লজ্জা (০২) সুরঞ্জনের বন্ধুদের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যাই বেশি

সুরঞ্জনের বন্ধুদের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। অবশ্য ওদের মুসলমান বলাওঁ ঠিক নয়। ওরা ধর্মন্টর্ম তেমন মান??

সুরঞ্জনের বন্ধুদের মধ্যে মুসলমানের সংখ্যাই বেশি। অবশ্য ওদের মুসলমান বলাওঁ ঠিক নয়। ওরা ধর্মন্টর্ম তেমন মানে না। আর মানলেও সুরঞ্জনকে কাছের মানুষ ভাবতে ওরা কোনও দ্বিধা করেনি। কামাল তো গত বছর বাড়িসুদ্ধ নিয়ে গেল নিজের বাড়িতে। পুলক, কাজল, অসীম, জয়দেবও সুরঞ্জনের বন্ধু কিন্তু ঘনিষ্ঠতা বেশি কামাল, হায়দার, বেলাল বা রবিউলের সঙ্গে। সুরঞ্জনের যে কোনও বিপদে কাজল অসীমের চেয়ে কাছে এসেছে হায়দার কামাল বেলালই। সুধাময়কে একবার সোহরাওয়ার্দি হাসপাতালে ভর্তি করবার প্রয়োজন পড়েছিল, রাত দেড়টা বাজে তখন। হরিপদ ডাক্তার বললেন, ‘মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশান, এক্ষুনি হাসপাতালে নাও।‘ সুরঞ্জন কাজলকে খবরটি জানালে কাজল হাই তুলে বলল, ‘এত রাতে কি করে শিফট করবে, সকাল হোক, একটা ব্যবস্থা করা যাবে।‘ অথচ খবরটি জানবার পরই গাড়ি নিয়ে ছুটে এল বেলাল। নিজে দৌড়াদৌড়ি করে ভর্তি করাল, বারবার সুধাময়কে বলল, ‘কাকাবাবু, আপনি একটুও দুশ্চিন্তা করবেন না, আমাকে আপনি নিজের ছেলেই মনে করবেন।’ সুরঞ্জনের মন ভরে গেছে দেখে। যতদিন হাসপাতালে ছিলেন সুধাময়, বেলাল খোঁজ নিয়েছে, চেনা ডাত্মারদের বলে এসেছে কেয়ার নিতে, সময় পেলেই দেখতে গিয়েছে, হাসপাতালে যাওয়া আশর জন্য গাড়ি দিয়েছে। কে করে এত? পয়সা তো কাজলেরও আছে, সে কি এমন হৃদঙ্গবন হতে পারে সুরঞ্জনের জন্য? চিকিৎসার খরচ প্রায় পুরোটাই দিয়েছে। রবিউল। একদিন টিকাটুলির বাড়িতে হঠাৎ উপস্থিত রবিউল, বলল, ‘তোর বাবা নাকি হাসপাতালে?’ সুরঞ্জন হ্যাঁ না কিছু বলবার আগেই টেবিলের ওপর একটি খাম রেখে রবিটল বলল, ‘এত পর ভাবিস না বন্ধুদের।’ বলে যেমন দমকা এসেছিল, দমকা চলেণ্ড গেল। সুরঞ্জন খাম খুলে দেখে পাঁচ হাজার টাকা। কেবল সাহায্য করে বলে নয়, ওদের সঙ্গে মনে ও মননেও বড় মেলে তার। রবিউল কামাল হায়দারকে যত আপন করে পেয়েছে সুরঞ্জন, অসীম কাজল জয়দেবকে ততটা পায়নি। শুধু তা-ই নয় পারভিনকে সে যতন্ত্র ভালবেসেছিল, সুরঞ্জনের বিশ্বাস হয় না কোনও অর্চনা, দীপ্তি, গীতা বা সুনন্দাকে সে ততটা ভালবাসতে পারবে।

 

সম্প্রদায়ের ভেদ সুরঞ্জন নিজে কখনও করতে শেখেনি। ছোটবেলায় সে জানোতই না যে সে হিন্দু। ময়মনসিংহ জেলা স্কুলে পড়ে, খ্রি-ফোরে হবে হয়ত, খালেদ নামের এক ছাত্রের সঙ্গে ক্লাসের পড়া নিয়ে তার খুব তর্ক হচ্ছিল। তর্ক একসময় তুঙ্গে উঠলে খালেদ তাকে গাল দেয়। কুকুরের বাচ্চা, শুয়োরের বাচ্চা, হারামজাদা এমন গাল। উল্টে সুরঞ্জনও খালেদকে গাল ফিরিয়ে দিচ্ছিল। খালেদ বলে ‘কুকুরের বাচ্চা, সুরঞ্জনও বলে ‘তুই কুকুরের বাচ্চা’। ‘ খালেদ বলে ‘হিন্দু।’ সুরঞ্জন পাল্ট বলে ‘তুই হিন্দু ৷ ‘ সে ভেবেছিল কুকুরের বাচ্চা, শুয়োরের


Rx Munna

447 Blog posts

Comments