পঁচিশ জুলাই, সোমবার
মৌলবাদীরা যেদিন প্রথম ব্লাসফেমি আইনের দাবি করেছে, আমি শিউরে উঠেছিলাম। কী ভয়ংকর দাবি। দেশের কজন মানুষ জানে এই আইন এলে কি রকম সর্বনাশ হবে দেশের। বেশির ভাগই জানে না। সেদিনই মনে মনে বলেছিলাম, আমার ফাঁসি হয় হোক, তবু ব্লাসফেমি আইনটি যেন পাস না হয় এ দেশে। আমার মৃত্যু হয় হোক, তবু দেশটি বেঁচে থাক, দেশের মানুষগুলো দুর্ভোগ না পোহাক। কাগজে আঁকিবুকি করতে করতে লিখেছিলাম, সংসদ ভবন থেকে সড়সড় করে নেমে এল একটি মস্ত অজগর/নগরের বড় রাস্তায় রাজার মত চলল, ডানে গেল, বামে গেল/অলিগলি ঘুরল আর মানুষ খেল/যে মানুষ সত্য বলে, তাকে/যে মানুষ সভ্যতা চায়, তাকে/ যে মানুষ নোংরা ঘাঁটে না, তাকে।/ অজগরের ক্ষিধে মেটে না তবু, সে এক নগর থেকে/আরেক নগরে গেল, বড় শহর থেকে ছোট শহরে,/ সেখানেও তাজা মাংসের স্বাদ পেল/যে মানুষ ছবি আঁকে, /যে মানুষ কবিতা লেখে,/ যে মানুষ গান গায়।/অজগর বিষম খুশি। সে এঁকে বেঁকে নেচে নেচে/গঞ্জে গ্রামে নদী হাওড় ক্ষেত খামার পেরিয়ে আরও খাদ্য পেল/যে কৃষক পাঁচবেলা লাঙল চালায়,/যে নারী মাঠে কাজ করে/যে রাখাল বাঁশি বাজায়।/খেতে খেতে পেট যখন ভরল অজগরের/তখন আর মানুষ নেই দেশে, কিছু কেবল শ্বাপদ আছে/শ্বাপদ আর অজগরে বেশ ভাব হল, তারা দীর্ঘ দীর্ঘকাল বেঁচে থাকল।
জামাতে ইসলামী ব্লাসফেমি এক্ট বিল পেশ করেছে সংসদে। এখন ভয়, দেশজুড়ে ব্লাসফেমি আইনের দাবি উঠছে, যদি সংসদে এই বিল পাস হয়েই যায়। কলাম লেখা চলছে এই আইন প্রণয়ন করার বিরুদ্ধে। আবদুল মতিন খান আজ চমৎকার একটি কলাম লিখেছেন ব্লাসফেমি আইনের ইতিহাস নিয়ে। —জ্ঞমধ্যযুগের ইওরোপের ব্লাসফেমি আইন যে কি রকম জঘন্য ছিল কি করে মানুষকে পুড়িয়ে মারা হত এবং এই আইনের বিরুদ্ধে গণবিদ্রোহের ফলে গির্জার পুরোহিতদের অপকর্ম শেষ পর্যন্ত কি রকম ভাবে বন্ধ হল তা বর্ণনা করে শেষে বলেছেন