আগস্ট, সোমবার
আজও তৈরি হয়ে থাকি। ঙ জানান যে আমার অনুপস্থিতে আদালত বসে যাবে এবং এটি হঠাৎ করেই বসবে, কাকপক্ষী যেন জানতে না পারে। আমার উকিল আমার পক্ষে যা বলার সব বলতে থাকবেন, কাগজ পত্র যা দেখাবার, দেখাতে থাকবেন, এর মধ্যে সময় সুযোগ পেলে বিচারককে তিনি বলবেন যে আমার নিরাপত্তার অভাব আছে বলে আমি আদালত পর্যন্ত যেতে পারছি না, তখন যদি বিচারক গোঁ ধরেন যে আমাকে যে করেই হোক উপস্থিত হতেই হবে, না হলে জামিন হবে না তো হবেই না, তখন আমার উকিল তাঁর কোনও সহকারীকে ইঙ্গিত করবেন আদালতে আমাকে উপস্থিত করার জন্য, সেই সহকারী তখন আরেকজনকে ইঙ্গিত করবেন, সেই আরেকজন উঠে গিয়ে ফোন করে দেবেন ঙকে, ঙ জানিয়ে দেবেন ককে, ক জানাবেন ছোটদাকে, তাঁর কাছে দিয়ে দেওয়া হবে কোত্থেকে আমাকে তুলে কোথায় নিতে হবের বৃত্তান্ত, ছোটদা সঙ্গে সঙ্গে গাড়িতে স্টার্ট দেবেন। এটি অথবা যদি আমার উকিল জানেনই যে বিচারক আমার উপস্থিতি চাইবেনই, তবে যখন তিনি আদালত কক্ষে আমার জামিনের আবেদন নিয়ে দাঁড়াবেন,ঠিক সেই মুহূর্তটি থেকে হিসেব করে ঠিক পনেরো মিনিট পর আমাকে আচমকা উপস্থিত হতে হবে, পলকের মধ্যে আমার চেহারাটি বিচারককে দেখিয়ে যেন দ্রুত বেরিয়ে যেতে পারি। নিমেষে যেন হাওয়া হয়ে যেতে পারি। এসব ছক তৈরি করার কারণ, খুব কম সময়ের জন্য আমাকে যেন আদালতে কাটাতে হয়। খুব জটিল লাগে ব্যাপারটি। আমার আশংকা হয় কোথাও না আবার ভুল হয়ে যায়।
আজও নাকচ হয়ে যায় আমার যাওয়া। কেন, তা ঙ জানেন না, আমি তো জানিই না। ঠ আজ কোনও পত্রিকা দিয়ে যাননি ঘরে। চাইলে বলেছেন, দরকার নেই ওসব পড়ার, পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়। ঠ আজ সারাদিন সময় পাননি আমার কাছে এসে দুদণ্ড বসার। তাঁর বাড়িতে অনাহুত অতিথিরা এসেছেন, এদের ছলে বলে কৌশলে বিদেয় করতে তিনি হিমশিম খাচ্ছেন। তাঁর কেবলই মনে হচ্ছে, বুঝি কেউ জেনে গেল এ বাড়িতে যে একটি নিষিদ্ধ বস্তু আছে, সে কথা। কেবলই ভয় হচ্ছে বুঝি দেশসুদ্ধ জানাজানি হয়ে গেল যে ঠ একটি মস্ত অপরাধ করেছেন, যে অপরাধ ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।
সারারাত আমি কান পেতে থাকি দরজায় ঠর আঙুলের মৃদু কোনও শব্দ যদি বাজে, শুনতে।