মেয়েদের ত্রুটি-বিচ্যুতি

মহাভারতে একটি শ্লোক আছে-ন স্ত্রী স্বাতন্ত্রমর্হতি; অর্থাৎ স্বাধীনতায় নারীর কোনও অধিকার

মহাভারতে একটি শ্লোক আছে-ন স্ত্রী স্বাতন্ত্রমর্হতি; অর্থাৎ স্বাধীনতায় নারীর কোনও অধিকার নেই।

 

২. ‘রূপচর্চা’ বলে একটি জিনিস আছে, তা মেয়েদের গুলে খাওয়াবে বলে কিছু রসালো পত্রিকা পণ করেছে। কে কত দামি এবং বিদেশি প্রসাধন দ্রব্য ব্যবহার করছে-মেয়েদের মধ্যে তার জোর প্রতিযোগিতা চলে। গালের রঙ, চোখের কালি, চুলের ঢং-চর্চায় মেয়েদের মস্তিষ্ক ব্যস্ত রাখবার অভিনব কৌশল দিন দিন আবিষ্কার হচ্ছে। যেন কিছু রঙ না হলে, কিছু প্রলেপ যুক্ত না হলে মেয়েরা যথেষ্ট নয়, মেয়েরা সম্পূর্ণ নয়। মেয়েদের বিষয়-আশয় নিয়ে যে পত্রিকাগুলো বেরুচ্ছে, তার অধিকাংশ সম্পাদকই পুরুষ। তারা, মেয়েরা কি করে গালে পউডার মাখলে, কত রকম ঢেউ খেলানো খোপা করলে, ব্লাউজের কাট্‌ কেমন হলে, কখন কি রঙের শাড়ি পরলে পুরুষের চোখে আকর্ষণীয়া হবে-ইত্যাদি ব্যপারে নিরলস জ্ঞান দান করে যাচ্ছেন। এসব পত্রিকা ‘স্বামীর প্রতি স্ত্রীর কর্তব্য’ নামক কিছু অশ্লীল বইয়ের শ্লীল সংস্করণ ছাড়া কিছু নয়।

 

৩. নারীর প্রতিশব্দগুলোর মধ্যে ‘ভার্যা’ একটি। ভার্যা শব্দটির অর্থ ভরনীয়া অর্থাৎ যাকে ভরণ করতে হয়। ভৃত্য এবং ভার্যা শব্দ দুটোর বুৎপত্তিগত অর্থ একই। বৃত্তিমূলক যে কোনও শিক্ষাই নারীর জন্য নিষিদ্ধ ছিল, তাই ভাত কাপড়ের জন্য স্বামীর উপর স্ত্রীকে নির্ভর করতে হত। মধ্যযুগে, বিলেতে, স্বামীকে লর্ড বলবার রীতি ছিল। স্ত্রী ও ভৃত্য গৃহকর্তাকে লর্ড বলত। লর্ড, ভাতের জন্য যার কাছে মানুষ আশ্রিত।

 

৪. অরকিড এমন এক উদ্ভিদ, যে অন্য একটি উদ্ভিদ আশ্রয় করে বেঁচে থাকে। আমি সেই মেয়েদের অরকিড বলতে ভালবাসি-যে মেয়েরা বিয়ের আগে বাবার এবং পরে স্বামীর নামের লেজ ধরে বেঁচে থাকে। সুবর্ণা হক হঠাৎ একদিন হয়ে যায় সুবর্ণা চৌধুরী। সে যে ঘর পাল্টাল, সে যে এক আশ্রয় থেকে আরেক আশ্রয়ে গেল, কারুকে অবলম্বন করে সে যে বেঁচে রইল, নিজের নাম দিয়ে সে তা প্রমান করে। ধরে নিচ্ছি, সুবর্ণা নামের মেয়েটি সকল অর্থেই স্বনির্ভর। তবু এই যে তার নামের মধ্যে পিতা এবং স্বামীকে ধারন করার প্রবণতা, এটি বহু বছর ধরে নারী নির্যাতনের কুফল। বোকা মেয়েগুলো এই ব্যবস্থাটি মেনে নিয়ে প্রমান করেছে, শিক্ষা কোনও সংস্কার অতিক্রম করতে পারে না।

 

৫. ঢাকা শহরে ট্রাক ভর্তি করে গরু নিয়ে যাওয়া একটি পরিচিত দৃশ্য। এই দৃশ্যটি দেখে সেদিন এক বন্ধুকে বললাম-এরকম আমরাও, স্কুলের মেয়েরা একবার ট্রাকে করে বনভোজনে গিয়েছিলাম।

বন্ধু অসন্তুষ্ট হয়, ছিঃ গরুর সঙ্গে মেয়েদের তুলনা? আমি বলি-নয় কেন? প্রবাদ তো আছেই ‘ভাগ্যবানের বউ মরে, অভাগার গরু।’ এর অর্থ, সম্পত্তি হিসেবে স্ত্রীর স্থান গরুরও নিচে। কারণ গরু কিনতে টাকা লাগে আর নতুন বউ আনলে টাকা পাওয়া যায়।

 

৬. চিকিৎসাশাস্ত্রে ‘হিস্ট্রি অভ এক্সপোজার’ বলে একটি কথা আছে। এই বিষয়টি জানবার জন্য রোগীকে কিছু প্রশ্ন করতে হয়। বাইরের মেয়েদের সঙ্গে মেলামেশা করেন কি না জিজ্ঞেস করলে রোগীটি প্রথমে আকাশ থেকে পড়ে। ছি ছি কি লজ্জার কথা,


Rx Munna

447 Blog posts

Comments