সকালে চায়ের সঙ্গে পত্রিকা হাতে নেয় সুরঞ্জন। আজ মন ভাল তার। রাতেও ভাল ঘুম হয়েছে। পত্রিকায় চোখ বুলিয়ে মায়াকে ডাকে সে।
—ফিরে তোর হয়েছে কি! এত মন খারাপ করে বসে থাকিস কেন?
—আমার আবার কী হবে। তুমিই তো ঝিম ধরেছ। একবারও বাবার কাছে বস না।
—আমার ওসব দেখতে ভাল লাগে না। সুস্থ সকল মানুষটি মড়ার মত বিছানায় পড়ে আছে দেখলে আমার রাগ ধরে। আর তোরা পাশে বসে মিউ মিউ করে। সারাক্ষণ কাঁদিস, এসব আরও ভাল লাগে না। আচ্ছা, মা টাকা রাখেনি কেন? খুব টাকা বুঝি তাঁর?
–মা গয়না বিক্রি করেছে।
—এ কাজটা অবশ্য ভাল করেছে। গয়না-টয়না। আমি একদম পছন্দ করি না।
—পছন্দ কর না। পারভিন আপকে তো ঠিকই মুক্তোবসানো আংটি দিয়েছিলে?
—তখন কাঁচা বয়স ছিল, মনে রঙ ছিল, এত বুদ্ধি হয়নি তো, তাই।
—এখন বুঝি খুব পেকেছ? মায়া হেসে বলে।
মায়ার মুখে কতদিন পর হাসি দেখল সুরঞ্জন। হাসিটিকে আরও কিছুক্ষণ দেখবে বলে সে পত্রিকার প্রথম পাতার খবরটি দেখায়। বলে-দেখেছিস, নগরীতে শান্তি মিছিল হয়েছে, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে আমরা আছি বাংলাদেশে। সাম্প্রদায়িকতা রুখে দাঁড়াও—সর্বদলীয় শান্তি মিছিলের দৃপ্ত ঘোষণা। যে কোনও মূল্যে নৈরাজ্য সৃষ্টিকারী ও লুটেরাদের প্রতিরোধ করার আহ্বান। ভারতে সহিংসতা স্তিমিত। উত্তরপ্রদেশ সরকারের মসজিদের জমি দখলকে হাইকোর্টে অবৈধ ঘোষণা। নরসিমা রাও বলেছেন, বাবরি মসজিদ ভাঙার জন্য কেন্দ্র নয়, উত্তরপ্রদেশ সরকারই দায়ী। পশ্চিমবঙ্গ, গুজরাট, মহারাষ্ট্রে এখনও সেনাবাহিনী মোতায়েন রয়েছে। মৌলবাদীদের বিরুদ্ধে বামপন্থীদের জেহাদ ঘোষণা। আজ পল্টন মোড়ে সি পি বি-র সমাবেশ আছে। আওয়ামি লিগ বলেছে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় শান্তি ব্রিগেড গঠন করতে হবে। নগর সমন্বয় কমিটি বলেছে দাঙ্গা বাঁধানোর দায়ে নিজামি কাদের মোল্লাদের গ্রেফতার করুন। নির্মূল