আলতাফ মদ খায় না। মেয়েমানুষ দেখলে ছোঁক ছোঁক করে না। সবই আমি স্বীকার করি। সে কি আমাকে গালমন্দ করে? না তাও করে না। বরং বুকের মধ্যে জড়িয়ে। বলে ‘ও আমার হীরে। ও আমার সোনা বউ।‘ অফিস থেকে ফিরেই ‘হীরা হীরা হীরা। হীরা কাছে বস। হীরা হাসো। হীরা মুখ তোল। হীরা কী আর মুখ তোলে! হীরার তো মুখ তুলতে ইচ্ছে করে না। হীরা তুমি কি খেতে ভালবাস? চল আজ সোনার গায়ে খাই। চল লং ড্রাইভে কোথাও যাই। হীরার কি আর যেতে ইচ্ছে করে। ভাল না লাগায় পেয়েছে তাকে। সে কেন যাবে?
মা আসেন। আশংকা তিরতির করে কাঁপে তাঁর চোখের তারায়। আমাকে আড়ালে ডেকে মা জিজ্ঞেস করেন–আলতাফ কি তোর সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করে? আমি জানালায় উদাস তাকিয়ে উত্তর দিই–না।
–তোর শ্বশুর শাশুড়ি, ওঁরা কী তোকে ভালবাসেন না? মা ফিসফিস করে জিজ্ঞেস করেন।
–বাসেন। আমি দু’আঙুলে জানালার শাদা গ্রিলগুলোর ময়লা তুলতে তুলতে বলি।
–আর আলতাফ?
–আলতাফও। আমার স্বরে যথেষ্ট সংযম।
–সময় মত ফেরে অফিস থেকে?
–ফেরে।
–তোকে কি রান্নাবান্ন করতে বলে?
–না। ও তো কাজের লোকেহ করে।
— বেড়াতে টেড়াতে নয়?
–হ্যাঁ নেয়। সেদিন চিটাগাং গেলাম।
–তবে? তুই থাকতে চাস না কেন? হয়েছে কী তোর?
এর কোনও উত্তর আমি দিতে পারি না। আমি বোঝাতে পারি না কেন আমার ভাল লাগে না। কেন আলতাফের মত চমৎকার এক যুবককে আমি ভালবাসতে পারছি না। কেন এক হৃদয়বান চরিত্রবান স্বামীর ঘর ছেড়ে আমি বারবারই চলে যেতে চাই। বাবাও একদিন গুলশানে আমার স্বামীর বাড়ি এলেন। থমথমে মুখ। তাঁকে বললাম–বস চা টা দিই। না তিনি বসবেন না। আমার সঙ্গে জরুরি কথা বলবেন।
–কী কথা?
–তোর প্রব্লেম কী বল?
–প্রব্লেম মানে?-
-তুই বাড়ি যাবার জন্য কান্নকাটি করছিস?
–হ্যাঁ করছি।
–কেন? তোর কি খাওয়া পরার অভাব?
–না।
–যা দরকার আলতাফ কি সব দেয় না?
–মানে?
–মানে এই কসমেটিকস্, শাড়ি কাপড়, যখন যা লাগে টাকা পয়সা?
–হ্যাঁ দেয়।
–তবে?
এর কোনও উত্তর আমি দিতে পারি না। বাবা আমাকে যাবার সময় বলেন ‘আসলে