সাহিত্যিক ছিলেন তা নয়, রাজনৈতিক নেতারাও ছিলেন, বিশেষ করে বামপন্থীরা। শামসুর রাহমান জোটের এই সভায় বলেছেন, আমরা আজ এক বিরাট সংকটের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছি। সব পেশার মানুষ আজ গভীর উদ্বেগের মধ্যে দিন কাটাচ্ছে। যারা একাত্তর সালে তিরিশ লাখ মানুষকে হত্যা করেছে, যারা বুদ্ধিজীবীদের হত্যা করেছে, তারা আজ মাঠে নেমেছে, আমাদের নীরবতার সুযোগ নিয়ে তারা আজ ফণা তুলেছে। যে কোনও মূল্যে এই অপশক্তিকে প্রতিরোধ করতে না পারলে এই দেশে গভীর অন্ধকার নেমে আসবে।
নগর আওয়ামী লীগের সমাবেশে বলা হয়েছে একাত্তরের গণহত্যার নায়ক গোলাম আযমকে নাগরিক করার জন্য এদেশ স্বাধীন হয়নি। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে জনগণ যখন সোচ্চার, ঠিক তখনই সরকার স্বাধীনতা বিরোধী সাম্প্রদায়িক শক্তিকে লেলিয়ে দিয়ে দেশকে নৈরাজ্যের দিকে ঠেলে দিচ্ছে।ন!না কথা .. নানা কথা। একজন কেবল উল্লেখ করেছেন আমার কথা, তসলিমা নাসরিনের বহু লেখার সঙ্গে গোষ্ঠীর নেতারা একমত নন। প্রমাণ সাপেক্ষে আইনের আশ্রয় নিতে পারেন যে কেউ কিন্তু পঞ্চাশ হাজার টাকা শিরোচ্ছেদ ঘোষণা করে মানুষকে বোকা বানানোর অপপ্রয়াস সম্মিলিত ভাবে রোধ করা হবে। জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভায় স্বাধীনতা বিরোধী, যুদ্ধাপরাধী, সাম্প্রদায়িক, ফ্যাসিস্ট শক্তিকে নগরে বন্দরে গ্রামে গঞ্জে পাড়া মহল্লায় প্রত্যক্ষ প্রতিরোধের জন্য আহবান জানানো হয়েছে। ২৮ জুন বিকেল চারটায় এই কমিটির সমাবেশ হবে। আজ সাড়ে চারটায় শহীদ মিনারে সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের নাগরিক সভা, গণমিছিল। সন্ধে সাড়ে সাতটায় নগর সমন্বয় কমিটির যৌথ কর্মী সমাবেশ, ২৭ জুন বিকেল চারটায় বাম গণতান্ত্রিক ফ্রণ্টের জনসভা, টিএসসিতে চারটায় মুক্তিযোদ্ধা ছাত্র কমান্ডের সমাবেশ, ২৯ জুন সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী ছাত্র সমাজের মশাল মিছিল, ৩০ জুন সকাল এগারোটায় স্বাধীনতা বিরোধী শক্তি প্রতিরোধ কমিটির সমাবেশের প্রতি সর্বাত্মক সমর্থন জানানো হয়। নতুন কর্মসূচিতে ঘোষণা করা হল, ২৯ জুন রাত আটটায় জাতীয় সমন্বয় কমিটির সভা হবে আর ৩০ জুন বিকেল চারটায় বঙ্গবন্ধু এভিনিউএ জনসভা হবে। ….. তাহলে হচ্ছে কিছু, হবে কিছু। .আশা নামের একটি শিশু যেন আমার দিকে গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে আসছে। মনে মনে শিশুটির সঙ্গে আমি খেলা করি। সন্ধের দিকে ঝ ঘরে ঢুকলেন জকে নিয়ে। জ পাশে বসে আমার একটি হাত তাঁর হাতের মুঠোয় নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলে। চোখে মায়া। ঝ মেঝেয় আসন পেতে বসে গেলেন। জ আমাকে জিজ্ঞেস করেন না কেমন আছি আমি, তিনি অনুমান করে নেন কেমন আছি। আমার মলিন মুখটিতে তিনি হাত বুলিয়ে দেন, আমার চুলে, পিঠে হাত তাঁর। আমি