উৎপাদন ও মজুরি প্রবণতা একটি দেশের অর্থনীতির প্রধান নির্দেশক। উৎপাদনশীলতা বাড়লে কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধি পায় এবং পণ্য বা সেবার পরিমাণ ও গুণগত মান বৃদ্ধি পায়। এর সঙ্গে মজুরি প্রবণতার একটি সরাসরি সম্পর্ক রয়েছে, কারণ উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির মাধ্যমে কর্মীদের জন্য উচ্চ মজুরির সুযোগ তৈরি হয়।
উন্নত দেশগুলোতে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি সাধারণত মজুরি বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। এর পেছনে রয়েছে প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, দক্ষতার উন্নয়ন এবং সংগঠিত শ্রমবাজার। কিন্তু উন্নয়নশীল দেশগুলোতে এই সম্পর্ক সবসময় সরলরৈখিক হয় না। সেখানে উৎপাদনশীলতা বাড়লেও মজুরি বৃদ্ধির হার তুলনামূলক কম হতে পারে। এর কারণগুলো হলো নিম্ন মজুরি ভিত্তিক শ্রমনীতি, শ্রমিকদের সংগঠিত হতে না পারা এবং বাজারের অসমতা।
বর্তমান সময়ে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির ফলে অটোমেশন এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ব্যবহার বেড়েছে, যা উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে। তবে এটি কিছু ক্ষেত্রে শ্রমের চাহিদা হ্রাস করে, ফলে নিম্ন মজুরির চাকরির বাজারে চাপ সৃষ্টি হয়।
মজুরি প্রবণতা দেশের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বৈষম্যের উপর প্রভাব ফেলে। উচ্চ মজুরি কর্মীদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি করে এবং অভ্যন্তরীণ চাহিদা তৈরি করে, যা অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিতে সহায়ক। তবে, অতি নিম্ন মজুরি সামাজিক বৈষম্য বাড়ায় এবং কর্মীদের জীবনযাত্রার মান হ্রাস করে।
উৎপাদন ও মজুরি প্রবণতায় ভারসাম্য রক্ষায় সরকার, নিয়োগকর্তা এবং শ্রমিক সংগঠনগুলোর সমন্বিত উদ্যোগ প্রয়োজন। এটি একটি সুষম অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গঠনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।